এসডিজি’র ৪ নম্বর গোল তথা সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি করার প্রয়াসে উদ্ভাবনী ধারণার বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। উদ্ভাবনী ধারণার সফল বাস্তবায়নই পারে মানসম্মত শিক্ষার্থী গড়ে তুলতে।
আর মানসম্মত শিক্ষার্থী গড়ে তুলতে পারলে মানসম্মত সমৃদ্ধ নাগরিক ও নেতৃত্ব গড়ে উঠবে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে। এছাড়াও ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। উদ্ভাবনী ধারণা জীবন মানকে সহজ করে করে তোলে, মানুষ প্রবেশ করে স্মার্ট সিস্টেমে। দৈনন্দিন জীবন যাত্রার যাবতীয় কাজ স্মার্ট সিস্টেমে হবে। কমে মানুষের কাজ।
ai প্রযুক্তির ব্যবহারে জীবন মান উন্নত হবে। তাইতো বাংলাদেশ সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ লক্ষ নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় শিক্ষার্থীনীতি ২০১০ বাস্তবায়নে কারিকুলামের ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। সামষ্টিক মূল্যায়ন থাকছেনা। মাধ্যমিকে শুরু হয়েছে ধারাবাহিক মূল্যায়ন এবং প্রাথমিকে ২০২৩ সালে ১ম শ্রেণির ধারাবাহিক মূল্যায়ন চলছে। ২০২৪ সালে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাথমিকের যুক্ত হবে ২য় ও ৩য় শ্রেণি।
তাই মানসম্মত অর্থাৎ যুগোপযোগী শিক্ষার্থী গড়ে তুলতে উদ্ভাবনী ধারণা সৃষ্টিতে ও তার বাস্তবায়নে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ জোড়ালোভাবে কাজ করছে। সহকারী শিক্ষক হতে কর্মকর্তা পর্যন্ত সকলেই উদ্ভাবরী ধারণা সৃষ্টি ও বাস্তবায়নে কাজ করছে। নাগরিক সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অর্থাৎ সেবানপ্রদানের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরনে উদ্ভাবন, সেবাসহিজকরন, কাইযেন এবং ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্প প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
তন্মন্ধে উ্ভাবন শীর্ষে। জনবলের জ্ঞান, প্রজ্ঞা, মেধাকে কাজে লাগানোর নিমিত্ত উদ্ভাবনের উপর জোর দিলে একদিকে পেশাগতক্ষেত্রে যেমন তাঁদের দক্ষতা বাড়ে, অন্যদিকে দেশের প্রতি দরদও বৃদ্ধি পায় বহুগুনে। পেশাগত ও ব্যক্তিগত উভয় ক্ষেত্রে সততার সাথে কাজ করতে উৎসাহী হয়। প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ধারণার ক্ষেত্র ২ টি, যথা- ১. সেবা সহজীকরণ, ২. ই গভর্নেন্স। উদ্ভাবনে অবশ্যই TCV/TCVQ থাকতে হবে। উদ্ভাবনী ধারণা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় অনেকেই নিজেকে দূরে রাখছে। একটা ভাবনা একটি পণ্য বা সেবায় পরিবর্তনের প্রক্রিয়া যা ভ্যালু ক্রিয়েট করে অর্থাৎ যার জন্য গ্রাহক পরিশোধ করে।
তবে সহজভাবে বলা যায়, উদ্ভাবন হলো কোন প্রতিষ্ঠান হতে যে সকল সেবা প্রদান করা হয়, সেবাপ্রদানকারী ঐ সকল সেবা তার মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে এমনভাবে প্রদান করবেন যেন সেবাগ্রহীতা পূর্বের তুলনায় বিনা হয়রানীতে অতি অল্পসময়ে, স্বল্প খরচে গ্রহণ করতে পারেন। বিগত কয়েক বছর পূর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের A2i প্রকল্পের সূচনা থেকেই উদ্ভাবনী ধারণার সাথে প্রাথমিক শিক্ষার জনবল নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিবছর মাঠ পর্যায়ের জনবলের নিকট হতে উদ্ভাবনী ধারনা সংগ্রহ এবং মানদন্ড যাচাইপূর্বক প্রয়োজনীয় অর্থায়ন দিয়ে বাস্তবায়ন করছে যার সুফল প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় অংশীজন ভোগ করছে। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষায় মাঠ পর্যায় হতে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অসংখ্য উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়ন ও কাইযেনের চর্চা হচ্ছে যা প্রাথমিক শিক্ষায় অভাবনীয় সাফল্য এনেছে ।
এ যাবৎ পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষায় যে সকল উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবায়ন হয়েছে তার কয়েকটি হলো- ১. অনলাইন সেবা, ২. আর নয় টেনশন, সময়মত পেনশন, ৩. ক্ষুদে বক্তা, ৪. ইন্টারনেট ভিত্তিক জানতে চাই কর্ণার, ৫. বেষ্ট গ্রুপ অব দ্যা মানথ ৬. স্টুডেন্ট অব দ্যা ডে, ৭. মাল্টিমিডিয়া পাঠদান বৃদ্ধিকরণ ৮. মানবতার দেয়াল ৯. সততা স্টোর ১০. স্মাইলি ১১. অনলাইন বদলি ১২. আইবাস+++ এর মাধ্যমে অনলাইনে বেতন ভাতাদি প্রদান ১৩. মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে উপবৃত্তি প্রদান ইনোভেশন সৃষ্টি ও বাস্তবায়নের ধারা অব্যাহত থাকলে প্রাথমিক শিক্ষায় অল্প সময়ে মানসম্মত শিক্ষার্থী গড়া সহজ হবে এবং মানসম্মত শিক্ষার্থীরাই সোনার বাংলা গড়বে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply