পুরোপুরি আশ্চর্য করে দেয়া খবর সামনে এসেছে! বনের পশুরা নাকি সিংহের চেয়েও মানুষকে নাকি বেশি ভয় পায়। এমন আবার হয় নাকি? বরং মানুষই তো বন্যপ্রাণীদের থেকে দূরে দূরে থাকে। হ্যাঁ, কোনো গাঁজাখুরি গল্প নয়। পুরোদস্তুর গবেষণা এই তথ্য প্রকাশ করেছে। গবেষণা বলছে, সিংহের গর্জনের চেয়েও মানুষের কণ্ঠস্বরে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বনের জন্তুরা। মানুষের গলা শুনে সিংহের গলার থেকেও বেশি আঁতকে ওঠে বনের স্তন্যপায়ী প্রাণীরা! দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কে করা এক গবেষণায় এমন দেখা গেছে।
ওই গবেষণাটির জন্যে বিজ্ঞানীরা ওই ন্যাশনাল পার্কে প্রাণীদের পানির উৎসের কাছে স্পিকার লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেখানে তারা স্থানীয় ভাষায় মানুষের সাধারণ কথোপকথনের রেকর্ডিং চালান। দেখা গেছে, ওই গলা শুনে, কাছাকাছিই মানুষ রয়েছে, এই আশঙ্কায় অন্তত ৯৫ শতাংশ প্রাণী অত্যন্ত ভীত হয়ে পড়ে এবং দ্রুত পালিয়ে যায়।
এবার উল্টা পরীক্ষাটাও করেন তারা। গর্জন করা সিংহের রেকর্ডিংও ওইভাবেই চালান। সেটা শুনে প্রাণীরা কিভাবে ‘রিয়্যাক্ট’ করছে, দেখেন তা-ও। তার পরে দুটির মধ্যে তুলনা করে তারা দেখেন, বনের রাজা সিংহের গমগমে ভয়াল কণ্ঠস্বরের চেয়ে মানুষের কণ্ঠস্বরেই তারা বেশি ভয় পাচ্ছে! এমনও দেখা গিয়েছে যে সিংহের আওয়াজ শুনে কিছু হাতি সেই শব্দের উৎসের দিকে এগিয়ে গেছে, অথচ, মানুষের আওয়াজ শুনে বেশ আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে। মোটকথা, বন্যপ্রাণীরা অন্য যেকোনো শিকারির চেয়ে মানুষকেই বেশি ভয় পায়।
তবে এই গবেষণার ফলাফলের অন্য একটা ব্যবহারও হবে। বন্যপ্রাণীদের দুর্বল প্রজাতিগুলোকে রক্ষা করার সম্ভাবনাও এর মধ্যে রয়েছে। মানুষের শব্দ যথাযথভাবে ব্যবহার করা গেলে সেটি শিকারি থেকে ওই প্রাণীদের রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। যেসব স্থানে শিকারিদের আনাগোনা বেশি, সেখান থেকে গন্ডারদের দূরে রাখা যায় কি না, তা-ও পরীক্ষা করে দেখা হবে।
যেসব মানুষ শিকারি তাদের জন্যই সামগ্রিকভাবে মানুষ জাতিকে ভয় পায় বন্যপশুরা। শিকারের জন্য ব্যবহৃত বন্দুক, শিকারে ব্যবহৃত শিকারি কুকুর এসবের জন্যই প্রাণীরা মানুষকে ভয় পায়।
সূত্র : জি নিউজ
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply