বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি মোঃ ওবায়দুল হাসান একদিনের সফরে ২ মে বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জে আসছেন। হবিগঞ্জ জেলা এডভোকেট সমিতির শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।
এডভোকেট সমিতির ভবনে আয়োজিত শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় অন্যান্য বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের গুনিজনরা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে । প্রধান বিচারপতির অনুষ্ঠানকে স্মরনীয় করে রাখতে হবিগঞ্জ জেলা এডভোকেট সমিতির সভাপতি আবুল মনসুর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোছাব্বির বকুল বিভিন্ন স্তরে পরামর্শ সভা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে প্রধান অতিথির উপস্থিত হওয়ার কর্মসূচি রয়েছে।
মোঃ ওবায়দুল হাসান বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নেন। প্রধান বিচারপতি মোঃ ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৮৬ সনে তিনি আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় যোগদান করেন। পর্যায়ক্রমে তিনি ১৯৮৮ ইং সনে হাইকোর্টের এবং ২০০৫ সনে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন সিনিয়র আইনজীবী হিসাবে আইন পেশায় নিযুক্ত হন। তিনি বেশ কিছুদিন সহকারী এটর্ণী জেনারেল, ডেপুটি এটর্ণী জেনারেল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ ইং সনে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০১১ ইং সনে হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন।
২০২০ সনে তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। অর্পিত সম্পত্তি আইনসহ বাংলাদেশে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় আসে জনাব মোঃ ওবায়দুল হাসানের হাত দিয়ে। আইনজীবী, বিচারপতি এবং প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্বপালনকালে মোঃ ওবায়দুল হাসান ১৯৯১ ইং সনে হংকং এ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে, ২০১৫ সনে সিঙ্গাপুরে জুডিসিয়াল গভর্ণেন্স প্রোগ্রামে, ২০১৫ সনে আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ও রাষ্ট্রীয় অপরাধ বিষয়ক সেমিনারে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এর পর্যবেক্ষক হিসাবে নেদারল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন।
তিনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসাবে অন্তত ১১টি মামলার রায় প্রদান করেন তিনি। মোঃ ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ ইং সনের ১ জানুয়ারী নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ছয়াশি (হাটনাইয়া) গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। প্রধান বিচারপতির পিতা আখলাকুল হোসাইন মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন, আখলাকুল হোসাইন ছিলেন গণপরিষদ সদস্য।
গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধান বিচারপতির পিতা আখলাকুল হোসাইনের স্বাক্ষর রয়েছে। প্রধান বিচারপতির ছোট ভাই সাজ্জাদুল হাসান বিমান পরিবহন পরিচালনা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। বর্তমানে সাজ্জাদুল হাসান নেত্রকোনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য।
প্রধান বিচারপিতর স্ত্রী নাফিসা বানু একজন চাকুরীজীবী। তাদের পুত্র ব্যারিষ্টার সাফকাত হাসান আন্তর্জাতিক আইনে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেছেন। প্রধান বিচারপতি মোঃ ওবায়দুল হাসান “ অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড ”, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ, একজন যুদ্ধ শিশুর গল্প” “বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ” সহ বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে লেখা একাধিক বইয়ের লেখক।
এম এ মজিদ, আইনজীবী ও সংবাদকর্মী,
হবিগঞ্জ ১ মে ২০২৪
০১৭১১-৭৮২২৩২
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply