ছেলে-মেয়েকে সাথে নিয়ে চিরঘুমে চলে গেলেন বিচ্ছেদের মুখে থাকা দম্পতি। সবে প্রৌঢ়ের তালিকায় নাম তুলেছিলেন অশোক কুমার ত্রিপাঠী ও বৈভবী বেন্দ্রে। অশোকের চুয়ান্ন। বৈভবী একান্ন। তাদের দুই সন্তান। ছেলে ধনুষ, বছর বাইশের যুবক। মেয়ে ঋত্বিকা কিশোরী। দু’জনের দাম্পত্যের বন্ধন আলগা হয়ে পড়েছিল দীর্ঘদিন। বনিবনা হচ্ছিল না কিছুতেই। দুই সন্তানকে নিয়ে বৈভবী থাকতেন থানের মাজিওয়াড়ে এলাকার একটি আবাসনে। সাথে থাকতেন ৮০ বছরের বৃদ্ধা মা। বৈভবী কাজ করতেন একটি বেসরকারি সংস্থায়। ওড়িশার ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা অশোক। তিনিও বেসরকারি সংস্থার কর্মী। ভুবনেশ্বরেই তার কর্মস্থল।
দাম্পত্যের টানাপোড়েন থেকে বেরিয়ে আসতে বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন দু’জনেই। মামলা চলছিল আদালতে। সম্প্রতি তাদের বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। তবে শর্ত দিয়েছিলেন একটাই- ‘ছেলে-মেয়ের মুখ চেয়ে বছরে আপনারা অন্তত একবার বেড়াতে যাবেন। গরমের ছুটি হলে ভালো। ছেলে-মেয়েকে সাথে নিয়ে কম করে ১০ দিন একসাথে কাটাবেন।’
আদালতের নির্দেশ ফেলতে পারেননি বৈভবী-অশোক। বেড়াতে এসেছিলেন নেপালে। সাথে দুই সন্তান। রোববার পর্যটন শহর পোখরা থেকে বিমান ধরেছিলেন তারা। যাবেন জোমসোম। নেপালের তীর্থভূমি।
অশোকদের নিয়ে মোট ২২ জন ছিলেন বিমানে। মাঝ আকাশেই দুর্ঘটনা। থানে জেলার কাপুরবাউদি থানার সিনিয়র ইন্সপেক্টর উত্তম সোনাভানে বলছিলেন, ‘বিচ্ছেদ হওয়ার পরই তারা বেড়াতে গিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশ মতো ১০ দিনের ট্যুর প্যাকেজ ঠিক করেছিলেন। বিমান দুর্ঘটনায় তাদের চারজনই নিখোঁজ। বিচ্ছেদের পর তারা এমনভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন, তা ভাবতেই পারছি না।’
ভাবতে পারছেন না বৈভবীর বোনও। বোন ও সাবেক বোনজামাই বেড়াতে যাওয়া নিয়ে বেশ খুশিই ছিলেন তিনি। যদি ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগে। সানন্দে বোনের আবাসনে এসে মায়ের দেখাশোনা করছিলেন। বোনের পরিবারে এভাবে বিপর্যয় নেমে আসায় বাকরুদ্ধ তিনি।
সূত্র : বর্তমান
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply