হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার নবীগঞ্জ পৌর শহর জুড়ে ট্রাফিক আইনের কোনো নিয়ম-কানুন না মেনে চলাচলকারী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-মিশুক যেন বিষফোড়ায় পরিণত হয়েছে। পৌরসভার সংশ্লিষ্ট সূত্র ৮০টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-মিশুকের লাইসেন্স থাকার কথা জানালেও শহরে অন্তত ৫ শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-মিশুক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর ফলে বাড়ছে তীব্র যানজট। লাইসেন্সবিহীন এই অটোরিকশা-মিশুকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়াতে শহরবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
শহরবাসী বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষ সুন্দর শহর উপহার দেয়ার আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু’ রাস্তায় বের হলেই যানজটে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এ যেন শুধু নামেই প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়- অটোরিক্সা চালকরা নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন রাস্তার মাথায় এবং বাজারের অলি-গলিতে এলোমেলো ভাবে অটোরিকশা ফেলে রাখে। ফলে অন্য যানবাহন ও পথচারীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জরুরি কাজে যাওয়া সাধারণ মানুষ এমনকি এম্বুল্যান্সে থাকা অসুস্থ্য রোগী এবং তার স্বজনদেরকেও পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি।
এ বিষয়ে আইনশৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় যানজট নিরসনে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শহরে যানজট সৃষ্টিকারী এবং লাইসেন্সবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও উশৃংখল চালকরা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বীরদর্পে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদিকে চলতি সপ্তাহে যানজট সৃষ্টিসহ আইন অমান্য করায় প্রায় ২৫টি গাড়ি আটক করেছেন ট্রাফিক সার্জন্ট ইনজামাম উল হক, যার মধ্যে অধিকাংশই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা-মিশুক।
এছাড়া এসব চালকদের মধ্যে অনেকেই শিশু-কিশোর এদের অনেকেরই প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা না থাকায় যাত্রীদের সাথে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকে। শহরের বিভিন্ন জায়গার ভাড়া নির্ধারণ করা থাকলেও অটোরিক্সা চালকরা ইচ্ছে মতো বেপরোয়া চলাচল ও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যাত্রীরা চালকদের কথা মতো ভাড়া না দিলে অনেক চালক যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য- নবীগঞ্জের ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার ব্যাবস্থাপনা যে সম্পূর্ণ হ-যব-র-ল সেটা বুঝতে আপনাকে পন্ডিত হতে হবে না।
জনমনে প্রশ্ন জেগেছে শ্রমিক নেতাদের দায়িত্বটা কি? আদৌ কি তারা সেটা জানেন কি না? জানলে কেন এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন না। শ্রমিক এবং শ্রমিক নেতাদের সহযোগীতা ছাড়া প্রশাসনের একার পক্ষে বিষয়টি বিহিত করা সম্ভব নয়। এদিকে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ নবীগঞ্জ বাসী। দিন নেই রাত নেই, যখন তখন লোডশেডিং কেড়ে নিচ্ছে কর্ম চাঞ্চল্য। বিদ্যুৎ যতোটুকু জুটছে, ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা তার একটি বড় অংশ কেড়ে নিচ্ছে। মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো অনুমোদনহীন ভাবে নবীগঞ্জে দাপিয়ে বাড়ছে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা।
তাই এ বিষয়ে দ্রুত পদপে নেয়ার দাবী জানান সচেতন মহল। নবীগঞ্জ পৌর অফিস থেকে এসব শিশু-কিশোরদের অটোরিক্সা চালাতে কোনো লাইসেন্স প্রদান করা হয় না বলে মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ জানান, এছাড়াও ১৮ বছরের নিচে কেউ অটোরিক্সা চালালে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। তবে পৌরসভায় কতটি গাড়ির লাইসেন্স আছে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এর সঠিক জবাব দিতে পারেন নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান শাহরীয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, যোগদান করার পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। শীঘ্রই শ্রমিক নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসবো এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সচেতন মহলের ভাষ্য সর্বসাধারণ সচেতন হলে এবং প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply