গ্রেটার লন্ডনের এশিয়ান অধ্যুষিত এলাকা নিউহ্যাম বারা কাউন্সিল। পাকিস্তানি, বাংলাদেশী এবং ভারতীয় অধ্যুষিত ইস্ট লন্ডনের নিউহ্যাম কাউন্সিলের একটি রাস্তার পাশে চলতি বছরের ১৮ই জানুয়ারি পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল এলসাকে। মাইনাস ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে এক ঘন্টারও কম বয়সী পলিথিনে মোড়ানো এই নবজাতককে একজন পথচারী প্রথমে সনাক্ত করেন।
নিউহ্যামের গ্রিনওয়ে এবং হাই স্ট্রিট সাউথ জংশন থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তাররা শিশুটির নাম দিয়েছিলেন এলসা।মঙ্গলবার ইস্ট লন্ডন ফ্যামিলি কোর্টে জানানো হয়েছে, এলসা ভালো আছে। তবে পুলিশ এখনো এলসার জন্মদাতা মা-বাবাকে খুঁজে বের করতে পারেনি। গত সাত বছরে নিউহ্যামের একই এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া তিন শিশুর মধ্যে একজন হল এলসা।
ডিএনএ পরীক্ষার পর ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছিলেন পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া তিন শিশুর মা-বাবা একই। এটা ব্যাতিক্রম ঘটনা বলেই ফ্যামিলি কোর্টের অনুমতি নিয়ে গত জুনে এই তথ্যটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ এখনো এই তিন শিশুর মা-বাবাকে খুঁজে পায়নি। এমনকি স্বেচ্ছায় কেউ এসে তাদের মা বাবা বা স্বজন বলেও দাবি করেনি!
এলসার আগে একই মা-বাবার আরেক সন্তানকে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নিউহ্যাম কাউন্সিলের রোমান রোড এলাকায় একই অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। হাসপাতালে তার নাম দেওয়া হয়েছিল রোমান। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্ল্যাস্টো এলাকার বালাম স্ট্রিটে সাদা কম্বলে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল একই মা-বাবার প্রথম সন্তানকে। হাসপাতালে তার নাম দেওয়া হয়েছিল হ্যারি।তবে হ্যারি এবং রোমান বর্তমানে দত্তক অভিভাবকদের কাছে বড় হচ্ছেন।
ফলে তাদের নামও পরিবর্তন করা হয়েছে। তারা ভালো আছে বলেও আদালতে জানানো হয়েছে। ফ্যামিলি কোর্টের শুনানিতে মেট পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিশু এলসার মা’র সন্ধানে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তবে মেট পুলিশ বলেছে, পরিত্যক্ত অবস্থায় এলসাকে পাওয়ার টিক কিছুক্ষন পূর্বে একজন মহিলাকে এই এলাকায় দেখা গেছে। তার পরনে ছিল লম্বা গাঢ় রঙের কোট এবং মাথায় স্কার্ফ অথবা হুড ছিল।
এসময় তিনি কাঁধে একটি রাকসাক (ব্যাগ) বহন করছিলেন। এই মহিলার সাথে এলসা বা রোমান, হ্যারির সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে ধারণা মেট পুলিশের। এ বিষয়ে কারো কোন তথ্য জানা থাকলে পুলিশকে অবহিত করার অনুরোধ জানিয়েছে লন্ডন মেট পুলিশ।
এমনটি গ্রেট ব্রিটেনে নতুন কোন ঘটনা নয়। প্রায়ই এভাবে রাস্থায় বা ডাষ্টবিনে এভাবে নিউবর্ন শিশু পাওয়া যায়। এদের উদ্ধার করে নেয়া হয় সরকারী হেফাজতে। তবে এই তিন শিশুর বেলায় ব্যতিক্রম যে ডিএনএ টেষ্ট করে ডাক্তারা নিশ্চিত যে এরা একই মা-বাবার সন্তান এবং শিশুদের আকৃতি দেখে বুঝা যাচ্ছে এরা এশিয়ান।
আর একারণেই পুলিশ তাদের পিতা-মাতাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। তদন্তের ধারাবাহিকতায় এলাকায় বসবাসকারী প্রতিটি নাগরিকের বৃত্তান্ত সংগ্রহ করছে লন্ডন মেট পুলিশ। বিশেষ করে গেল ত্রিশ বছর ধরে কে বারা এই এলাকায় বসবাস করেছন প্রত্যেকের ডটা সংগহ করছে পুলিশ।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply