1. sm.khakon@gmail.com : bkantho :
উজবেকিস্তান !! একটি বিশাল অঞ্চল ইতিহাস ও সভ্যতার গ্রন্থিতে বাঁধা - বাংলা কণ্ঠ নিউজ
সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৫ অপরাহ্ন

উজবেকিস্তান !! একটি বিশাল অঞ্চল ইতিহাস ও সভ্যতার গ্রন্থিতে বাঁধা

এলিজা বিনতে এলাহি
  • শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪
  • ১৮৯ বার পড়া হয়েছে
উজবেকিস্তান !! একটি বিশাল অঞ্চল ইতিহাস ও সভ্যতার গ্রন্থিতে বাঁধা
57th Destination…Uzbekistan…10days…6 cities…!! উজবেকিস্তান !! একটি বিশাল অঞ্চল ইতিহাস ও সভ্যতার গ্রন্থিতে বাঁধা । । খিভা , সমরখন্দ , বোখারা , তাসখন্দ , ফারগানা , আন্দিজান , মারগিলন , কোকান্দ , আমু দরিয়া ,সির দরিয়া । ইরানী , তুর্কী , তাতার , তাজিক , উজবেক , মঙ্গোল – কত জাতির উথান পতনে মুখরিত হয়েছে এই ভুখন্ড ।
ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বরা – সম্রাট বাবর ,চেঙ্গীস খান , তৈমুর লং , আলীশের নভয় , ওমর খৈয়াম , ইবনে সীনা , নাসিরুদ্দিন হোজ্জা। বীরত্বে , মহত্ত্বে , হিংস্রতায় , জ্ঞানে , বিজ্ঞানে , শিল্পকলায় , সৃষ্টিতে , বৈচিত্রে এমন প্রাচুর্যপুর্ন ভুখন্ড আর কয়টাই বা রয়েছে পৃথিবীর মানচিত্রে । এই সভ্যতার পিরামিডে রয়েছে ,অনেক ভাষা , অনেক জাতি ।
অল্প ১০ দিনের ভ্রমণে এর রূপ, রঙ ,রস, গন্ধ কতটুকুই বা বোঝা যায় ! আলগোছে ছুঁয়ে যাওয়া শহরগুলোর পুরোনো ইতিহাস আর বর্তমানের অভিজ্ঞতা মিলিয়ে কিছু অবয়ব হয়তো তৈরী হয় মনের মাঝে । এই স্মৃতিটুকুই কেবল একজন ভ্রমণকারীর গল্পের খোড়াক ।
ভ্রমণ শুরু করেছিলাম রাজধানী শহর তাসখন্দ থেকে । এই শহরে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগছে ধীরে ধীরে । তারপরও সাবেক সোভিয়েত স্থাপনা , প্রাচীন কিছু স্থাপত্য , আধুনিক উজবেক স্তম্ভ , সুশোভিত মেট্রো স্টেশন , চরসু বাজার , চারবাক হ্রদ দেখতে মন্দ কাটেনি সময় । রেশম পথের আস্বাদ পেয়েছি যখন তাসখন্দ থেকে বুলেট ট্রেনে চেপে তৈমুরের রাজধানী সমরকন্দে পৌঁছেছি । সমরখন্দের পথে পথে হাঁটবার সময় প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম আমি একবিংশ শতাব্দীতে রয়েছি । সমরখন্দের খুশবু শেষ হতে না হতেই আবার বুলেট ট্রেনে চেপে বুখারা শহরে ।
কোলাহলমুক্ত একটি শহর কি করে এত প্রানবন্ত হয় ! নির্জনতার আলাদা ভাষা রয়েছে , এই শহরে গিয়ে বুঝেছি । রেশম পথের আস্বাদ পেয়েছি যখন বুখারা থেকে গন্তব্য ছিল সড়ক পথে প্রায় ৪৮০ কিলমিটার পাড়ি দেয়া । স্তেপ অঞ্চল ভেদ করে যখন আমাদের মিনি ভ্যান ছুটে যাচ্ছিল , মনে হচ্ছিল এটি কোন চিত্রনাট্যের অংশ । আহা ! এই স্তেপ অঞ্চলের কথা কত পড়েছি রাশিয়ান সাহিত্যের বাংলা অনুবাদে । বুখারার ইচানকালার প্রতিটি ইঞ্ছি আর এই শহরের প্রতিটি ইটের একটি ইতিহাস রয়েছে । প্রাচীন ইতিহাসের স্বাদ অনুধাবন করতে করতেই প্রস্তুত হলাম আবার তাসখন্দের উদ্দেশ্যে । এবার যাত্রা হাও্য়াই জাহাজ । কারন রাজধানী থেকে ১০০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছি ।
তাসখন্দ থেকে গন্তব্য আন্দিজান , আবারও ট্রেনে । ৫০০ কিলোমিটার এই ট্রেন যাত্রা আমার বিশেষ ভ্রমণস্মৃতির মাঝে অন্যতম । আড়াই হাজার ফুট উঁচুতে নামানগান ভ্যালির ভেতর দিয়ে ট্রেন যাত্রা কি ভোলা যায় । আমি এখনও চোখ বন্ধ করলে দৃশ্য গুলো দেখতে পাই । আন্দিজানে মোঘল সম্রাটের জন্মস্থানে তাঁর সাথে সাক্ষাত একটি বিশেষ মুহুর্ত আমার জন্য । ফেরার পথ কিন্তু সড়ক !! মারগিলন ও কোকান্দ শহরের ইতিহাস আর প্রান্ত ছুঁয়ে রাজধানী তাসখন্দে এসে তুষারপাতে ভিন্ন উজবেক দর্শন হলো । পুরো ভ্রমণে বৃষ্টি , তুষারপাত , দমকা হাওয়া , ঝলমলে রোদ ভ্রমণে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে অবশ্যই । তাসখন্দে এসে কি ভ্রমণ হলো ! না তো ! প্রায় ২০০ কিলমিটার দুরের নীলাভ সবুজ জলাধার চারবাক দেখবো না !! ক্যাবেল কারে চেপে পুরো পর্বতের তুষার গুনবো ।

এই তো হলো ১০ দিনের ফিরিস্তি !

আমি সবার অনেক খুদে বার্তা , পোস্টে মন্তব্য পেয়েছি , তৎক্ষণাৎ উত্তর দেয়া সম্ভব হয়নি সবাইকে কাউকে কাউকে হয়তো দিয়েছি ।আগ্রহীদের উদ্দেশ্যে বলছি আমার ১০দিন ভ্রমণের সমস্ত আয়োজন করেছে Safeway Holidays এবং এর পরিচালক সৈয়দ জাফর ভাই । Zafar Syed
এই ভ্রমণের উড়োজাহাজের টিকেট আমি ৪মাস আগেই করেছি । অতএব বোঝা যাচ্ছে খরচা অনেক কমে এসেছে এখানে । Safeway Holidays এর প্যাকেজটি ছিল ৬ দিনের , সেটিকে আমি নিজের মত ১০দিনের করে নিয়েছি । মানে যে যে শহরে আমি ভ্রমন করতে চাই । আসলে ভ্রমণের বাজেই নির্ভর করে আপনি কতদিন আগে ভ্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন , কতদিন আগে প্লেনের টিকেট করছেন , কি ধরনের হোটেলের আপনি আবাসন ঠিক করছেন , কোন ধরনের রেস্টুরেন্টে খাবার খাচ্ছেন , কোন কোন শহরে কতদিন থাকছেন , কি কি স্থানে যাচ্ছেন , কি কি স্থাপনা দেখছেন , এক শহর থেকে অন্য শহরে যাবার সময় সড়ক পথ , আকাশ পথ না রেল পথ ব্যবহার করছেন – এত গুলো সিদ্ধান্তের উপর ।
এই ভ্রমণে অনেক স্থান আমার ভ্রমন লিস্টে ছিল না । সেগুলো সময় বাঁচিয়ে গাইডকে রিকুয়েস্ট করে পরিভ্রমন করেছি । যেমন – মারগিলন শহরে ইকাত ফ্যাকটরী ও কোকান্দ শহরে সিরামিক স্টুডিও । ভ্রমণে সময়ের সাথে চলা বিশাল একটি কাজ । তারপর তাসখন্দ শহর থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে চারবাক লেকও ভ্রমন লিস্টে ছিল না । সেজন্য অল্প কিছু খরচা হয়েছে । কারন এটি দিনভর একটি ট্রিপ ।
আর অনেকে ভিসার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন । উজবেক ই-ভিসা অনলাইনে এপ্লাই করলে পাওয়া যায় । আমারটি কোম্পানী করে দিয়েছে । আপনি চাইলে নিজেও অনলাইনে পেতে পারেন ।
ও হ্যাঁ , উজবেক রুটির কথা বলা হয় । রুটি যে ভূখণ্ডে ভালোবাসার অপর নাম । নানা স্বাদের , নানা আকারের , নানা রঙ ও আকারের রুটি এই জাতি তিন বেলার আহাড়েই গ্রহন করে । উৎসবের খাবার পিলাফ তৈরীর বিশাল আয়োজন রয়েছে । হয়তো ধীরে ধীরে সব লিখবো ।
উজবেক ভ্রমণে যারা পাশে ছিলেন তাদের প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা । যারা পোস্ট পড়েছেন , মন্তব্য করেছেন , প্রশ্ন রেখেছেন তারা সবাই আমার ভ্রমণে দ্বিগুন উদ্দীপনা জুগিয়েছেন । অল্প বিরতির পর আবারও দেখা হবে , কথা হবে অন্য জনপদে ও ভিন্ন কোন ভূখণ্ডে !!
লেখক: বিশ্ব পর্যটক
এলিজা বিনতে এলাহি

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD