শরীরে সাধারণ কোনো উপসর্গ বড় রোগের কারণ কি না, তা বুঝতে গেলে বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে হয়। রক্ত, মল, মূত্র পরীক্ষা এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের এক্সরে- রোগ নির্ণয় করতে সাহায্য করে। রোগ দেরিতে ধরা পড়লে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। চিকিৎসা পদ্ধতিও ক্রমশ জটিল হতে থাকে। রোগ নির্ণয় থেকে সুস্থ হওয়া- সবটাই যাতে সহজ, স্বাভাবিক ভাবে হয় তার জন্য একটা বয়সের পর নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকতে বলেন চিকিৎসকেরা। রোগের কোনো লক্ষণ না থাকলেও তাই প্রতি বছর কিছু রক্ত পরীক্ষা করিয়ে রাখা ভালো।
রক্তে লোহিত কণিকা, শ্বেত কণিকা এবং প্লেটলেট্স-এর পরিমাণ নির্ধারণ করতে কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট বা ‘সিবিসি’ পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কোনো ব্যক্তি অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হলে বা রক্তে কোনো রকম সংক্রমণ থাকলে ‘সিবিসি’ পরীক্ষার মাধ্যমে তা সহজেই জানা যায়। তা ছাড়া রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা কেমন, সে বিষয়ে জানতে গেলেও এই পরীক্ষা করাতে হয়।
অতিরিক্ত খাওয়াদাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, বাড়তে থাকা মানসিক চাপ- রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বাড়িয়ে তোলে। যা হার্টের জন্য মোটেও ভালো নয়। রক্তে খারাপ এবং ভালো- দু’রকম কোলেস্টেরলই থাকে। তাই প্রতি বছর রক্তে লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষা করিয়ে রাখা ভালো।
উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবিটিস- রোগের ক্ষেত্রে এই দু’টি উপসর্গ অনুঘটকের মতো কাজ করে। রক্তে শর্করা বাড়তে থাকলে তা চট করে ধরা পড়ে না। চুপিসারে তা বাড়তে থাকে। তাই বয়স কম থাকলেও প্রতি বছর গ্লুকোজ ফাস্টিং এবং এইচবিএ১সি রক্ত পরীক্ষা করিয়ে রাখতেই হবে।
শারীরবৃত্তীয় নানা কাজে থাইরয়েড হরমোনের ভূমিকা রয়েছে। বিপাকহার ভালো রাখতেও সাহায্য করে এই হরমোন। তবে তারও একটা পরিমাণ রয়েছে। অতিরিক্ত থাইরয়েড বা একেবারে কম- দুটিই কিন্তু এ ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। হঠাৎ ওজনে পরিবর্তন, মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ কিন্তু থাইরয়েড হরমোনের গন্ডগোলে হতে পারে।
শারীরবৃত্তীয় কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, বাইকার্বোনেট, ক্রিয়েটিনিন, নাইট্রোজেন, বিলিরুবিন, অ্যালবুমিন, প্রোটিনের মতো উপাদানগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সমস্ত উপাদানের সামান্য হেরফেরে তিল থেকে তাল ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাই বছরে অন্তত একবার ‘সিএমপি’ পরীক্ষা করিয়ে রাখা ভালো।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply