সুনামগঞ্জের শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাসের নেতৃত্বে বে-আইনী ভাবে ইউএনও অফিস ঘেরাও করার খাবর পাওয়া গেছে। একজন সরকারি শিক্ষক হয়ে এবং প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান কাজ চলমান সময়ে তিনি কি ভাবে একটি সরকারি অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন ; এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
জানা যায়, গত ১৫মার্চ সুনমগঞ্জের একটি অনিবন্ধিত সংগঠন ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ চলতি বছরে পাউবো কর্তৃক হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ/মেরামত কাজ তরান্বিত করার লক্ষ্যে শাল্লা ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। আর ওই সংগঠনের শাল্লা উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবে শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাস উক্ত কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন।
এখানেই শেষ নয়, সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাসের আপন ভাই প্রেমবাঁশী দাসের নামে ১২৮নং পিআইসিটি ভাগিয়ে নেন তিনি। এছাড়াও অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই সংগঠনের শাল্লা উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক নামধারী সাংবাদিক জয়ন্ত সেনের মাধ্যমে পাউবো’র বাঁধ নির্মাণ কাজের সাইনবোর্ড বিক্রয় কাজের সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছেন তিনি।
এবিষয়ে শাল্লার বিশিষ্ট সমাজ সেবক শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হাজী সঞ্জব আলী’র ছেলে মোঃ আব্দুল মন্নানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অধ্যাপক তরুন কান্তি দাস তো হলুদ। তিনি দেশের সকল সংগঠনের সভাপতি। এই উপজেলায় তো আর কোনো লোক নেই। তার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি কলেজ ফাঁকি দিয়ে কি ভাবে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাথে ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন, আমার বোধগম্য নয়। তিনি আরো বলেন, অধ্যাপক তরুন উপজেলাটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
শাল্লা সরকারি ডিগ্রি করেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ কোনো আন্দোলন কমিটির সাথে যুক্ত থাকার কোনো বিধান নেই। কলেজের শিক্ষক তরুন কান্তি দাস কর্তৃক শাল্লা ইউএনও অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাস সরকারী কর্মচারী, আইন মতে তিনি এ কাজ করতে পারেন না। এটা তিনি বে-আইনী করেছেন।
এব্যাপারে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু তালেবের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সরকারি কলেজে শ্রেণি পাঠদান কাজ চলাকালে শিক্ষক তরুন কান্তি দাস একটি আন্দোলন কমিটির সাথে যুক্ত হয়ে আমার অফিস ঘেরাও করেছে বলে আমি শুনেছি। তবে এসময় আমি মাঠে ছিলাম।
এবিষয়ে শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাসের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ যথাযথ ভাবে করার জন্য ও এলাকাবাসির স্বার্থে আমাদের হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসূচি হিসেবেই শাল্লা ইউএনও অফিস ঘেরাও করা হয়েছে। আপনি সরকারি কলেজের একজন শিক্ষক হয়ে কিভাবে এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন জানতে চাইলে, তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উপজেলার সচেতন বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা যায় সহযোগি অধ্যাপক তরুন কান্তি দাস উদীচী, বাংলাদেশ পূঁজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদ, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সহ বিভিন্ন কমিটির শাল্লা উপজেলা শাখার সভাপতি পদে আসিন রয়েছে এবং ওইসব পদ-পদবি ব্যবহার করেই তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরণের অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply