বিনয়ী, সুদর্শন, তেজদীপ্ত ও তারুণ্যের প্রতীক শেখ সারহান নাসের তন্ময় বাগেরহাট-২ আসনে চমক নিয়ে আসছেন। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতিতে আসা এ তরুণ বাগেরহাট-২ আসন থেকে আসন্ন নির্বাচনে নৌকার মাঝি হয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের জন্য তন্ময়কে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে রোববার (২৫ নভেম্বর) নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজনীতিতে শেখ পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের সদস্য হিসেবে এরইমধ্যে তন্ময় সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন।
তবে রাজনীতিতে আসা বজ্রকণ্ঠের অধিকারী তন্ময় ‘সিনেমার নায়কের’ মতোই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তন্ময়ের সুদর্শন চেহারার কারণে অনেকেই তাকে সিনেমার নায়ক হিসেবে দেখারও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি সুদর্শন, হাস্যোজ্জ্বল, সুবক্তা হিসেবে অল্পদিনেই সবার দৃষ্টি কাড়তে সমর্থ হওয়া শেখ সারহান নাসের তন্ময়কে নিয়ে রাজনীতিতে শেখ পরিবারের ‘নতুন’ সদস্য তন্ময় এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাগেরহাটের রেল রোড এলাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় ১০ জানুয়ারি (বুধবার) বিশেষ অতিথির বক্তৃতার ছবি ও ভিডিও ছিলো সেই প্রতিবেদনে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের ছেলে শেখ হেলাল উদ্দীন এমপির একমাত্র ছেলে তন্ময়। সম্প্রতি কয়েকটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিতি ও অত্যন্ত আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গিতে দেওয়া বক্তৃতা সবার নজর কেড়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের ছেলে সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীনের একমাত্র ছেলে তিনি। তন্ময়ের বাবা শেখ হেলাল উদ্দীন এবারও বাগেরহাট-১ থেকে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। আর মেঝ চাচা শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল খুলনা-২ আসনের মনোনয়ন পেয়েছেন।
তন্ময় বাগেরহাট, খুলনা ও গোপালগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক অনুষ্ঠানে বছরজুড়েই উপস্থিত হচ্ছিলেন। অতিথি হিসেবে রাখছিলেন বক্তব্যও। অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে শ্রোতারা মুগ্ধ হয়েছেন।
যে কারণে তন্ময়কে বাগেরহাট-২ আসনের জন্য প্রার্থী হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাদের সে আশা পূরণ করেছেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মীর শওকাত আলী বাদশা।
পরিবারের ঘনিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তন্ময় লন্ডন থেকে উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে ২০১৫ সালে বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম শেখ ইফরাহ তন্ময়। পেশায় ব্যবসায়ী তন্ময়ের স্ত্রী করছেন শিক্ষকতা।
২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী যখন বাগেরহাট-১ আসনে নির্বাচন করেন তখন থেকেই তন্ময় রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন। ওই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকে বিদেশে পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে দেশে এলেই দলীয় অনেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।
বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র শেখ তন্ময়। তিনি বাগেরহাট-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় আমরা ভীষণ খুশি। আর এজন্য দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, তরুণ এ নেতা মনোনয়ন পাওয়া বিশেষ করে যুবক নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করেছে।
ছাত্রলীগের সভাপতি মনে করেন, তন্ময়কে মনোনয়ন দেওয়ায় এ আসনটিতে নৌকার বিজয় শতভাগ নিশ্চিত হওয়া গেলো।
রাজনীতি সচেতনরা মনে করছেন, রাজনীতির ময়দানে শিক্ষিত তরুণদের অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে রাজনীতির গুণগত মান পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে। তন্ময়ের কাছে সবার প্রত্যাশাও একটু বেশি, যেহেতু বঙ্গবন্ধু পরিবারের রক্ত বইছে তার শরীরে।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের রাজনৈতিক সুনাম ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে তন্ময় সক্ষম হবেন বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে মনোনয়ন পাওয়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শেখ সারহান নাসের তন্ময়।
তিনি রোববার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে বাংলানিউজকে বলেন, আমি মনোনয়ন পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি মনোনয়ন বোর্ডে যারা ছিলেন, আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মনোনয়ন বোর্ড আমাকে যে সম্মান দিয়েছে, যে নমিনেশন দিয়েছে, বাগেরহাটবাসী তা উপহার দেবেন ৩০ ডিসেম্বর, ইনশাল্লাহ…।
বাংলানিউজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এ প্রতিবেদককে তন্ময় বলেন, আপনি আমার সংবাদ করেছিলেন প্রথম। যার কারণে আজকে আমার নামটা হলো।
তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন পাওয়াটা আমার জন্য একটি বিশাল বড় ব্যাপার। আমি ছোটবেলা থেকে বাবার সঙ্গে বাগেরহাটে যাওয়া-আসা করি। সেই থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক। যাওয়া আসাকে কেন্দ্র করে আমাদের নেত্রী আমার ফুফু আমাকে বিশ্বাস করে যে সুযোগ দিয়েছেন নৌকা প্রতীকে দাঁড়ানোর, তা আমার জীবনে বিশাল বড় একটি অর্জন। সারা জীবন এ সম্মান ধরে রাখার চেষ্টা করবো। সিনিয়র যারা আছেন তাদের উপদেশ নিয়ে কাজ করবো।
নির্বাচিত হলে এলাকার জন্য কি করার পরিকল্পনা রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার লক্ষ্য থাকবে কিভাবে বাগেরহাটকে সুন্দর করে গোছানো যায়। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে রয়েছে গ্রাম হবে শহর, সেটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে আমি বাগেরহাট ও টুঙ্গিপাড়ায় পুরো সময়টাই থাকবো। ইশতেহার ছাড়াও বাগেরহাটকে নিয়ে আমার কিছু পরিকল্পনা আছে। বাগেরহাটে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন। স্কুল কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে চাই। অনেক রাস্তাঘাট কাঁচা রয়েছে। যেগুলো পাকা করতে চাই। নতুন প্রজন্মের কাছে একটি সুন্দর বাগেরহাট উপহার দিতে চাই।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply