হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর জামে মসজিদে জুমার খুৎবায় মোস্তাফিজুর রহমান আজহারী বলেছেন- মুসলমানদের প্রত্যেকটি কাজের হিসাব দিতে হবে। বেহিসাবী চলাফেরা করা যাবে না। মুমিনদের জন্য পৃথিবীটা খুব কষ্টকর। বহু হিসাব নিকাশ করে আমাদেরকে চলতে হয়। পৃথিবীকে মুমিনদের জেলখানা হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আমাদের কথাবার্তায় সীমাদ্ধতা আছে, আমাদের খাবারদাবারে সীমাবদ্ধতা আছে, আয় ব্যয়ে সীমাবদ্ধতা আছে।
আমাদের সমাজে কিছু মানুষ আছে, যাদের কাছে সব ধর্ম সমান, আবার কিছু মানুষ আছে, তাদের কাছে কোনো ধর্মই ধর্মনা, আল্লাহর অস্তিত্বে তারা বিশ্বাস করে না। তাদের হিসাব আলাদা। আমরা যারা আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করি, শেষ বিচার দিনে বিশ্বাস করি, তাদের অনেক সীমাদ্ধতার মধ্যে চলতে হয়। একজন মানুষের জীবনে দুটি রাস্তা রয়েছে। একটি শয়তানের রাস্তা, একটি আল্লাহর রাস্তা। আল্লাহর রাস্তায় চলা মানুষগুলো বেহেশতে যাবে, শয়তানের রাস্তায় চলা মানুষ দুযখে যাবে। আখেরাত অনেক বড় এবং দীর্ঘ। দুনিয়া হচ্ছে ক্ষনস্থায়ী জায়গা।
তবে দুনিয়ার হিসাবে আখেরাতে বিচার হবে। সূরা আল হাশরের ১৮নং আয়াতের ব্যাখ্যা করে মোস্তাফিজুর রহমান আজহারী বলেন- প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত আগামীকালের জন্য সে কি প্রেরণ করছে তা নিয়ে চিন্তা করা। আগামীকাল বলতে মৃত্যুর পরের জীবনকে বুঝানো হয়েছে। আয়াতের শুরুতে আল্লাহকে ভয় করার কথা বলা হয়েছে, শেষের দিকেও আল্লাহকে ভয় করতে থাকার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহর ভয় মানুষের মাঝে থাকলে কখনো অসাধু ব্যবসায়ী হওয়া যাবে না। আল্লাহর ভয় থাকা মানুষ কখনো অবিচার করতে পারবে না। আল্লাহর ভয় মানুষকে ওলি বানিয়ে দিতে পারে। আল্লাহর ওলি হওয়ার জন্য লালসালু পড়া লাগবে না।
একজন মানুষের প্রত্যেকটি মুহুর্তের হিসাব দিতে হবে। জীবনের কতটুকু সময় খারাপ কাজে ব্যয় করা হয়েছে, কতটুকু সময় ভালকাজে ব্যয় করা হয়েছে, তার হিসাবে দিতে হবে। হযরত ওমর (রা) বলেছেন- মানুষের কর্যকলাপের হিসাব গ্রহনের আগে, নিজেরা নিজেদের কার্যকলাপের হিসাব করে নেয়া উচিৎ। নিজের ওজন নিজে মেপে নেয়া উচিৎ। হাদিসের উদ্বৃতি দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান আজহারী বলেন- রাসুল (সা) বলেছেন, বছরে অনেক দিন রয়েছে। উত্তম দিন হচ্ছে শুক্রবারের দিন।
ওইদিন প্রত্যেকের উচিৎ আমার উপর বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করা। নিজের জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করা। তিনি বলেন-যারা এশার নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করল, আবার ফজরের নামাজও জামায়াতের সাথে আদায় করল, তাদেরকে পুরো রাত নফল নামাজ পড়ার সওয়াব দেয়া হবে। মহল্লার মানুষ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। যেখানে সময় হয় নামাজ পড়ে নিবেন। কিন্তু এশা ও ফজরের নামাজের সময় বেশির ভাগ পুরুষ বাসায়ই থাকেন। তাদের উচিৎ নিজ নিজ মহল্লার মসজিদে গিয়ে জামায়াতের সাথে এশা ও ফজরের নামাজ আদায় করা।
এম এ মজিদ, আইনজীবী ও সংবাদকর্মী
হবিগঞ্জ, ১১ নভেম্বর ২০২২,
০১৭১১-৭৮২২৩২
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply