অলিভিয়া এবং তাঁর সাবেক স্বামী ২০১৮ সালে উপলব্ধি করছিলেন, তাদের বিবাহিত জীবন আর টিকবেনা। তাঁরা দুজনেই ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিলেন, কিন্তু তাঁরা নিজেদের এবং সন্তানদের ক্ষতি হোক, এমনভাবে ডিভোর্স চাননি। কিন্তু অলিভিয়া যখন একজন ডিভোর্স লইয়ারের শরণাপন্ন হলেন, তখন সেই আইনজীবী তাঁকে বললেন, দ্রুত ডিভোর্স সম্পন্ন করতে হলে তাঁকে তাঁর স্বামীর ওপর দোষারূপ করতে হবে।
কিন্তু দোষারোপ করতে অস্বস্তি অনুভব করলেন অলিভিয়া। কারন ভবিষ্যতে সন্তান সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে এই মিথ্যাচারের প্রভাব পড়তে পারে। অলিভিয়া এবং তাঁর সাবেক স্বামী ‘এমিকেবল’ নামে ডিভোর্স বিষয়ে সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিলেন। কিন্তু তারপরও আইনগতভাবে তাদের ডিভোর্স সম্পন্ন করতে দুই বছর সময় লেগেছে। কেননা, তাদের দুই জনের কেউই একে ওপরকে দোষারোপ করে ডিভোর্স দিতে চাননি।
৫ এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে যে ডিভোর্স পদ্ধতি চালু ছিল, সেটি ছিল ফলট-বেইসড, অর্থাৎ দোষারোপ ভিত্তিক। একে অপরের বিরুদ্ধে পরকীয়া, ছলনা কিংবা অযৌক্তিক আচরণের অভিযোগ এনে ডিভোর্স চাইতে হতো। স্বামী-স্ত্রীর একজন এই অভিযোগের বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলে ডিভোর্স চূড়ান্ত হতে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু গতকাল ৬ এপ্রিল ২০২২ থেকে কার্যকর হওয়া আইনে স্বামী-স্ত্রীর একজন অথবা উভয়ে আদালতে একটি বিবৃতি দিয়ে জানাবেন, তাদের বৈবাহিক জীবনের অবসান হয়েছে। বিচারকেরা কোনো কারণ জানতে চাইবেন না। ডিভোর্স প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে ২৬ সপ্তাহের মধ্যে আইনগতভাবে ডিভোর্স চূড়ান্ত হয়ে যাবে। সমলিঙ্গের দম্পতিদের ক্ষেত্রেও একই আইন কার্যকর হবে। ডিভোর্স ও পারিবারিক আইন বিশেষজ্ঞরা নতুন এই আইনকে বিপ্লব হিসেবে বর্ণনা করে বলছেন, মানুষের কল্যাণের দিক বিবেচনায় নিয়ে এই আইন প্রণীত হয়েছে।
ডিভোর্স লইয়াররা বলছেন, নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর এখন ডিভোর্স আবেদনে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে নো-ফলট ডিভোর্সের আইন চলতি বছরের ৬ এপ্রিল থেকে কার্যকর হলেও স্কটল্যান্ডে একই ধরনের আইন আগে থেকেই কার্যকর আছে। তবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে আগের মতোই দোষারোপভিত্তিক ডিভোর্স পদ্ধতি চালু থাকবে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply