বাংলাদেশে ‘বেওয়ারিশ লাশ’ বলে কোনো শব্দ থাকবে না এমন একটি মানবিক সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। মানবতার সেবায় কয়েক দশকের নিবেদিত আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। সোমবার (৩ মার্চ) আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম পরিচালিত একটি হোমের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ইফতারের আগে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
নবনির্মিত বহুতল আঞ্জুমান জেআর টাওয়ারে এ ইফতার অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা নতুন ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘এটি অনেক দিক থেকে একটি স্বাতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। আসুন বেওয়ারিশ লাশের মতো কিছু থেকে মুক্ত সমাজ গড়ে তুলি।’ এই উপমহাদেশে এমন আর কোনো প্রতিষ্ঠান আছে কিনা জানি না- যা সমাজের অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য সেবা দিয়ে খুব দীর্ঘকাল ধরে টিকে ছিল।
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের বহুমুখী সেবার বর্ণনা দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, যারা এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন তাদের জন্য আমরা গর্বিত। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে আসা এবং খুব ভালোভাবে জানার জন্য এটি তার জন্য একটি বড় সৌভাগ্য- যার কথা তিনি ছোটবেলা থেকে শুনে আসতেন।
তিনি বলেন, ‘এটা আমার জন্য অনেক বড় সুযোগ। আমি সত্যিই এটা অনুভব করি। কোভিড-১৯ এর সময় প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ আমি নিজের চোখে এই প্রতিষ্ঠানটিকে দেখেছি।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান পেয়ে আমরা গর্ববোধ করি এবং এর কর্মসূচি আরো বিস্তৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম একটি বাংলাদেশী কল্যাণমূলক সংস্থা যা এতিম ও দুস্থদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে, যা দশকের পর দশক ধরে সবচেয়ে দরিদ্রদের সেবা করে আসছে।
আঞ্জুমানের সভাপতি মুফিদুল ইসলাম মুফলেহ আর ওসমানী বলেন, জমির বর্তমান বাজার মূল্য ২০০ কোটি টাকা এবং ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। তিনি বলেন, তারা সরকারের কাছ থেকে ২৬ কোটি টাকা পেয়েছেন, যা বিভিন্ন দাতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনুদানের পাশাপাশি একটি বড় সহায়তা হিসেবে দেখছেন। ‘আল্লাহ তাদের দান কবুল করুন।’
খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কিছু সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পরে বিচক্ষণতার সাথে বিষয়গুলো মোকাবেলা করার জন্য সংগঠনের সভাপতির প্রশংসা করেন। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি অনেক পুরনো একটি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের নিবেদিত সেবায় তিনি মুগ্ধ। তিনি বলেন, ‘আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে এখন সবাই চেনে। প্রধান উপদেষ্টার সাথে এখানে আসতে পেরে আমি আনন্দিত।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের নির্বাহী পরিচালক আবদুল জলিল ও আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
সূত্র : বাসস
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply