অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে হলে নতুন নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। ভোটাধিকার বিষয়ে বর্তমানে জনগণের কোন আস্থা নেই। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের প্রতিও মানুষের কোন আস্থা নেই। এখন ভোটকেন্দ্রে কেহই ভোট দিতে যায় না। অনেক সময় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় প্রার্থী নির্বাচিত হয়। এর অর্থ হচ্ছে জনগণ বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিকে সম্পূর্ণভাবে বয়কট করেছে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আয়োজিত স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে ৯ জুন ২০২২ সকালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে মতবিনিময়কালে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC’র সেক্রেটারী জেনারেল ও বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার এ কথা বলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবীবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনারগণ যথাক্রমেঃ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আহসান হাবীব খান (অবঃ), বেগম রাশেদা সুলতানা, মোঃ আলমগীর, মোঃ আনিছুর রহমান এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ—জানিপপ চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্রতী’র নির্বাহী পরিচালক শারমিন আক্তার প্রমুখ।
BHRC’র সেক্রেটারী জেনারেল বলেন, ভোটাধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকবে না বা ভোটাধিকার থাকবে না এটা মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হলে পর্যায়ক্রমে ইবিএম ব্যবস্থা চালু করতে হবে। আকস্মিকভাবে ইভিএম প্রথা ভোটারদের মধ্যে অনীহা সৃষ্টি করছে। মতবিনিময় সভায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার লক্ষ্যে বিএইচআরসি নিম্নউল্লেখিত সুপারিশমালা উপস্থাপন করেঃ
১। নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিগণিত করতে হবে এবং নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
২। প্রতিটি জেলার রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা থাকতে হবে। জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব প্রদান করে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
৩। জাতীয় নির্বাচন ১ দিনের পরিবর্তে কমপক্ষে ১ মাসে ঘূর্ণায়মান নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটাধিকার নিশ্চিবত করা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
৪। স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে বিশেষ করে ইউপি নির্বাচনে কোন দলীয় মনোনয়ন প্রদান করা যাবে না। দলীয় মনোনয়নের কারণে দেশের সর্বত্র গ্রামগঞ্জে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ইউপি নির্বাচন অরাজনৈতিক নির্বাচন হিসেবে পুনরায় পরিগণিত করতে হবে।
৪। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৫। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে কমপক্ষে ১ দিনের প্রশিক্ষণ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
৬। নির্বাচন দিবসের কমপক্ষে ১ সপ্তাহ পূর্ব থেকে পর্যবেক্ষক পরিচয়পত্র প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
৭। নির্বাচন পূর্ব, নির্বাচন দিবস এবং নির্বাচন পরবর্তী পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply