জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে সরকারের আতে ঘাঁ লেগেছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এই সরকার পরাজয়ের ভয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায় না। ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকে সরকারকে আমরা বিচলিত দেখতে পাচ্ছি।
শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ বলেন, আমাদেরকে ২৩ অক্টোবর সিলেটে জনসভার জন্য অনুমতি দেয়া হয়নি। আমরা বলেছি হলের মধ্যে করতে দেন। সেটা এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। এতেই প্রমাণ করে সরকারের জনপ্রিয়তা কত নিচে নেমে গেছে। তাদের যে জনপ্রিয়তা নাই, তাদের পেছনে যে মানুষ নাই এটাই তারা বার বার প্রমাণ করছে এসব কাজ করে। তাদের যদি আত্মবিশ্বাস থাকতো, তারা যদি মনে করতেন জনগণ তাদের সঙ্গে আছেন তাহলে মানা করতে পারতেন না। আপনারা রোড মার্চ করতে পারলে আমরা কেনো পারবো না? আপনারা সভা করতে অনুমতি লাগে না, আমাদের কেনো অনুমতি লাগবে? আমরা কী বাংলাদেশের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক? আজকে সেজন্য এই বাঁধ ভাঙতে হবে। সময় কম অল্প সময়ের মধ্যেই সরকারের এই বাঁধ ভাঙতে হবে।
মওদুদ আহমেদ আরো বলেন, বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিয়ে তারা এটাই প্রমাণ করেছে এই ফ্রন্টকে তারা ভয় পান, জাতীয় ঐক্যকে ভয় পান, দেশের মানুষকে ভয় পান। এই ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ সরকারের পরাজয় হবে। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ আজকে যদি গ্রাম-গঞ্জে যদি যান দেখবেন তারা একটা কথাই বলেই ঐক্য হয়ে গেছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনই সঙ্কট উত্তরণের একমাত্র পথ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মুসলিম লীগের মহাসচিব জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, দেশে আগামীতে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, বর্তমান মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রীও নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে না। দেখবেন তাই হবে। তার ভয়েই তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায় না। আর মাত্র তিন মাসও নাই। কিন্তু সরকারের আচরণ দেখে বুঝা যায় যে, তারা কতটুকু ভীত। নির্বাচনের কোনো পরিবেশ তারা রাখছে না। এককভাবে তারা নির্বাচন করার লক্ষ্য হিসেবেই তারা কাজ করছেন।
দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ হাজারের অধিক ‘গায়েবী’ মামলা দায়েরের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, সাড়ে তিন লাখ নেতা-কর্মীদের আসামী করা হয়েছে ওইসব গায়েবী ও ভুতড়ে মামলায়। এটা কী নির্বাচনের পরিবেশ ঠিক করার জন্য না নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্ট করার জন্য করা হয়েছে? দেশের মানুষ এটা বুঝে সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না।
তিনি বলেন, আমাদেরকে মাঠে নামতে হবে। আন্দোলন করে সরকারকে বাধ্য করতে হবে সংলাপে আসতে, সমঝোতায় আসতে। দেশের মানুষ যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, বিনা ভয়ে যাতে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে তার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
গণমাধ্যম ও মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতেই সরকার নির্বাচনের আগে দুইটি নির্বতনমূলক আইন করেছে বলে অভিযোগ করে মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার নির্বাচনের আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সম্প্রচার আইন- এই দুইটি আইন করেছেন। কেনো এতো বছর করেন নাই? এখন কেনো করছেন? উদ্দেশ্য গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আমাদেরকে আতঙ্কিত করেছে। এই আইনের ধারাগুলো ভয়ংকর, এই আইনে সীমাহীন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে পুলিশকে। এখন আবার করা হয়েছে সম্প্রচার নীতি করেছেন সেটা আরো মারাত্মক রকমের ড্র্যাকুনিয়ান আইন। এটা অসম্ভব ধরনের নিবর্তনমূলক আইন। এই দুইটি আইন করা হয়েছে নির্বাচনে আগে সরকারের যাতে কেনো সমালোচনা করতে না পারে। শুধু সরকারের উন্নয়ন গান যাতে গাইতে পারেন সেজন্য এই নীতিমালা করা হয়েছে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply