ঈদযাত্রায় দূর্ভোগের আশঙ্কা তৈরি করেছে মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ। ঈদ এলেই যানবাহনের বাড়তি চাপ বাড়ে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে। বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে সড়কপথে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২২ জেলার যানবাহন চলাচল করে সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক দিয়ে। গত কয়েক বছর ধরে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে সিরাজগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে চারলেন রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলছে। উন্নয়ন কাজই এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ঘরেফেরা মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ বাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থেকে চান্দাইকোনো পর্যন্ত ১৪টি ঝুকিপুর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে মহাসড়কের এসব ঝুঁকিপূর্ণ অংশ দ্রুত সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা পর্যন্ত সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কে চার লেনে উন্নয়ন কাজ চলছে। মহাসড়কের দুপাশে ড্যাম ট্রাক দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য খানাখন্দে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। আবার অনেক জায়গায় রাস্তা ঘুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতে পন্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
কখনও ধীরগতি, কখনও থেমে থেমে, আবার কখনও ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে যাত্রী পরিবহনে থাকা যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে নবনির্মিত নলকা সেতুর উত্তরের লেন খুলে দিলেও ঢাকামুখি লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দেওয়ায় ঝুঁকিপুর্ণ পুরাতন সেতু দিয়েই চলাচল করছে যানবহন। এতে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা করছে স্থানীয়রা।
সাসেক-২ এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো: মাহবুবুর রহমান বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। মহাসড়কের যেসব জায়গায় খানাখন্দে রয়েছে সেই জায়গাগুলো দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সলঙ্গা বাজার, দাদপুর বাজার, ঘুড়কা বাজার, ভুইয়াগাাঁতী বাজার ও চান্দাইকোনা বাজার এলাকায় ১৫ রমজানের মধ্যে চার লেনের নতুন সড়ক খুলে দেওয়া হবে। এতে অনেকটাই যানজট নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আমরা মনে করি।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: বদরুল কবির বলেন, সাসেক-২ এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে জেলা পুলিশ এবং আমাদের দুই দফা মিটিং হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু থেকে চান্দাইকোনো পর্যন্ত ১৪টি ঝুকিপুর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো ১৫ রমজানের মধ্যে তারা সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে আমাদের ১০টি মোটর সাইকেলের মোবাইল টিম, ১৬টি পয়েন্টে ১৬টি পিকেট টিম কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে মাইকিং ও ডিজিটাল সাইনবোর্ড লাগানো হবে। সবমিলিয়ে এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে আমাদের মোট ১৪৪ জন পুলিশ সদস্য কাজ করবে।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক বলেন, ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখতে পুলিশ সুপার স্যারের সাথে মিটিং হয়েছে। মহাসড়কে আমাদের ১৫ থেকে ১৮টি মোবাইল টিম থাকবে। তবে ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে কতজন পুলিশ সদস্য কাজ করবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মন্ডল বলেন, মহাসড়কে প্রায় ১৪টি ঝুকিপুর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সাসেক-২ এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে কয়েকদিন আগে আমি মিটিং করা হয়েছে। আগামী ১২ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে তারা সেগুলো সংস্কার করে দেবে। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে কতজন পুলিশ সদস্য কাজ করবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখনো যেহেতু সময় আছে, তাই এই বিষয়টি নিয়ে এখনো বসা হয়নি।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply