1. admin@wordpress.com : Adminroot :
  2. sm.khakon@gmail.com : bkantho :
  3. admin@wordpress.com : root :
জাপা থেকে রাঙ্গা বহিষ্কার নজরে আরো কয়েক নেতা - বাংলা কণ্ঠ নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৫:৪২ অপরাহ্ন

জাপা থেকে রাঙ্গা বহিষ্কার নজরে আরো কয়েক নেতা

বিশেষ প্রতিনিধি
  • বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১১২ বার পড়া হয়েছে
জাপা থেকে রাঙ্গা বহিষ্কার নজরে আরো কয়েক নেতা
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ এবং আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। আসন্ন নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত দলটিতে ততই অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। গতকাল বুধবার সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইফ মসিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামসহ সব ধরনের পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন জি এম কাদের। পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাবেক মহাসচিব রাঙ্গা এমপিকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন তিনি। ইতোমধ্যে এ আদেশ কার্যকর হয়েছে বলেও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

জাতীয় পার্টি মানেই অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা- এমনটাই হয়ে আসছে দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই। এরশাদ বেঁচে থাকতে যেমন হয়েছে, সেই ধারা এখনো বহাল রয়েছে বলেই রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন। এরশাদ মারা যাওয়ার কিছু দিন আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ছোট ভাই জি এম কাদেরকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে যান। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই বর্তমান সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা এরশাদ মারা যান। এরপর দলের নেতৃত্ব নিয়ে রওশন এরশাদের সাথে বিরোধ দেখা দেয় জি এম কাদেরের। একই সাথে সংসদে বিরোধী নেতার পদ নিয়েও প্রতিযোগিতা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত দেবর ভাবির মধ্যে সমঝোতা হয়। সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা থেকে নেতা হন রওশন এরশাদ। আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদে স্থায়ী হন (২৮ ডিসেম্বর ২০১৯, নবম কাউন্সিলে) জি এম কাদের।

অন্য দিকে এরশাদের আসনে ছেলে সাদ এরশাদকে এমপিও বানিয়ে নেন রওশন। প্রায় দুই বছর ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া মোটামুটি ঠিকঠাকই চলছিল জাতীয় পার্টির রাজনীতি। জি এম কাদেরই চালাচ্ছিলেন দল। প্রধান উপদেষ্টা রওশন এরশাদ সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবেই কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।

প্রায় বছর খানেক হলো অসুস্থ রওশন এরশাদ। দীর্ঘ দিন ধরে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসাধীন। মাঝখানে ৮ দিন (২৭ জুন থেকে ৪ জুলাই) ঢাকায় ফিরে আসেন তিনি। যোগ দেন জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে। তবে বাসায় না উঠে রাজধানী তারকা হোটেলে অবস্থান করে নিজ অনুসারীদের নিয়ে বৈঠক করেন রওশন। জি এম কাদের অনুসারীরা অভিযোগ করছেন, বছর খানেকের বেশি হলো পার্টি চেয়ারম্যান সরকারের নানা নেতিবাচক কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা করে আসছেন।

আগামী নির্বাচন নিয়েও অনেকটা মাঠের বিরোধী দল বিএনপির সুরেই কথা বলছেন জি এম কাদের। আর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন দলের সরকারপন্থী হিসেবে পরিচিতরা। তারাই অসুস্থ রওশন এরশাদকে দেশে এনে ওয়েস্টিন হোটেলে জাতীয় পার্টির ব্যানারে সভা ডাকেন। যদিও ওই বৈঠকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত এবং পদ হারানো নেতারা ছাড়া কেউ যোগদান করেননি। এমনকি রওশন ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সিনিয়র নেতাদেরও দেখা যায়নি বৈঠকে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিরোধীদলীয় নেতাকে দেখতে পর্যন্ত যাননি জি এম কাদের- এমন অভিযোগ রওশন পন্থীদের। ক্ষোভ ও অভিমান নিয়েই ফের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান তিনি।

তবে হঠাৎই গত ৩১ আগস্ট জাতীয় পার্টির ১০ম জাতীয় কাউন্সিলের ডাক দেন রওশন এরশাদ। নিজেকে আহ্বায়ক ঘোষণা করে আগামী ২৬ নভেম্বর কাউন্সিল করার জন্য ৮ সদস্যের এই কমিটি ঘোষণা করেন। যাতে তার রাজনৈতিক সচিব সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহকে সদস্যসচিব করা হয় এবং জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, আবু হোসেন বাবলা, সালমা ইসলাম ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। যদিও পরে এই নেতারা জানান, তাদের সাথে আলাপ করে এই কমিটি করা হয়নি। ওই দিন রাতেই জাতীয় পার্টি থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, রওশন এরশাদ দলের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাউন্সিল আহ্বান করতে পারেন না।

এটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই পরে দলছুট এবং পদ হারানো নেতাদের নিয়ে আরেকটি আহ্বায়ক কমিটি (কাউন্সিল) করেন রওশন এরশাদ। এ অবস্থায় গত ১ সেপ্টেম্বর সংসদীয় কমিটির বৈঠক করে রওশন এরশাদকে বাদ দিয়ে জি এম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা করার জন্য স্পিকারকে চিঠি দেয়া হয়। দলের ২৬ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ২৩ জন এতে স্বাক্ষর করেন বলে ওই দিন নয়া দিগন্তকে জানান জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

জি এম কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের পাশাপাশি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করছেন। সাধারণত দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিদের মতামতের আলোকেই সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন স্পিকার। তবে স্পিকারকে চিঠি দেয়ার পর ১৫ দিন কেটে গেলেও এখনো নতুন বিরোধী দলীয় নেতার নাম আসেনি। এরই মধ্যে রওশন ও জি এম কাদের পন্থীদের তৎপরতা বাড়তে থাকে। সম্প্রতি সাবেক মহাসচিব রাঙ্গা মিডিয়াতে জি এম কাদেরের আগামী নির্বাচন ইস্যু এবং বিরোধীদলীয় নেতা করার প্রস্তাবনা নিয়েও সমালোচনামূলক বক্তব্য দেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। সূত্রটি জানায়, জি এম কাদের কিছু দিন আগে পার্টির নেতাদের বলেছেন, কেউ যেন কোনো পার্টির দালালি না করেন। যিনিই দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন তাকেই বহিষ্কার করা হবে।

জাপা সূত্র আরো জানায়, মসিউর রহমান রাঙ্গা রওশন এবং জি এম কাদের-দু’জনকেই সন্তুষ্ট করে রাখার চেষ্টায় ছিলেন। তবে যখন ইঙ্গিত এলো যে, রওশন এরশাদ রাঙ্গাকে বাদ দিয়ে লে. জে. (অব:) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি বা অন্য কাউকে সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ করছেন, তখন তিনি ও দিকেই ঝুঁকে যান।

এ বিষয়ে রাঙ্গাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে বহিষ্কারের পর গণমাধ্যমের কাছে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি যা বলেছি সত্য বলেছি এবং বলব। পার্টির বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার রাইট আমার আছে। আমাকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত জি এম কাদেরের স্বেচ্ছাচারিতা এবং অগণতান্ত্রিক ও গঠনতন্ত্রবিরোধী।’ জি এম কাদেরের এই সিদ্ধান্তের কারণে নেতাকর্মীরা তাকে রংপুরে নামতে দেবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন। বলেন, ‘তাকে (কাদের) যদি লালমনিরহাট যেতেই হয়, হেলিকপ্টারে যেতে হবে।’

জি এম কাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, দুই নৌকায় পা রেখে চলা শীর্ষ আরো কয়েকজন নেতার দিকে নজর রেখেছেন জি এম কাদের। তাদের গতিবিধি ও কথাবার্তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যারাই জি এম কাদেরের সাথে বিট্টি করবে, তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি নয়া দিগন্তকে বলেন, সংসদীয় কমিটির মিটিংয়ে সর্বসম্মতভাবে জি এম কাদের সাহেবকে বিরোধীদলীয় নেতা করার সিদ্ধান্ত হয়। সবাই এতে স্বাক্ষর করেন। ২৬ জনের মধ্যে দলের ২৩ জন এমপির স্বাক্ষরিত প্রস্তাব স্পিকারকে পাঠানো হয়েছে। ওই বৈঠকে রাঙ্গা সাহেবও কোনো প্রশ্ন না তুলে সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি কেন সমালোচনা করছেন জানা নেই।

মহাসচিব চুন্নু আরো বলেন, সংসদীয় কমিটির মিটিংয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা হওয়ার জন্য কাজী ফিরোজ রশিদ সাহেব প্রস্তাব দেন। এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে বলে সেখানে জানানো হয়। তবে তাকে ওই পদ না দিলে সিদ্ধান্তে সই করবেন না, এমনটা কখনোই বলেননি তিনি।
রাঙ্গার মতো আর কোনো নেতা আপাতত জি এম কাদের বা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারেন- এমন কেউ দেখছি না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD