সদ্য প্রয়াত হয়েছেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হয়েছেন তার প্রথমপুত্র তৃতীয় চার্লস। রানী হয়েছেন চার্লসের দ্বিতীয় স্ত্রী ক্যামিলা পার্কার। ঠিক এই সময় ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা সাইমন চার্লস ডোরান্ট ডে নামক একব্যক্তি দাবি করেছেন তিনি রাজা তৃতীয় চার্লস ও ক্যামিলার প্রেমজাত সন্তান।
পাশাপাশি তৃতীয় চার্লস ও তার প্রথম পক্ষের বড় সন্তান প্রিন্স উইলিয়ামকে প্রিন্স অব ওয়েলস হিসেবে দেখতে হচ্ছে, যা নিজের জন্য দুর্ভাগ্য বলে মন্তব্য করেছেন সাইমন। পেশায় প্রকৌশলী সাইমন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের বাসিন্দা। তার জন্ম ১৯৬৬ সালের ৫ এপ্রিল। বর্তমানে তার বয়স ৫৬ বছর। আট মাস বয়সে তাকে অস্ট্রেলিয়ার এক পরিবার দত্তক নেয়। সাইমন বলেন তার দত্তক নেয়া পিতা মৃত্যুশয্যায় তাকে বলে গেছেন তিনি চার্লস-ক্যামিলার গোপন সন্তান ও রাজপরিবারের সদস্য।
তিনি আরো জানান, রাজপরিবারের সদস্যদের কাছে নিজের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য তিনি ডিএনএ টেষ্ট করাতে রাজি আছেন। তিনি গণমাধ্যমকে আরো জানান এ নিয়ে তিনি একবার রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে চিঠিও লেখেন। তবে এই চিঠির কোনো উত্তর তিনি পাননি। সাইমন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উইলিয়ামকে প্রিন্স অব ওয়েলস হিসাবে ঘোষণা করেছেন রাজা চার্লস। কারণ তার মতে, এই পদ পাওয়ার কথা ছিল তার নিজের।সাইমন বলেন, ‘আমি খারাপ ভাবতে চাই না, তবে আমার খারাপ লাগে।
চার্লস চাইলে আমার চিঠির অন্তত একটা উত্তর দিতে পারতেন। চার্লসের ছেলে হিসেবে আমাকে মেনে নেয়া উচিত। উইলিয়ামকে নতুন উপাধিতে ভূষিত করা হচ্ছে। কিন্তু আমার উত্তর কোথায়? আমার ডিএনএ পরীক্ষার দাবির কি হবে? চার্লস যদি আমার বাবা না হন, তা হলে তা প্রমাণ করুন।’তিনি বলেন, এ নিয়ে তার কয়েকজন আইনজীবীর সাথে কথাও হয়েছে। রাজা আইনের ঊর্ধ্বে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি। চার্লসের পাশাপাশি মা ক্যামিলার ওপরেও ক্ষোভ রয়েছে তার।
তার দাবি, তার পালক পিতা-মাতা এক সময় রাজ পরিবারে কাজ করতেন। তখনই তাদের হাতে সন্তানকে তুলে দেন চার্লস ও ক্যামিলা। ১৯৬৫ সালে চার্লস-ক্যামিলার গোপন সম্পর্কের সূত্রপাত। উইনস্টন চার্চিলের শেষকৃত্যে তাদের একে অপরের সাথে দেখা হয়। আর তার ঠিক এক বছর পরই জন্ম হয় তার। সাইমন আরো দাবি করেন, ক্যামিলা সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর তাকে ব্রিটেন থেকে দূরে রাখা হয়।
চার্লসকেও নয় মাসের জন্য অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঠানো হয়। ক্যামিলা তাকে আট মাস বয়স পর্যন্ত নিজের কাছে রাখেন। রাজপরিবার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে তাকে আগলে রাখেন। পরে তাকে দত্তক দেয়া হয়। দত্তকের সময় বিশেষ শর্ত দেয়া হয়। শর্ত ছিল যে, তার নামের প্রথমে থাকা সাইমন এবং মাঝে থাকা চার্লস বদল করতে পারবে না দত্তকে নেয়া পরিবার। সাইমন বলেন জন্মের সনদ ও নামই তাকে রাজ পরিবারের সদস্য বলে প্রমাণ করে। এর জন্য অন্য কোনো প্রমাণের প্রয়োজন নেই ।
সম্প্রতি সাইমন অস্ট্রেলিয়ায় তার সদ্য পরলোকগত দাদি রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি তিনি অঙ্গীকার করেন, পরিচয় ফিরে পেতে তিনি খুব শিগগিরই রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামবেন। সাইমন এত কিছু দাবি করলেও বিভিন্ন পুরনো প্রতিবেদন ও তথ্য অনুযায়ী সাইমনের জন্মের প্রায় পাঁচ বছর পর চার্লস ও ক্যামিলার প্রথম দেখা হয়।
১৯৭০ সালে একটি পোলো ম্যাচ চলাকালীন চার্লস-ক্যামিলার প্রথম দেখা হয় বলেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বার বার উঠে এসেছে। এমনকি ক্যামিলা পার্কার কয়েক বছর পূর্বে বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন প্রিন্স চার্লসের সাথে তার প্রথম দেখা হয় ১৯৭০ সালে। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে চার্লস ও ক্যামিলার বিয়ে হয়। তখন তাদের দু’জনেরই প্রথম পক্ষের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। এর ভেতর টেমসের জল অনেক গড়িয়েছে। নতুন করে সাইমনের আবির্ভাব ব্রিটিশ সমাজে আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন এটি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে নতুন ষঢ়যন্ত্র। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দ বাজার পত্রিকা এই তথ্য দিছেয়ে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply