প্রাণনাশের হুমকি এবং ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন নিয়ে মুখ খুললেন হাউজিং-কমিউনিটি এন্ড লকেল গভর্নমেট মন্ত্রী ও প্রথম ব্রিটিশ বাংলাদেশী এমপি রুশনারা আলী। ক্রমাগতভাবে প্রাণনাশের হুমকীর কারনে রুশনারা আলীকে তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় কেন পুলিশি সুরক্ষার প্রয়োজন ছিল জানিয়েছেন বিবিসি‘র রাজনৈতিক ভাষ্যকার লীলা নাথু ও স্যাম ফ্রান্সিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে।
সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু ভুয়া ভিডিও দেখিয়ে সতন্ত্র প্রার্থী লেবার বিরোধীরা মিসেস আলীর সমর্থকদের নাজেহাল করার চেষ্টা করেছে। তার কর্মিরা যেখানেই প্রচারে গেছেন সেখানেই বিরোধীরা গালিগালাজ করেছে পাশাপাশি একটি জাল লেবার লিফলেট প্রচার করে তাকে শয়তান হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। বিবিসির একান্ত সাক্ষাৎকারে, মিসেস আলি বলেছেন ” সাধারন মানুষকে লেবার পার্টিকে সমর্থন নাকরার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে তার প্রচারণাকে “অস্থিতিশীল” করার চেষ্টা করেছে।
মিসেস আলী ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত প্রথম ব্রিটিশ বাংলাদেশী, বেথনাল গ্রিন এবং স্টেপনিতে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখেছেন ৩৭,৫০০ ভোট থেকে ১,৭০০ ভোট।নির্বাচনী প্রচারণায় বেশ কয়েকজন সাংসদ অপব্যবহার ও হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ করায় একে একে সব বেরিয়ে আসছে। লেবার দলীয় সংসদ সদস্য জেস ফিলিপস এবং শাবানা মাহমুদও তাদের ভীতি ও হুমকির কথা তুলে ধরেছেন। এবং একে “গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ” বলে অভিহিত করেছেন। স্টিভ রুবিজ, ট্রুরো এবং ফালমাউথের রিফর্ম ইউকে-এর প্রার্থী, প্রচারণার সময় হামলার সময় গুরুতর আহত হয়েছেন।
মিসেস আলী তার পুরো নির্বাচনী সময়টাই হয়রানি অপপ্রচার ও হুমকীর বিষয়ে সব কটি ঘটনার বিবরন তুলে ধরেছেন সাক্ষাৎকারে। মিসেস আলীর অফিসে পাঠানো একটি চিঠি, তিনি বিবিসিকে দেখিয়েছেন, চিঠিতে বলা হয়েছে যে লেবার এমপিকে কয়েক দিনের মধ্যে ” হত্যা করা হবে। তার অফিসের বাইরে বিক্ষোভ এবং ব্যক্তিগত হুমকি প্রায়ই ছিল,। তিনি বলন বাধ্য হয়েই আমার নিরাপত্তার প্রয়োজন হয়েছিল। কারণ লেবার দলের প্রচারের সমাবেশগুলিতে ” কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি যারা বিশৃঙ্খলা তৈরীর চেষ্টা করেছে ও আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকী দিয়েছে। নির্বাচনের দিন একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে পার্ক করা একটি গাড়ি “মাইক্রোফোনে গালিগালাজ করেছে ” ভোটদের ভয় দেখিয়েছে যাতে তারা ভোটদান থেকে বিরত থাকেন। ।
“এখানে কমিউনিটির মধ্যে শত্রুতার মাত্রা এমন পর্জায়ে পৌছেছে যা সত্যিই উদ্বেগের কারন, যা আমরা অথীতে দেখিনি। তিনি বলেন নির্বাচনী প্রচারে “আমি ভোটারদের সাথে কথা বলার থেকে বেশী সময় ব্যয় করতে হয়েছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রার ও হুমকী নিয়ে পুলিশকে অবহিত করতে। মিসেস আলী বলেন ১৪ বছর ধরে বেথনাল গ্রিনের জনপ্রতিনিধি হিসেবে ” অনেক কিছু দেখেছি, কিন্তু এই স্থরের শত্রুতা আর কখনো দেখিনী।
এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর ইউরোপীয় সংস্করন দাওয়াতুল ইসলাম নেতা আজমল মাসরুর, যিনি মিসেস আলীর সাথে পরাজিত হয়েছেন গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান না জানিয়ে পার্লামেন্ট বিতর্কে ভোট দানে বিরত থাকায় রুশনারা আলীর সমালোচনায় মুখর ছিলেন। আজমল মশরুর ও তার সমর্থক যারা ইসলামপন্থি হিসেবে পরিচিত গাজা ইস্যুকে পূজি করে শুধু অপবাদ অপপ্রচারই কনেনি, ধর্মের অপব্যাখা দিয়ে সাধারন মুসলিম ভোটোরদের বিভ্রান্ত করেছেন, এমন অসংখ্য ভিডিও ভাসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
কিন্তু অপপ্রচারকারীরা গাজা ইস্যুকে ব্যবহার ব্যবহার করে এলাকার একটি উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশী মুসলিম সম্প্রদায়কে তার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে। এলাকার মসজিদগুলিতে, মুসল্লীদের বলা হয়েছে “যদি আপনি লেবার বা অন্য মূলধারার দলগুলির কাউকে ভোট দেন, তাহলে আপনি একজন খাটি মুসলিম নন,” আজমল মশরুর ছাড়া কোন মেইন ষ্টীম রাজনৈতিক দলের প্রার্থিকে ভোট দিলে ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। মিসেস আলী বলেন জনগণের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে, কিন্তু হুমকি ও হয়রানি গ্রহণযোগ্য নয়,”।মিঃ আজমল মাসরুর তার নির্বাচনী প্রচারনায় বার বার বলেছেন লেবার ভোটাররা প্রকৃত মুসলিম নয়।
মিঃ আজমল মাসরুরের দাবি করেছেন “কাউকে ভয় দেখানো উচিত নয়। আমি প্রচারণার শুরুতে বলেছিলাম, রুশনারার ওপর কেউ হামলা করলে আমি তার সামনে দাঁড়াব। কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি না যে এটি আমার কাছে ফিরে এসেছে।”মিসেস আলী বেশ কয়েকজন প্রার্থীর মধ্যে অন্যতম যারা এই বছরের সাধারণ নির্বাচনের সময় অতিরিক্ত হয়রানির শিকার হয়েছেন।
মিসেস ফিলিপস, বার্মিংহাম ইয়ার্ডলির লেবার এমপি হিসাবে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন , এই নির্বাচনটিকে তার জন্য সবচেয়ে খারাপ সময় হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি সাংসদদের বলেছেন যে তার দল হুমকির সম্মুখীন হয়েছে, যার মধ্যে গাড়ির টায়ার কেটে ফেলা এবং প্রচার করার সময় চিত্রগ্রহণ করা। বিচারমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ বলেছেন, মুখোশপড়ে আক্রমন করা ব্যক্তিরা শুধু আমাদেরেই আক্রমন করেনি এটা “গণতন্ত্রের উপর এআক্রমণ”।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply