প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানার মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো: সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন নিয়ে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রুল জারি করেন। একইসাথে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদনের শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতে বলেন, মামলার এফআইআরে মির্জা ফখরুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বা নির্দেশ দিয়েছেন এমন কিছু নেই। তিনি এই ঘটনার সাথে কোনোভাবে জড়িত নন। তিনি অসুস্থ এবং একজন বয়স্ক মানুষ।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর জামিন পেয়েছেন। একজন অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষকে জামিন দিতে পারেন। তিনি এ ঘটনার নির্দেশ দিয়েছেন বা আগে থেকে পারিকল্পনা করেছেন এ ধরণের কোনো এলিগেশন নেই।
ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম রাফায়েল বলেন, মির্জা ফখরুল দলের প্রধান। তিনি পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ডাকেন। দেশ-বিদেশ থেকে লাঠিসোটা নিয়ে আসে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সমাবেশে তিনি উপস্থিত থেকে নির্দেশনা দেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলেন।
আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সাথে ছিলেন আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, নিতাই রায় চৌধুরী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, ফজলুর রহমান, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, আবদুল জব্বার ভূইয়া, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো: আক্তারুজ্জামান, সগীর হোসেন লিওন, জাকির হোসেন ভূইয়া, মোরশেদ আল মামুন লিটন, শহিদুল ইসলাম সপু, মো: মিজানুর রহমান, মো: মাকসুদ উল্লাহ, আনিসুর রহমান রায়হান, এহসানুর রহমানসহ শতাধিক আইনজীবী।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম রাফেল।
আদেশের পর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টের ভ্যাকেশনের পূর্বেই এই রুল শুনানির জন্য আদালতের দৃষ্টিতে আনব।
তিনি বলেন, আশা করি রুল শুনানি শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম জামিন পাবেন।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা সময় নির্ধারণ করেন। একইদিন মির্জা ফখরুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন জামিন আবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেন।
এর আগে গত ২২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।
গত ২৯ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন। এরপর গত ২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফখরুলের পক্ষে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ। ওইদিনই আদালত শুনানির জন্য ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গত ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে রমনা থানায় পুলিশ মামলা করে। মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply