ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির নতুন প্রধান লিজ ট্রাস নতুন মন্ত্রীসভা গঠন করেছেন। তার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রীসভায় বরিস ক্যাবিনেটের প্রায় সকলেই বাদ পড়েছেন। মঙ্গলবার রাণী এলিজাবেথ লিজ ট্রাসকে পরবর্তী সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর পর বিকেলে ট্রাষ্ট তার মন্ত্রী সভার সদস্যদর নাম ঘোষনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলির মোকাবেলায় একটি সাহসী পরিকল্পনা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লিজ ট্রাষ্ট। সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসেই মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল এনেছেন লিজ ট্রাস।
নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন ট্রাস ঘনিষ্ঠ অনেকে। আবার দেশটির প্রভাবশালী অনেক নেতাই আবার বাদ পড়েছেন মন্ত্রীর তালিকা থেকে।
লিজ ট্রাসের নতুন মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জেমস ক্লিভারলি। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুয়েলা ব্রাভারম্যানকে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন মিশেল ডোনেলান। যুক্তরাজ্যের নতুন উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন লিজ ট্রাসের কাছের বন্ধু থেরেসে কফে।
সদ্য ঘোষিত মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মন্ত্রিসভার অনেকে। তাঁদের একজন সাবেক বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ডোমিনিক রাব। নতুন মন্ত্রীদের তালিকায় নেই সাবেক পরিবহনমন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিভ বার্কলে। সাবেক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী পেনি মরডান্টকে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের নেতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
নতুন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন কেমি ব্যাডেনচ। কর্ম ও পেনশন বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন ক্লো স্মিথ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন কিট মাল্টহাউস। ট্রাসকে দীর্ঘ সময় ধরে সমর্থন দিয়ে আসা জ্যাকব রিস–মগকে ব্যবসা, জ্বালানি ও শিল্প কৌশল বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন।
লেভেলিং আপ মন্ত্রণালয়ের হাল ধরছেন সিমন ক্লার্ক। আর অ্যানি-ম্যারি ট্রেভেলিয়ানকে পরিবহন মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন রনিল জয়াবর্দেনা ও ব্রান্ডন লুইসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। অর্থমন্ত্রীর পদ ছেড়ে আন্তঃসরকার সম্পর্ক ও সমতা বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন নাদিম জাহাবি। আর গতবারের মতোই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিজের দখলে রেখেছেন বেন ওয়ালেস।
মন্ত্রিসভার অন্যদের মধ্যে ক্রিস হিটন–হ্যারিস নর্দান আয়ারল্যান্ড বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন। আলিস্টার জ্যাক ও রবার্ট বাকল্যান্ড যথাক্রমে স্কটল্যান্ড বিষয়ক মন্ত্রী ও ওয়েলস বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির (টরি) চেয়ারম্যান ও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হয়েছেন জেক বেরি।
অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লর্ড ট্রু। মন্ত্রিসভায় কপ-২৬-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের পদ ধরে রেখেছেন অলোক শর্মা।টরির নেতৃত্বের দৌড়ে গত সোমবার সাবেক অর্থমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাককে হারিয়ে দলের নেতা হন লিজ ট্রাস।
দায়িত্বভার গ্রহণের আগে লিজ ট্রাস স্কটল্যান্ডে রানির ব্যক্তিগত বাসভবন ব্যালমোরাল প্রাসাদে গিয়ে দ্বিতীয় এলিজাবেথের সাথে দেখা করেন। রানি সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানালে দু’মাসের এক অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের অবসান ঘটে। যেটি শুরু হয়েছিল একাধিক কেলেঙ্কারির জেরে, যখন বরিস জনসনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে লিজ ট্রাষ্ট কতদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন তানিয়ে ব্রিটেন জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। জানা গেছে এমপিদের অনেকেই তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্থাব আনার পরিকল্পনা করছেন।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply