’’মার্চ ফর ডেমক্রেসী এন্ড হিউম্যান রাইট ইন বাংলাদেশ‘‘ শিরোনামে যুক্তরাজ্য বিএন‘পি ও তার অঙ্গসংগঠন সমূহ এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে লন্ডনে বসবারত সরকার বিরোধী এবং স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্টী, একাধিক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ২৯ আগষ্ট মঙ্গলবার ২০২৩ সেন্ট্রেল লন্ডনের হাইডপার্ক কর্ণারের স্পীকার গ্যালারিতে সমবেত হয়ে প্রথমে হাইডপার্ক কর্ণার, এরপর ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউজ অব কমন্স এর পাশদিয়ে দশ নাম্বার ডাউনিং ষ্ট্রীট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সামনে মিছিল ও সমাবেশ করেছে ।
মূলতঃ একদফা দাবী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ২০২৪ সালের সাধারন নির্বাচন এবং বাংলাদেশে সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে গুম-খুন বিরোধীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং বিএনপি নেতা তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার উপর থেকে সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মিছিল সমাবেশে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন ছাড়াও ব্রিটেনে জামাত-বিএনপি নেতাদের সৃষ্ট কয়েকটি সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানার বহন করতে দেখা যায়।
একদফার দাবীতে এই সমাবেশের আহবান করা হলেও সমাবেশ কারীরা, মানবাধিকার, গুম-খুন-মতপ্রকাশে স্বাধীনতা- সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মিদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহার ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীন সাধারন নির্বাচনের দাবিতে শ্লোগান দিতে দেখা গেছে। সমাবেশে-যুক্তরাজ্য বিএনপি ও তার শাখা সংগঠনের ব্যানার ছাড়াও লন্ডনে জামাতের সংগঠন নিরাপদ বাংলাদেশ চাই, গ্লোবাল ভয়েস ফর জাষ্ট্রিজ, সেইভ বাংলাদেশ , ফাইট ফর রাইট ইত্যাদি ব্যনার বহন করতে দেখা যায়।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম.এ. মালিকের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ ও ডলার বিশ্বাসের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, মিডিয়া সেক্রেটারী ডালিয়া বিনতে লাকুরিয়া, যুক্তরাজ্য মহিলা দল সভাপতি ফেরদৌসি রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, মুজিবুর রহমান, ড. মুজিবুর রহমান, নাসিমুজ্জামান সুহেল, যুগ্ম সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু, সহসভাপতি তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, শহিদুল ইসলাম মামুন, যুবদলের সভাপতি রহিম উদ্দিন, সেক্রেটারী আফজাল হোসেন, আব্দুল বাসিত বাদশাহ, স্বেচ্চাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমদ শাহিন, সেক্রেটারী আবুল হোসেইন সহ
প্রতিটি শাখা কমিটির সভাপতি সেক্রেটারী, জামাত এবং অন্যান্য সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্লেবাল ভয়েস ফর জাষ্ট্রিজের সভাপতি ড. হাসনাত এম হোসেন এমবিই, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই‘র সভাপতি মুসলিম খান, লন্ডনের পলাতক সাংবাদিক অলি উল্লাহ নোমান, সাংবাদিক শামসুল আলম লিটন খেলাফত মজলিশ নেতা মাওলানা আব্দুল কাদের সালেহ, ভয়েস ফর জাষ্ট্রিজের সভাপতি কে.এম. আবু তাহের চৌধুরী- গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল এর সহসভাপতি মির্জা আসহাব বেগ, হেফাজত নেতা মাওলানা শোয়াইব আহমদ, জামাত নেতা গোলাম আজম পুত্র মামুন আল আজমী, জমিয়তে উলাময়ে ইসলাম একাংশের নেতা মুফতি শাহ সদর উদ্দিন সহ ৫০জনের অধিক বক্তা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন এই সরকার বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে রেছেখে, স্বাধীন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, সরকার দেশের সংবাদপত্র ও সংবাদ মাধ্যমের টুটি চেপে রেখেছে, ও অযথা সাংবাদিকদের হয়রানি করছে। কেউ সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই সাদা পোষাকে গোয়েন্দারা তুলে নিয়ে যাচ্ছে, বিচারকরাও সরকারের নির্দেশে চলে। এই সরকার দেশের সবকিছু দলীয় করন করে ফেলেছে। বিগত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছেনা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপর একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখা চেষ্টা করছে-তাকে দেশে ফিরতে দিচ্ছেনা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়াকে সরকার তিলে তিলে হত্যা করতে চাইছে তাকে দিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করার সুযোগ দিচ্ছেনা। এই সরকারের সময় কেউ নিরাপদ নয়। উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। ব্রিটেন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকার অর্থ পাচার করছে। বক্তরা আরো বলেন সাধারন মানুষের ভোটাধিকার ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে তারা আন্দোলনে নেমেছেন।
এটি দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় নিশ্চিত নাহওেয়া পর্জন্ত তারা ঘরে ফিরবেননা। বক্তরা অ্যমনেস্ট্রি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসমূহ, বিবিসিসহ বিশ্ব সংবাদ মাধ্যম, ব্রিটিশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সমাবেশে বক্তরা বলেন তাদের নেতা তারেক রহমান অচিরেই আয়াত উল্লাহ খোমেনির মত বীরের বেশে দেশে ফিরবেন। সমাবেশ শেষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ১০ নং ডাউনিং ষ্ট্রীটের একজন কর্মকর্তা এই স্মারক লিপি গ্রহণ করেন।
সমাবেশ সফল করতে যুক্তরাজ্য বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন সমূহ এবং জামাতপন্থিরা খানেক পূর্ব থেকেই ব্রিটেনের প্রতিটি শহরে গণসংযোগ- লিফলেট বিতরন ও সংবাদ সম্মেলন ও তাদের সমমনা সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারনা চালানো হয়। সমাবেশ সফল করতে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহর এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকে সরকার বিরোধীরা সকাল থেকেই হাইড পার্কে এসে সমবেত হতে থাকেন।
নারী পুরুষ শিশু সহ তিন হজারের মত মানুষের সমাবেশ ঘটে। যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেছিলেন তারা ২০/২৫ হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটাবেন, তা সম্ভব হয়নি । সমাবেশে আগতদের মধ্যে অধিকাংশিই ছিলিন জামাত-হেফাজতের অনুসারী। এছাড়া বেশ কিছু ব্রিটিশ পাকিস্তানী নাগরিকদেরও দেখা যায়। হাইড পার্ক কর্নার থেকে দুপুর ১২টা ত্রিশ মিনিটে সমাবেশ শুরু হয়, হাইড পার্ক থেকে সমাবেশকারীরা ব্রিটিশ পা্লামেন্টের পাশ দিয়ে র্যারী নিয়ে দশ নাম্বার ডাউনিং ষ্ট্রীটে গিয়ে স্মারক লিপি হস্তান্তরের মাধ্যমে বিকেল সাড়ে চারটার পরে সমাবেশ শেষ হয়।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply