সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনে আহত করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
আহত শিক্ষার্থী সাফওয়ান আহমেদ (৮) উপজেলার ধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
২৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেত্রাঘাতের চিহ্নসহ ওই আহত ছাত্রের একটি ছবি ছাত্র সাফওয়ান আহমেদের পিতা তার ফেইবুক আইডিতে পোস্ট করে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেয়ার পর তা মুহুর্তেই ভাইরাল হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেসহ পুরো উপজেলা জুড়ে চলে আলোচনা আর সমালোচনার ঝড়।
জানাযায়, উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের ধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছায়েদুর রহমান ঐ শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতন করে আহত করেন। পরে আহত শিক্ষার্থীকে তার পরিবারের লোকজন ঐদিন দুপুরে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহত শিক্ষারর্থীর পিঠে বেশ কয়েকটি বেত্রাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
গত কয়েকদিন Md. Abu Siddik নামের একটি আইডিতে এক আবেগঘন ষ্ট্যাটাস “কলিজার টুকরা সন্তান যখন স্কুলে গিয়ে শিক্ষক কর্তৃক নির্যাতিত হয়, তাহলে তাদেরকে আর কার হাতে মানুষ করাবো? এরপর থেকে ওই স্ট্যাটাসে অসংখ্য মন্তব্য ও সমালোচনার ঝড় উঠে। স্ট্যাটাসটি ফেইবুকে দুইদিন থাকার পর শুক্রবার রাতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে স্ট্যাটাসটি রিমুভ করে দেন শিক্ষার্থী সাফওয়ান আহমেদদের বাবা।
অনান্য শিক্ষার্থীরা নাম না বলা শর্তে জানায়, ঐ শিক্ষক প্রায় সময় তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং বেশির ভাগ সময় তিনি বিদ্যালয়ে দেরী করে আসেন।
ছাত্রের বাবা মোঃ আবু ছিদ্দিক মুহিম বলেন, স্কুলের অন্য ছাত্ররা দুষ্টুমি করায় ওই ছাত্রদের সহ আমার ছেলেকে কোন কারণ ছাড়াই প্রধান শিক্ষক বেত্রাঘাত করে বেত্রাঘাত করে আহত করেছেন। পরে রাতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে আমার কাছে এসে এরকম ভুল আর হবে না মর্মে অঙ্গিকার করে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি মিমাংসা করেছেন।
আহত শিক্ষার্থীর জানায়, বুধবার (২৬ জুলাই) ওইদিন অন্য ছাত্ররা দুষ্টামি করেছে, কিন্তু আমি দুষ্টুমি না করলেও ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক (স্যার) ছায়েদুর রহমান আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত স্কুল প্রধান শিক্ষক ছায়েদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলফোনে কথা হলে তিনি প্রতিনিধিকে জানান, আমি সঠিক সময়েই স্কুলে আসি। তবে শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের বিষয়টি শিক্ষার্থীর পরিবারের লোকজনকে নিয়ে মিমাংসা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, প্রধান শিক্ষক ছায়েদুর রহমান কর্তৃক শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে আহত করার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিটমাট করে করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম সরকার জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন বা কোন প্রকার বেত্রাঘাত করা আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply