1. sm.khakon@gmail.com : bkantho :
তরমুজ চাষে ভাগ্য ফিরছে মাঝের চরের কৃষকদের - বাংলা কণ্ঠ নিউজ
মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৫ অপরাহ্ন

তরমুজ চাষে ভাগ্য ফিরছে মাঝের চরের কৃষকদের

বীরেন্দ্র কিশোর সরকার, বরগুনা
  • রবিবার, ২০ মার্চ, ২০২২
  • ১৫৭ বার পড়া হয়েছে
তরমুজ চাষে ভাগ্য ফিরছে মাঝের চরের কৃষকদের
তরমুজ চাষে ভাগ্য ফিরছে মাঝের চরের কৃষকদের। ফাইল ছবি

প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা বরগুনার চরাঞ্চলের কৃষকরা চলতি বছর আগাম তরমুজ চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন। এই সাফল্য দেখে বরগুনা কৃষি বিভাগ বলছে, তারা কৃষকদের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে। তবে ওই চরে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি বলে দাবি করছেন কৃষকরা।

বরগুনা সদর ও পাথরঘাটা উপজেলার মধ্যবর্তী বিষখালী নদীর মাঝের চরের কৃষকরা জানান, বরগুনা সদরের বদরখালী ও পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিরা ইউনিয়নের বিষখালী নদীতে জেগে ওঠা চরে নব্বইয়ের দশকে বসতি শুরু হয়। প্রায় ৮০০ একর আয়তনের এই চরে মূলত ছিন্নমূল ভূমিহীন মানুষরাই বসবাস করেন।

এ চরের কৃষদের সূত্রে জানা গেছে, এখানের বাসিন্দাদের কৃষি ও মৎস্য শিকারই জীবিকা নির্বাহের প্রধান দুই পেশা। তবে কৃষিতে খুব একটা সফল নন এ চরের কৃষকরা। বিষখালীর বুকের চরকে ঘিরে কিছু এলাকায় রিং বেরিবাঁধ থাকলেও বাসিন্দাদের বসতি ও ফসল সুরক্ষার জন্য তা যথেষ্ট নয়।

এ চরের এক ফসলী রোপা আমন চাষ করতে গিয়ে প্রতিবছরই জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত হন তারা। এতে ব্যাপক ক্ষতির হুমকিতে পড়তে হয় তাদের। বছরের পর বছর এমন লোকসানের মুখে টিকে থাকাটাই যখন দায়, তখন হতাশ কৃষকরা এ অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে থাকেন।

বরগুনা সদর উপজেলার বানাই এলাকাটি তরমুজ চাষের জন্য ইতোমধ্যে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। আজাহার আলীসহ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে আলাপ হলে তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, আগাম তরমুজ চাষে মোটামোটি টিকে থাকা যায়।

আজাহার আলী বলেন, বাজার থেকে বীজ কিনে নিয়ে গতবছর শীত মৌসুমের শুরুর দিকে পাঁচ একর জমিতে আগাম তরমুজের আবাদ শুরু করি। এতে খরচ হয় ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু বিক্রি হইছিল আড়াই লাখ টাকা।
আমতলী উপজেলার হলুদিয়া ইউনিয়নের তালুকদার বাজার এলাকা তরমুজ চাষের জন্য বিখ্যাত।

ওই এলাকার কৃষক আশরাফ হাওলাদার, আজিজ মৃধাসহ একাধিক কৃষক এ প্রতিবেদককে বলেন, মহামারি করোনার সময় অনেক টাকা ঋণী হয়ে গেছিলাম। আগাম জাতের তরমুজ চাষ করে আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। আমাদেরকে কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শে দিয়েছিলনে।
কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগাম তরমুজ চাষের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলাম ৩০ হাজার টাকা। দুই একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি, প্রথমবার ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি আশা করি আরও ১ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারব।

এই তরমুজ চাষের প্রধান উদ্যোক্তা বাচ্চু মিয়া বলেন, গত বছরের সফলতায় উৎসাহিত হয়ে এলাকার কৃষকরা এবছর বছর শীতের শুরুতে ব্যাপকহারে আগাম তরমুজের আবাদ শুরু করেন। এই চরে এবার ৪০০ একর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়েছে।

কৃষক গফুর মিয়া বলেন, আগাম তরমুজের ভালো আবাদ দেখে এই বছর তরমুজ চাষ শুরু করি। দুই একর জমিতে আবাদ করতে খরচ হয়েছিল ৪০ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হজার টাকা বিক্রি করেছি। আশা করি আরো ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব।

তরমুজ ক্রেতা কামাল মীর বলেন, বরগুনার হাটে-বাজারে ভ্যান গাড়িতে ফেরি করেও প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। শীতের শেষে বসন্তের শুরুতেই বাজারে তরমুজ উঠতে শুরু করেছে।
ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, এপর্যন্ত প্রায় তিন লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আগাম তরমুজের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ক্রেতারা বেশি দাম দিয়েও কিনে নিচ্ছেন।

বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চরে বেলে দো-আঁশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য খুবই ভালো। আমরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়েছি। আগাম তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে।
তিনি বলেন, বিগ ফ্যামিলি ও সুইট বেবিসহ কয়েকটি জাতের তরমুজ আগাম আবাদ করেছেন মাঝের চরের কৃষকরা। তবে এই চরে স্থায়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ থাকলে আরো বেশি তরমুজের চাষ করা সম্ভব।

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD