৯ অক্টোবর রবিবার পাকিস্তানের সিন্ধুপ্রদেশে এক হিন্দু যুবককে জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। সিন্দুর কয়েকটি স্থানীয় মিডিয়া ও বার্তা সংস্থা এএনআই খবরিটি নিশিচত করেছে। হিন্দু যুবক অজয় কুমার রও ডাহরাকিকে সিন্দুর লারকানা জামিয়া ইসলামিয়া মসজিদে ধরে এনে জমিয়ত উলামা-ই-সিন্ধের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা রশিদ মাহমুদ সুমরো জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করেছেন বলে সিন্দুর কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। ধর্মান্তর অনুষ্ঠানের ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, নির্যাতিতকে খুবই চিন্তিত দেখাচ্ছে।
জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ এবং বিবাহ পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। এমন ঘটনা পাকিস্তানে কোন নতুন বিষয় নয় এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে, বাহাওয়ালপুরের ইয়াজমান শহর থেকে মুহাম্মদ ওয়াসিম নামে একজন মুসলিম পুরুষ, অনিতা নামে এক হিন্দু মেয়েকে অপহরণ করেছিল।
অনিতা জানান একটি কাগজে তার বুড়ো আঙুলের ছাপ নিয়ে তাকে জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয় এবং তাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে বাধ্য করেন অপহরণকারী। অপহরণকারী ভিকটিমকে একটি তালাবদ্ধ ঘরে আটকে রেখে বারবার তাকে ধর্ষণ করেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
পাকিস্তানে উগ্রপন্থি মুসলিমদের অত্যাচারে হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে নারীদের অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে, মানবাধিকার সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর রাইট অ্যান্ড সিকিউরিটির (IFFRAS আইএফএফআরএএস) রিপোর্টে এসব অত্যাচার নির্যাতনের চিত্র ফুটে উঠেছে।
এক বছরেরও বেশি সময় নির্যাতনের পর গেল সেপ্টেম্বরে, ভুক্তভোগী অনিতা তার অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে যায় এবং বাহাওয়ালপুরে পারিবারিক আদালতে মিথ্যা/জোরপূর্বক বিবাহ বাতিলের জন্য আবেদন করে। নির্যাতিতা অনিতার পিতা জানান তিনি খুবই দরিদ্র এবং অপহরণকারী একজন মুসলিম এবং প্রভাবশালী । অপহরণকারী ভুক্তভোগীর পরিবারকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। ভূক্তভোগী পরিবারটি আদালতের কাছে সুরক্ষা চাইছে।
পাকিস্তানে হিন্দু , খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলি প্রতিনিয়তই উগ্রপন্থি মুসলিমদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে। অনেকে ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারছেনা। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দুর্দশার কথা নথিভুক্ত করেছে।
জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ এবং বিয়ের উদ্দেশ্যে অপহরণ পাকিস্তানে একটি প্রধান সমস্যা। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই খ্রিস্টান এবং হিন্দু মেয়ে এবং যুবতী মহিলা, তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেক বয়স্ক মুসলিম পুরুষদের সাথে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।
পাকিস্তানে নারীদের দুর্দশা দিন দিন বাড়ছে, ২০২১ সালের প্রথমার্ধে দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশে সংখ্যলঘূ ৬,৭৫৪ জন নারীকে অপহরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮৯০ জন নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে, ৩৭২১ জনকে নির্যাতন করা হয়েছে এর মধ্যে ৭৫২ জন শিশু। দুনিয়া নিউজের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply