মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আবারো হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। শনিবার (১৯ এপ্রিল) দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্ক সিটি ও শিকাগোসহ অন্যান্য শহরগুলোতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীদের বিতাড়ন, সরকারি চাকরি থেকে ছাঁটাই, গাজা ও ইউক্রেন নীতির বিরোধিতা করে সমাবেশ করেছে।
মিডিয়া ফুটেজে দেখা গেছে, হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভকারীরা ‘ওয়ার্কার শুড হ্যাভ দ্য পাওয়ার’, নো কিনশিপ’, ‘স্টপ আর্মিং ইসরাইল’ লেখাসহ বিভিন্ন স্লোগান-সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান করছিল।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, কিছু বিক্ষোভকারীদের অভিবাসীদের সমর্থনে ও ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীদের বের করে দেয়ার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়। একইসাথে ফেডারেল সরকারের বরখাস্ত করা ব্যক্তিদের এবং যে সব বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের তহবিল কমিয়ে বা বন্ধ করে দেয়ার হুমকিতে আছে, বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিও সংহতি প্রকাশ করেন।
হোয়াইট হাউসের কাছে লাফায়েট স্কয়ারে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘ট্রাম্প ও তার প্রশাসন অভিবাসীদের বের করে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের আইন ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় প্রতিবেশীদের বাঁচাতে আমরাও নেটওয়ার্ক ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’
কোনো কোনো বিক্ষোভকারীকে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াতে এবং ফিলিস্তিনি রুমাল কেফিয়াহ গলায় জড়াতে দেখা গেছে। তারা ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদ জানান। অনেকে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলেও স্লোগান দেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেককেই ইউক্রেনের পতাকা বহন করতে দেখা গেছে। তারা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি আরো কঠোর হতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানান।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ কিছু নীতি গ্রহণ করেছেন। তিনি নতুন গঠন করা সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) দায়িত্ব দেন ইলন মাস্ককে। এরপর থেকে তার দল কেন্দ্রীয় সরকারের ২৩ লাখ কর্মচারীর মধ্যে দুই লাখেরও বেশি পদ শূন্য করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন অনেক বিদেশী শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করেছে এবং তাদের অনেককেই দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে। এসব শিক্ষার্থীদের অনেকেই ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও বৈচিত্র্য, ন্যায্যতা ও অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচি, জলবায়ু উদ্যোগ এবং ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ফেডারেল তহবিল বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। অধিকার গোষ্ঠীগুলো ট্রাম্পের এই নীতিগুলোর সমালোচনা করে আসছে।
ওয়াশিংটন মনুমেন্টের কাছে বিক্ষোভকারীদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ঘৃণা কখনো কোনো জাতিকে মহান করেনি’ এবং ‘সবার জন্য সমান অধিকার মানে আপনার অধিকার কমে যাওয়া নয়।’
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এটি দেশব্যাপী বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিন। শনিবারের এই বিক্ষোভের মূল আয়োজক গোষ্ঠীর নাম ‘৫০৫০১’। এর অর্থ, ৫০ অঙ্গরাজ্যে ৫০ বিক্ষোভ, ১টি আন্দোলন। এই দিনের কর্মসূচির নাম ‘ন্যাশনাল ডে অফ অ্যাকশন’। এই কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ৪০০টি বিক্ষোভের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
৫০৫০১ মূলত একটি তৃণমূল রাজনৈতিক সংগঠন। এটি ট্রাম্পের প্রশাসনের নীতি ও কর্মের প্রতিবাদ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে, গোষ্ঠীটি ৫ ফেব্রুয়ারি একটি দেশব্যাপী বিক্ষোভের আয়োজন করে, ১৭ ফেব্রুয়ারিতে আরেকটি দেশব্যাপী ‘নো কিংস অন প্রেসিডেন্স ডে’ বিক্ষোভ এবং ৪ মার্চে তৃতীয় একটি বিক্ষোভ আয়োজন করে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply