হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন পৌরসভা রোডস্থ পৌরসভা জামে মসজিদে জুমার খুৎবায় মাওলানা সৈয়দ আজহারুল ইসলাম এবাদ বলেছেন- সুদ ঘুষ চুরির টাকা মসজিদে বা অন্য কোথাও সওয়াবের উদ্দেশ্যে দান খয়রাত করলে সে দান কবুল হবে না, বরং সওয়াবের বদলে গোনাহ হবে। আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্রতাকে ভালবাসেন।
পবিত্র ইনকাম থেকে পারলে কম টাকা পয়সা দান করেন, সেই দান আল্লাহ কবুল করবেন। পবিত্র শাবান মাস হচ্ছে রহমত ও গোনাহ মাফের মাস। শাবান মাসে এমন রজনী রয়েছে যে রজনীতে আল্লাহ প্রথম আসমানে এসে বলতে থাকেন তোমাদের মধ্যে কে আছ, রিযিক চাও, গোনাহ মাফ চাও, সুস্থ জীবন যাবন চাও, আমি তাকে তাই দেব। তিনি বলেন- পবিত্র শুক্রবারে মসজিদে তাড়াতাড়ি আসতে হবে।
ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে মুসল্লীদের কে আগে আসল, কে পরে আসল তালিকা করতে থাকেন এবং আল্লাহ ওই সব মুসল্লীদের ধারাবাহিকভাবে সওয়াব দিতে থাকেন। একটা সময় ফেরেশতারা খুৎবা শুনায় বসে পড়েন। তালিকা করাও বন্ধ হয়ে যায়। অনেক মুসলমান আছেন যারা খুৎবার সময় এসে সুন্নত নামাজ পড়েন। খুৎবা শুনা ওয়াজিব। ক্বাবলাল জুমার নামাজ পড়া সুন্নত। ওয়াজিব রেখে যদি কেউ সুন্নত নামাজ পড়ে তাহলে সওয়াব হবে না। মানুষ মাসআলা জানতেও চায়না, বুঝতেও চায়না। ইসলামের একটি মাসআলা জানা
একশত শহীদের সওয়াবের সমান। হাজারো মানুষকে শয়তান বিভ্রান্ত করতে পারে কিন্তু একজন মাসআলা জানা মুসলমানকে শয়তান বিভ্রান্ত করতে পারে না। কাজেই মাসআলা জানা প্রত্যেক মানুষের কর্তব্য। তিনি বলেন- যদি এলিম না থাকে, আমল না থাকে, কোরআন হাদিস জানা না থাকে, ইসলামের লেবাস না থাকে তাহলে পীর সাহেবের ছেলে পীর হয় কিভাবে। একটা ছেলেকে জ্বীনে আছর করেছে, তার বাবা গেলেন পীর সাহেবের কাছে, পীর সাহেব পথ্য দিলেন ১টা খাসি দিতে হবে, ৪টি মুরগী দিতে হবে, ২টি মুরগী জবাই করে আনতে হবে, ২টি জীবিত থাকবে। পীর সাহেব কী ঝাড়ফুক দিলেন, জানিনা, ছেলেটি দুইদিন পরে মারা গেল। কোনো হক্কানী পীর সাহেব কি জ্বীন ছাড়ানোর জন্য এসব বলতে পারেন? মোটেই না।
এসব হচ্ছে পীরের নামে ব্যবসা। তিনি বলেন- অনেক ডাক্তার আছেন যারা রোগী দেখে ১০/১২টি ঔষধ লিখে দেন। বিষয়টা এমন যে, যদি লাইগা যায়। সাথে এই টেষ্ট সেই টেষ্ট। রোগীকে গুনতে হয় হাজার হাজার টাকা। এসব ডাক্তার সাহেবদেরকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহী করতেই হবে। এমনতিইে ছাড় দেয়া হবে না। যাদের মনে আল্লাহর ভয় থাকে তারা কোনো অপরাধ করতে পারে না। তিনি মুনাফিকদের থেকে নিজেকে রক্ষা করার আহবান জানিয়ে বলেন- যারা মিথ্যা কথা বলে, ওয়াদা ভঙ্গ করে, আমানতের খেয়ানত করে তারা হচ্ছে মুনাফিক।
এসব বাজে অভ্যাসকারীরা নামাজ পড়ে, রোযা রাখে, আবার নিজেকে মুসলমানও দাবী করে। তিনি কবরবাসীদের জন্য বেশি বেশি দোয়া করার আহবান জানিয়ে বলেন একজন হক্কানী আলেম যদি কবরের পাশ দিয়ে যান, কবরের আযাব মাফ হয়ে যায়, একজন আলেম যদি নদী পাহাড় বা সাগরের পাশ দিয়ে যান নদী সাগরের মাছ, পাহাড়ের জীবন জন্তু আলেমের জন্য দোয়া করতে থাকে। একজন হক্কানী আলেম বা পীর সাহেবের সাথে হাত মেলানোর জন্য, দোয়া নেয়ার জন্য শত শত মাইল দুর থেকে মানুষ আসে।
একজন আলেম, হাফেজে কোরআন, হক্কানী পীর সাহেবের দাম দুনিয়াতে ও আখেরাতে অনেক। ৪৩ মিনিটের জুমার খুৎবায় তিনি নীল নদে ফেরাউনের ভরাডুবির কাহিনী, পবিত্র লাইলাতুল বরাতের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।
এম এ মজিদ, হবিগঞ্জ, ২৪ ফেব্রয়ারী ২০২৩ইং
০১৭১১-৭৮২২৩২
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply