কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে একটি টকশোতে উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরীকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যা দিয়ে অশালীন আচরণের ঘটনায় জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বিচারপতি মানিককে প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরীর কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
গতকাল রোববার ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
প্রকাশ্য ও লিখিতভাবে ক্ষমা না চাইলে সাবেক বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে আয়োজিত টকশোতে আলোচক হিসেবে হিসেবে অংশ নেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কিন্তু আলোচনার একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার উপস্থাপিকার ওপর নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে উপস্থাপিকাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যা দেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, আলোচনা শেষে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার আগ মুহূর্তে বিচারপতি মানিক বলে ওঠেন, ‘সে তো রাজাকারের বাচ্চা।’
তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে সঞ্চালক দীপ্তি বলেন, ‘আপনার কোনো অধিকার নেই, আমাকে রাজাকারের বাচ্চা বলার। আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান।’
তখন বিচারপতি মানিক বলেন, ‘অবশ্যই। এক শ’বার অধিকার আছে। আপনি রাজাকারের বাচ্চা।’
সঞ্চালক দীপ্তি বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আপনি কোন সাহসে আমাকে রাজাকারের বাচ্চা বলেন?’ তখন বিচারপতি মানিক বলেন, ‘আপনার ব্যবহার দেখে বলেছি আমি। আপনি রাজাকারের বাচ্চা।’
পরে সঞ্চালক চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমি একটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমি একটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমি একটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান।’
তখন বিচারপতি মানিক আরো বলেন, ‘কিসের আপনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান? আপনি রাজাকারের সন্তান।’
এরপর অনুষ্ঠানের অপর আলোচক গোলাম মাওলা রনি বিচারপতি মানিককে অনুরোধ করে অনুষ্ঠানস্থল থেকে সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
টকশোটি প্রচারের পর থেকে বিচারপতি মানিকের ব্যবহার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে।
এর মধ্যেই নতুন করে অনুষ্ঠানের পরের বাগবিতণ্ডার ভিডিও আবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার পারদ চূড়ায় পৌঁছে। নেটিজেনরা বিচারপতি মানিকের সমালোচনার পাশাপাশি সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর ধৈর্যের প্রশংসাও করছেন।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply