১৮৭২ সনের স্বাক্ষ্য আইন সংশোধন নিয়ে হবিগঞ্জে কর্মরত বিচারক ও আইনজীবী সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হাসানুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেন।
বিচারক মোঃ জাকির হোসেন ভারত, ভূটান ও বাংলাদেশের স্বাক্ষ্য আইন নিয়ে তুলনা মূলক আলোচনা করেন। প্রায় অভিন্ন স্বাক্ষ্য আইন নিয়ে এ অঞ্চলে বিগত দেড়শ বছর যাবত বিচার ব্যবস্থা চলে আসছিল। ভারত ২০০০ সালে স্বাক্ষ্য আইন সংশোধন করে যোযোপযোগী করে, ভূটান ২০০৫ সালে তাদের দেশের স্বাক্ষ্য আইন সংশোধন করে।
বাংলাদেশে স্বাক্ষ্য আইন সংশোধন করা হয় ২০২২ সালে। বাংলাদেশে স্বাক্ষ্য আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থান পেয়েছে। তন্মধ্যে রয়েছে স্বাক্ষ্য আইনে ডিজিটাল রেকর্ড সংযোজন। ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস, রেকর্ডার, মোবাইল ফোনের কথোপকথন, ভিডিও চিত্র, ই-মেইল আদান প্রদান, ডিজিটাল সাইন, ইলেক্ট্রনিক্স সাইন, কম্পিউটার ডিভাইস ইত্যাদি স্বাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহারের সুযোগ।
এসব বিষয় স্বাক্ষী হিসাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন পড়বে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফরেনসিক রিপোর্টের প্রয়োজন পড়বে। একই সাথে কিছু বিষয় স্বাক্ষ্য আইনে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তন্মধ্যে সংবেদনশীল মামলার ক্ষেত্রে কোনো নারীকে তার জীবনে ঘটে যাওয়া এমন কোনো বিষয় জেরায় আনা যাবে না যাতে ওই নারীর শালীনতায় আঘাত আনে।
এসব সংবেদনশীল প্রশ্নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিচারকের অনুমতির প্রয়োজন পড়বে। বিচারক মোঃ জাকির হোসেন ঢাকার বিশ্বজিত হত্যা মামলার রায়ের বিষয়টি প্রবন্ধে উপস্থাপন করেন। ওই আলোচিত মামলায় ভিডিও ফুটেজ, স্থির চিত্র, টেলিভিশনে প্রকাশিত সংবাদ স্বাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন- ভারত ভূটানসহ বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বিচার শেষে আসামীদের সাজার আনুপাতিক হার কম।
স্বাক্ষ্য আইন নিয়ে বিচারক-আইনজীবী সমন্বয় সভায় সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হাসানুল ইসলাম, নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক সুদীপ্ত দাস, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ হারুন অর রশিদসহ ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালতে কর্মরত ২৪জন বিচারক, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ আবুল মনসুর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মোছাব্বির বকুলসহ ৩৫জন আইনজীবী অংশ গ্রহন করেন।
লেখক: এম এ মজিদ, আইনজীবি ও সিনিয়র সাংবাদিক
হবিগঞ্জ, ১৯ জুলাই ২০২৩
০০১৭১১-৭৮২২৩২
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply