জামালপুর জেলার চরাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে প্রশান্তির হাসি। মরিচ চাষে শুধু চাষিরাই লাভবান হননি, বেশি দাম পাওয়ায় লাভবান হয়েছেন কৃষক-দিনমজুর-ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন উপজেলার চরগুলোর মধ্যে চর আদ্রা, জামিরা, ছাতারিয়া, মানিকপটল, আদারভিটা, কুলকান্দি, হাজিপুর, হাজরাবাড়ি, শিধুলী, রৌহা, বাটিকামারী, শামনাগর, হরিপুর, মল্লিকপুর, চান্দেরহাওড়া, টুপকার চর ও কাপাসটিয়াসহ জেলার ২ শতাধিক এলাকার প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জমিতে করা হয়েছে মরিচের আবাদ।
লাল-সবুজে ছয়লা মরিচের ক্ষেত। কেউ মরিচ ক্ষেত পরিচর্যা করছেন, কেউ মরিচ তুলছেন আবার কেউ বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় মরিচ চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছে এলাকার অনেক চাষি পরিবার। আবার যাদের জমি নেই, তারা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে মরিচ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। চলতি মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে ১০০ থেকে শুরু করে ২৫ /১/২৪ ইং ৪২/৫০ টাকা কেজি ক্রয় করতেছে পাইকার ও ব্যাপারিরা ।
বিঘাপ্রতি ১লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করবেন বলে একাধিক কৃষকরা জানান। বিভিন্ন বাজারগুলোতে চলতি দাম প্রতি মণ মরিচ ১৭০০/২০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
একাধিক মরিচ চাষিরা সাংবাদিক কে জানান, এ বছর আট বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি । প্রতি বিঘায় তার খরচ হয়েছে ২০থেকে ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা মরিচ ক্ষেত ১লাখ থেকে ১লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করার আশ্বাস দেন তিনি।
উপজেলার ঝাউগড়া গ্রামের কৃষক ফয়জুল বলেন আমি ১০ শতাংশ করেছি ১০হাজার খরচ হয়েছে,৩৪ হাজার টাকা বিক্রি৷ করেছি আরো ২০ হাজার বিক্রি করতে পারবো। দিনমজুর , খলিল জানান -আমি ১২০ টাকে থেকে বিক্রি শুরু করে এখন পর্যন্ত ১০শতাংশে ৭০ হাজার বিক্রি করেছি।
তফিল,আনোয়ার হোসেন, বলেন -ফলন বাম্পার হওয়ায় আমারা আমরা লাভবান। সুফি বেগম ও মুসলি, পারুল, তারা মরিচ ক্ষেতে কাজ করেন। তারা জানান, এবার মরিচের আবাদ ভালো হওয়ায় মালিক দাম বেশি পাচ্ছে। আমরাও মজুরির কাম কইরা সংসার চালাইতেছি।
কৃষকরা বলেন -সার ও কীটনাশকের দাম অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের গত বছরের তুলনায় এবার বেশি খরচ হয়েছে। সার সংকটের কারণে তাদেরকে ভোগান্তিও পোহাতে হয়েছে।
স্থানীয় পাইকার (ব্যাপারি) মুসা মিয়া ও মন্টু জানান, চলতি মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে মরিচ কিনেছি। প্রতি দিন ৫থেকে হাজার টাকা লাভবান হয় বলে জানান তিনি।
মেলান্দহ উপজেলা কৃষি সূএে জানাযায় -, চলতি মৌসুমে উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০০ হেক্টর বেশি জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে উচ্চ মূল্য থাকায় কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। আমরা প্রতিটি কৃষককে সার বীজসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করেছি। বেশি করে মরিচ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করায় ব্যাপক সফলতা এসেছে।
মরিচ খেতের যত্ন ও মরিচ সংগ্রহে চাষিদের ব্যস্ত সময় পার করতেও দেখা যায়। জামালপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূএে জানাযায় অনুকূল আবহাওয়ায় কৃষকরা এ বছর ভালো ফলন পাচ্ছেন। তবে মাঘের কনকনে শিতে ভয়ও পাচ্ছেন কৃষকরা।
এ ছাড়াও, যমুনা তীরবর্তী এলাকায় গত বন্যায় পলি জমায় তা মরিচের বাম্পার ফলনে সাহায্য করেছে। কৃষকদের দাবি, চাষাবাদের জন্য সরকারের উচিত স্বল্প বা বিনা সুদে ঋণ দেওয়া, যাতে আর্থিক সংকট ছাড়াই পণ্য উৎপাদন সম্ভব হয়।
Leave a Reply