লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের সার্বিক সহযোগিতায় ইউসিএল হিউম্যানিটারিয়ান ইনস্টিটিউট লন্ডনের আয়োজনে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ গণহত্যার অন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে নর্থওয়েষ্ট লন্ডনের রয়্যাল ফ্রি হাসপাতালের লেকচার থিয়েটার-১এ (The 1971 Bangladesh Genocide and a Call for International Recognition”) শিরোনামে আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা হয়।
২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার ২০২২ লন্ডন সময় বিকেল তিন ঘটিকা থেকে সন্ধ্যে ছয়টা তিন ঘণ্টা ব্যাপী এই সিম্পোজিয়ামে আলোচক বৃন্দ বলেন একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর গণহত্যা সংগঠিত হয় বাংলাদেশে। মাত্র নয় মাসে ৩০লক্ষ মানুষকে হত্যা হরা হয়। বিশ্বের কোথাও আর এত বড় গণহত্যা সংগঠিত হয়নি। আলোচক বৃন্দ বলেন বসনিয়া রোয়ান্ডা সহ অন্যান্য দেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া গেলেও ৫২ বছরেও বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি।
একমাত্র বাংলাদেশেই ধর্মের নামে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়। চারটি লক্ষ্যে স্থির করে অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবে একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে চালানো হয় এই পরিকল্পিত গণহত্যা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে ২লক্ষ নারী ধর্ষিত হয়েছে । এটি ছিল একটি জাতিকে পৃথিবিী থেকে নিশ্চিহ্ন করার সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা। পাকিস্তানকে অবশ্যই মানবতা বিরোধী এই অপরাধের জন্য বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে সেই সাথে হত্যা, ধর্ষন, লুণ্টন ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরন দিতে হবে। সেমিনারে আলোচকবৃন্দ এই গণহত্যার স্বীকৃতির ব্যপাবে বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান সেই সাথে বিভিন্ন মানবাধিকার ও গবেষকদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন লন্ডন সফররত বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম। অনুষ্টানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাঃ বায়েস আহমেদ সহযোগী অধ্যাপক ইনস্টিটিউট ফর রিস্ক অ্যান্ড ডিজাস্টার রিডাকশন এবং পরিচালক, ইউসিএল মানবিক ইনস্টিটিউট ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সহযোগী অধ্যাপক ড. বায়েস আহমদ (ইউসিএল) যুক্তরাজ্য। কেন বাংলাদেশের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক ভাবে রিকগনাইজ করা হবেনা এবং একাত্তরের গণহত্যার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনায় অংশ নেন লন্ডনে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকশিশনার বিক্রম কে. দোরাইস্বামী, যুক্তরজ্য-আয়ারল্যান্ড এবং লাইবেরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এবং আইএমও‘র বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এইচ.ই. সাইদা মুনা তাসনিম, ড. ইমতিয়াজ আহমদ আন্তর্জাতিক
সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও পরিচালক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কনজারভেটিভ ফ্রান্ডস অব ইন্ডিয়ার পেট্রন লর্ড রামী রাঙ্গার, মিঃ গ্রেথ প্রাইস সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এশিয়া প্যাসিফিক পোগ্রাম চাটহাম হাউজ, মিঃজুলিয়ান ফ্রান্সিস বাংলাদেশে কাজ করা আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা অক্সফামের প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভঅগের প্রধান প্রফেসর আমেনা মহশিন, আশিশ রায় চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাক সম্পর্ক বিভাগ, ১৯৭১ এর বীরঙ্গনাদের নিয়ে পিএইডি করা ডারহ্যিাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনথ্রপলিজি বিভাগের প্রধান ড. নয়নিকা মুখার্জি ও ১৯৭১ সালে ভারতে বাংলাদেশের শরনার্থি ক্যাম্পে নার্স হিসে কাজা করা ক্যাথার্ডল রিলিফের ভেলাইনটাইন হার্ডিং।
সিম্পোজিয়ামের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাহিনীর হাতে হত্যার শিকার ত্রিশ লক্ষ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর পর ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের গণহত্যার উপর একটি প্রমান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। সিম্পোজিয়ামে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী ও বিভিন্ন সাজিক সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply