নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন। গেল মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তিনি বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব হিসেবে মাত্র তিন সপ্তাহ দায়িত্ব পালন শেষে চাকরি থেকে অবসরে গেলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার। বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার গত ১০ ডিসেম্বর এই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তবে যোগ দেন আরও কয়েক দিন পর। তিনি সদ্য সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। খন্দকার আনোয়ারুল অবসরোত্তর ছুটিতে গেছেন ১৫ ডিসেম্বর থেকে।মাহবুব হোসেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর। চাকরি জীবনে বিভিন্ন সময়ে তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন। বলেন, প্রধানমন্ত্রী বুঝে শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে শেষ দিন অফিসে প্রবেশের পথে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। কবির বিন আনোয়ার বলেন, আজ আমার সরকারি চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এটি একটি রুটিন মাফিক পদ্ধতি। এক্সটেনশন (মেয়াদ বৃদ্ধি) হওয়া একটা প্রিভিলাইজের বিষয়। এখন যা হয়েছে এটাইতো স্বাভাবিক পদ্ধতি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারকে সরকারি চাকরি আইনের ধারা ৪৩(১) (ক) অনুযায়ী ৩ জানুয়ারি থেকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর প্রদান করা হলো। তার অনুকূলে ১৮ (আঠারো) মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ লাম্পগ্র্যান্টসহ ০৪-০১-২০২৩ থেকে ০৩-০১-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত এক বছরের অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) মঞ্জুর করা হলো। প্রসঙ্গত গত বছরের ১১ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে কবির বিন আনোয়ারকে নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর আগে জনাব কবির বিন আনোয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সহ একাধিক মন্ত্রনালয়ে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতারও পরিচয় দিয়েছেন। এটাই স্বাভাবিক। নিয়ম মাফিক সচিবরা আসবেন যাবেন। তার পরেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কবির বিন আনোয়ারের অবসরে যাযার পর পরই দেশে বিদেশে অনেকে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্চূক যুক্তরাজ্য প্রবাসী একজন প্রভাবশালী বাঙ্গালী ব্যবসায়ী বলেছন ক্ষমতা কারো চিরকাল থাকে না। তিনি যা করে গেছেন সঠিক তদন্ত হলে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে। এই ব্যবসায়ীসহ আরো কয়েকজন প্রবাসী বাঙ্গালী তার সম্পদের হিসাব বিশেষ করে তার আত্মীয় স্বজন, স্ত্রী, ভায়রাভাই, ভাই এবং শালক সহ নিকতাত্মীদের ব্যাংক হিসেব এবং আয় ব্যায়ের সামঞ্জস্য খতিয়ে দেখার দাবী তুলেছেন। যুক্তরাজ্য প্রবাসী একজন হেফাজত ইসলাম নেতা বলেন তিনি হেফাজতের জন্যে অনেক ভাল কাজ করে গেছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশে উগ্রবাদকে ছড়িয়ে দিতে হেফাজতে ইসলাম সহ অন্যান্য উগ্রবাদীদের ফান্ড সর্বরাহ কারী ভারতীয় বংশদ্বোত ব্রিটিশ নাগরিক ঈমাম রশিদ আহমদ কাসিমের চ্যারিটি সংগঠন ‘‘ আল খাইর ফাউন্ডেশনক ‘’ বাংলাদেশে কাজ করার সুযোগ এবংচ্যারিটি নিবন্ধন করার সুযোগ করে দিয়ে গেছেন । শুধু এমনটি নয় নিজের প্রভাব খাটিয়ে কবির বিন আনোয়ার আরো বেশ কিছু কাজ করে গেছেন যা দেশ এবং জাতির জন্য শুভকর নয়। আমার বিশ্বাস সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সব কিছু বেরিয়ে আসবে। এখানে উল্লেখ্য যে পাকিস্তানে লস্করী তৈয়বা, জয়সী মোহাম্মদ ও তেহরিকি তালেবান সহ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনকে ফান্ড সর্বরাহ করার অভিযোগে পাকিস্তান সরকার আল খাইর চ্যারিটির কার্জক্রম বন্ধ করে দেয়। ভারতে ‘‘আল খাইর ফাউন্ডেশনকে আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশে এই সংগঠনটিকে কাজ করার সুযোগ করে দেন কবির বিন আনোয়ার।
ইষ্টলন্ডনের মন্টিফিউরী সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আলখাইর ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার এবং চেয়ারম্যান ঈমাম রশিদ আহমদ কাসিম সাংবাদিকদের এক প্রশ্মের জবাবে বলেছেন বাংলাদেশের মানুষ যাতে স্যাকুলারিজমের দিকে ধাবিত না হয় সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে তিনি বাংলাদেশে কাজ করছেন। চারটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সংবিধান তা হলো সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ। তার পরেও আমাদের সংবিধান বিরোধী কাজ করা এই সংগঠনটিকে বাংলাদেশে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েগেছেন জনাব কবির বিন আনোয়ার। বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলামের সকল কাজকর্ম এবং স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীর অনুষ্টানে বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে কেন্দ্র করে উগ্রবাদী মামুনুল হকের আন্দোলনের নেপথ্যে কারিগর এই আল খাইর ফাউন্ডেশন। আসছে নির্বাচনকে সামনে রেখে তালেবানপন্থিদের মাঠে নামাতে কাজ করছে এই আল খাইর ফাউন্ডেশন।
আরো জানা গেছে গেল বৃহস্প্রতিবার বিয়াম ভবনে বিসিএস প্রশাসন এ্যাসোসিয়েশনের সভায় কেবিনেট সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং মূখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিয়ম হয়, সভায় কে সভাপতিত্ব করবেন এবং কার লোক স্থানপাবে এসব বিষয় নিয়ে। এক পর্যায়ে কেবিনেট সচিব কবির বিন আনোয়ার একজনকে তাপ্পড় মারতে উদ্যত হলে সিনিয়র ব্যাচের একজন অতিরিক্ত সচিব দাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন এবং বলেন আপনারা কি মামামরি করবেন না দেশের খবর রাখবেন। আমাদের বিশ্বাস দুর্নিতি দমন কমিশন সহ যথাযত কর্তৃপক্ষ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেবেন।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply