হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরীবাজার নুরুল হেরা জামে মসজিদে জুমার খুৎবায় আল্লামা মাসরুরুল হক বলেছেন-আমরা যে কোনো বিষয়ে অধৈর্য্য হয়ে যাই, অথচ ধৈর্য্যধারণ করা ইসলামের নির্দেশ। রোগ মুসিবতে পড়লে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি, অথচ রোগ মুসিবত আল্লাহর পক্ষ থেকে ইমানদারদের জন্য নেয়ামত।
একবার এক সাহাবী কঠিন জ্বরে আক্রান্ত হলেন, রাসুল (সা) বিষয়টি অবগত হলেন, রাসুল (সা) বললেন- কঠিন জ্বর দোযকের আগুনকে শীতল করে দেবে। যে কোনো বিপদ মুসিবত গোনাহ মাফের ওসিলা হতে পারে। রোগ মুসিবত আল্লাহর তরফ থেকে আসে, আল্লাহ বান্দাদেরকে এর মাধ্যমে কিছু পরীক্ষা করেন, ধৈর্যের পরীক্ষা নেন, ইমানদাররা কখনো তাতে বিচলিত হয়না।
তারা আল্লাহর উপর ভরসা রাখে। তিনি বলেন- চোঁয়াছে রোগ বলতে কিছু নেই, অলক্ষন বলতে কিছু নাই, ঘর থেকে বের হবার সময় হুচট খেলে অলক্ষনের কারন, পেচার ডাক অলক্ষনের কারণ, ঘুম থেকে উঠে কোনো খারাপ মানুষের মুখ দেখা অলক্ষনের কারণ, কোনো মাস, বার অলক্ষনের কারণ হতে পারে না। এ জাতীয় যত কুসংস্কার আছে তাতে কেউ বিশ্বাস করলে ধরে নিতে হবে তার ঈমানে গলদ আছে। ইসলামে কুসংস্কার ঢুকিয়ে দিয়েছে ইহুদিরা। অনেক কুসংস্কারকে ইবাদত মনে করা হয়।
সফর মাসের শেষের একটি দিনকে আখেরী চাহার শুম্বা নামে একটি কুসংস্কার প্রচলিত আছে। ওইদিন না কি রাসুল (সা) কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। কঠিন রোগ থেকে কিছুটা সুস্থ হওয়ায় মুসলমান নামধারী কিছু মানুষ আনন্দ উল্লাস করে। এর কোনো ভিত্তি ইসলামে নেই।
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় রাসুল (সা) অসুখে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সফর মাসের শেষ দিকে রোগ আরও বেড়ে যায়। পরের মাসে তিনি ইন্তেকাল করেন। রাসুল (সা) এর অসুখ নিয়ে যারা আনন্দ উল্লাসের মতো কার্যকলাপ করে তারা ইহুদিদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী মুসলমান, রাসুল (সা) প্রকৃত উম্মত মুসলমান নয়।
কুসংস্কার এমনভাবে ইসলামে ছড়িয়ে গেছে তা থেকে রেহাই পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। যা ইসলামে নেই, তাকে ইসলাম বলা হচ্ছে, যা ইসলামে আছে, তাকে অবহেলা করা হচ্ছে। তিনি সকলকে কুসংস্কারমুক্ত জীবন যাপন করার জন্য আহবান জানান।
লেখকঃ আইনজীবি ও সাংবাদিক
২ সেপ্টেম্বর ২০২২
০১৭১১-৭৮২২৩২
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply