1. sm.khakon@gmail.com : bkantho :
ডিবি হেফাজতে থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা স্বেচ্ছায় দিইনি: যৌথ বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক - বাংলা কণ্ঠ নিউজ
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন

ডিবি হেফাজতে থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা স্বেচ্ছায় দিইনি: যৌথ বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক

Reporter Name
  • শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪
  • ৪২ বার পড়া হয়েছে
ডিবি হেফাজতে থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা স্বেচ্ছায় দিইনি: যৌথ বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক বলেছেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে থাকাকালে গত ২৮ জুলাই রাতে এক ভিডিও বার্তায় আন্দোলন প্রত্যাহারের যে ঘোষণা তাঁরা দিয়েছিলেন, তা স্বেচ্ছায় দেননি।

আজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক এ কথাগুলো বলেছেন। বেলা ১১টা ২২ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও নুসরাত তাবাসসুম গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠান। মিনিট দশেক পর যোগাযোগ করা হলে সারজিস আলম ও আবু বাকের বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে ডিবির হেফাজত থেকে ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁদের ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের দুটি গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। পরিবারের কাছে ফেরার পর আজ তাঁরা যৌথ বিবৃতি দিলেন। এ সময় তাঁরা বলেন, ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটক নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

‘ডিবি কার্যালয়ে আটক থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের বিবৃতি’ শীর্ষক এই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৬ জুলাই ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে ডিবি জোর করে তুলে মিন্টো রোডের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। নাহিদ ও আসিফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরদিন ২৭ জুলাই সারজিস ও হাসনাতকে সায়েন্স ল্যাব এলাকা থেকে জোর করে তুলে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৮ জুলাই ভোররাতে বাসা ভেঙে জোর করে নুসরাতকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মূলত আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই ১৯ জুলাই থেকে সমন্বয়কদের গুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় নিরাপত্তার নামে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে জোর করে আটকে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিবিপ্রধান নিরাপত্তার কথা বললেও তাঁদের আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যই হেফাজতে রাখা হয়েছিল। তাঁরা গুম, গ্রেপ্তার ও নির্যাতন থেকে নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। তাঁরা তাঁদের মতপ্রকাশের অধিকারের নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন। কিন্তু অসাংবিধানিক ও আইনবহির্ভূতভাবে তাঁদের ডিবি হেফাজতে আটকে রাখা হয়। প্রথমে নিরাপত্তার কথা বললেও পরে আদালতের কথা বলা হয়। আদালতের আদেশ ছাড়া নাকি তাঁদের ছাড়া যাবে না, এমনটা বলা হয়। যাঁরা নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে, তাদের হেফাজতে কেউই নিরাপদে থাকতে পারে না। সরকারের কাছে তাঁরা এই প্রহসনের নিরাপত্তা চান না। তাঁরা তাঁদের ভাই-বোনদের খুনের বিচার চান।

আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা-সংক্রান্ত ডিবি কার্যালয় থেকে প্রচারিত ছয় সমন্বয়কের ভিডিও বিবৃতিটি তাঁরা স্বেচ্ছায় দেননি বলে যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সিদ্ধান্ত ডিবি কার্যালয় থেকে আসতে পারে না। সারা দেশের সব সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে না। ডিবি কার্যালয়ে তাঁদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে ভিডিও করা হয়। তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। গণমাধ্যমে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ানো হয়। তাঁদের শিক্ষকেরা দেখা করতে এলে, দেখা করতে দেওয়া হয়নি। অন্যায়ভাবে সমন্বয়কদের আটক, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ৩০ জুলাই রাত থেকে সমন্বয়ক নাহিদ, আসিফ ও আবু বাকের ডিবি কার্যালয়ে আটক অবস্থায় অনশন শুরু করেন। এ খবর জানামাত্র সারজিস, হাসনাত ও নুসরাতও অনশন শুরু করেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অনশনের কথা পরিবার ও গণমাধ্যমের কাছ থেকে গোপন করা হয়। ৩২ ঘণ্টার বেশি সময় অনশনের পর ডিবিপ্রধান ছয় সমন্বয়ককে মুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন। তখন অনশন ভাঙা হয়। ১ আগস্ট দুপুর দেড়টায় পরিবারের জিম্মায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ডিবি কার্যালয়ে তাঁদের ও পরিবারের সঙ্গে নানা হয়রানি, নির্যাতন ও নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। তাঁরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই তাঁদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকার এখনো শিক্ষার্থীদের ওপর দমননীতি অব্যাহত রেখেছে। সারা দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটক নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে, তাঁরা যেন সরকারের মিথ্যা অপপ্রচার ও দমন–পীড়নকে তোয়াক্কা না করে রাজপথে নেমে আসে।

সূত্র. প্রথম আলো

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD