বর্ণবাদকে পরাস্থ করে ব্রিটেনে বাঙ্গালীর বসতি স্থাপনের ইতিহাস নিয়ে ব্রিকলেন ১৯৭৮: ঘুড়ে দাড়ানোর সময় শিরোনামে ৯জুন লন্ডনে শুরু হচ্ছে চিত্র প্রদর্শনী। ১৯৭৮ সালে ইষ্টলন্ডনে বর্ণবাদীদের হাতে নিহত ২৪ বছরের বাঙ্গালী যুবক আলতাব আলী হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ, ন্যায়বিচার ও সকলের সমঅধিকার প্রতিষ্টার দাবীতে সেসময়কার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের উপর ধারনকৃত আলোকচিত্র ও সর্টফিল্ম প্রদর্শনীতে ফোর কর্ণাস নতুন করে প্রদর্শনের জন্য নথিভূক্ত করেছে।
ব্রিকলেন ১৯৭৮ : ঘুরে দাড়ানোর সময় নামে সেসময়কার কঠিণ সময়ের ঘটনাবলি অবলম্বনে ও তখনকার সময়য়ের অ্যাক্টিভিস্টদের মৌখিক বিবরণ পল ট্রেভারের সত্তরটি চিত্রকে প্রথমবারের মতো একত্রিত করে। এটি বাঙালি কর্মীদের একটি প্রজন্মের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে যাদের কর্মগুলি যুক্তরাজ্যে সামাজিক ন্যায়বিচারের সংগ্রামকে রূপ দিতে সাহায্য করেছে৷ এটি হল একটি প্রধান হেরিটেজ প্রকল্পের সমাপ্তি যার নেতৃত্বে ফোর কর্নারস এবং স্বাধীনতা ট্রাস্ট ও নিবেদিত স্বেচ্ছাসেবক দলের সাথে, এবং যারা এই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলির সাথে জড়িত অনেক লোকের সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হয়েছে।
স্বাধীনতা ট্রাস্টের চেয়ার জুলি বেগম বলেন, “লন্ডনের ইস্ট এন্ডে বাঙালি সম্প্রদায় যে বর্ণবাদী সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছিল তা স্মরণ করতে এবং বর্ণবাদের কালথাবাকে পরাজিত করতে সকল সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরক্ষা ও একাত্মতা উদযাপন করতে আলতাব আলী দিবস পালন করা আমাদের সকলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
সেসময়কার আলোকচিত্রকার পল ট্রেভার বলেন : “ অনেকেই মনে করেন একটি ফটো হাজার শব্দের চেয়েও শক্তিশালী । কিন্তু কখনও কখনও, এই ক্ষেত্রে, মুখের কথা খুবই অপরিহার্য। এই প্রকল্পটি সেই ঐতিহাসিক আলোকচিত্রে যারা ইতিহাস তৈরি করেছে তাদের অনেকের মৌখিক স্মৃতিচারন সহ তুলে ধরার একটি সুযোগ করেছে।
কার্লা মিচেল, ফোর কর্নারের আর্টিকষ্টিক ডেভল্যপমেন্ট পরিচালক বলেন: “এই ইতিহাস আজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, বর্ণবাদী আক্রমণ এবং সহিংসতা শিরোনাম যতার্থ হয়েছে। ন্যাশাল লটারি ফান্ডকে ধন্যবাদ, তাদের সাহায্যাই আমরা বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি ঐতিহাসিক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে পারছি। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি এই প্রজেক্টটি বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের ব্যাপক দর্শকদের জন্য সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলা হয়েছে। ব্রিক লেন ১৯৭৮ : ঘুরে দাড়ানোর সময়প্রদর্শনী উদ্ভোধন করা হবে বৃহস্প্রতিবার ৯জুন বিকেল ৬-৩০ থেকে ৮-৩০ মিনিট। ১০ জুন থেকে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, সকলের জন্যে প্রবেশাধিকার ফ্রি। খোলার সময় সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা । মঙ্গল থেকে শনিবার, বৃহস্প্রতিবার রাত ৮টা। ফোর কর্নাস গ্যালারী ১২১ রমান রোড, বেথনালগ্রীণ , লন্ডন লন্ডন-ই২ ওকিউএন। নিকটবর্তি আন্ডার গ্রাউড ষ্টেশন বেথনাল গ্রীণ-সেন্ট্রেল লাইন।
এই প্রদর্শনীতে পরিচালক ও আয়োজকদের ও বক্তব্য তুলে ধরা হবে, স্বাধীনতা ট্রাষ্ট, পল ট্রেভার ও আলতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিদের বিস্তারিত জানতে হলেঃ https://www.fourcornersfilm.co.uk/whats-on/brick-lane-1978-the-turning-point
ব্রিকলেন ১৯৭৮ঃ ঘুরে দাঁড়ানোর সময় ন্যাশনাল লটারি হেরিটেজ ফান্ডের অনুদানে, এবং পল ট্রেভার, ফোর কর্নাস ও স্বাধীনতা ট্রাষ্ট এর যৌথ প্রযোজনা ও অংশিদারিত্বে একটি প্রকল্প। স্বেচ্ছাসেবক এবং সেসময়কার বর্নবাদ বিরোদী এক্টিভিষ্ট যারা প্রত্যক্ষ ভাবে আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং যারা সেসময় বর্ণবাদ প্রত্যক্ষ করেছেন তাদের অনেকের মৌখিক সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে সামাজিক ইতিহাসের রেকর্ড তৈরি করা হয়েছে। প্রদর্শনীটি একটি ট্যুরিং শো হিসাবে পাওয়া যাবে, যা বিশপসগেট ইনস্টিটিউট আর্কাইভস-এ মৌখিক ইতিহাস সাক্ষা্ৎকার, শর্ট ফিল্ম এবং প্রকল্প স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা তৈরি পডকাস্ট সহ করা হবে৷
ঐতিহাসিক ঘটনার নেপথ্যেঃ
১৯৭৮ সালের শুরুর দিকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা মারগারেট থ্যাচার ‘ ‘‘ওয়ার্ড ইন এ্যকশন‘‘ নামক একটি টেলিভিশন পোগ্রামে বলেছিলেন ব্রিটিশদের একটি অংশ মনে করে ব্রিটেনে আগত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অভিবাসীদের কারনে তাদের কৃষ্টি ক্যালচার হুমকীর মুখে পড়বে। এই মন্তব্যটি টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়ার পর ব্রিটেনের বর্ণবাদী ন্যাশনাল ফ্রন্ট ও অন্যান্য বর্ণবাদিরা সমগ্র ব্রিটেন তথা ইষ্টলন্ডনের ব্রিকলেন ও তার আশপাশ এলাকায় বাঙ্গালী অভিবাসীদের উপর ক্রমাগতভাবে শারিরিক আক্রমণ ও বর্ণবাদী আচরন চালাতে থাকে। বিশেষ করে স্কীনহেডদের আক্রমন বাড়তে থাকে । এসময় সমগ্র বিটেনে চাকুরী ও আবাসিক সমস্যা ছিল প্রকট। তার আগে মাইগ্রেন্ট ইহুদী সম্প্রদায়কেও একই সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়েছে। ন্যাশনাল ফন্টের মুখপত্র ‘‘ পিস এট ব্রিকলেন, মাইগ্রেন্ট সম্প্রদায়কে নিয়ে উসকানী দেয়, বিশেষ করে রোববার সকালে স্কিনহেডরা বাঙ্গালীদের উপর আক্রমন চালায়। সেসময়কার বাঙ্গালীরা কেউ একা রাস্তায় বের হতেননা। অতি-ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলির লক্ষ্যবস্তু, যারা উচ্চ বেকারত্ব এবং খারাপ আবাসনের জন্য তাদের ভুলভাবে দোষারোপ করেছিল।
ইষ্টএন্ড বিশেষ করে পূর্ব লন্ডন সকল সময়ই মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির জন্য চিল উম্মুক্ত।
১৭ শতকের ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ফরাসী হুগুয়েনটস থেকে শুরু করে ১৯ শতকের আইরিশ দরিদ্র এবং রাশিয়া ও পোল্যান্ডে কস্যাক পোগ্রোম থেকে পালিয়ে আসা ইহুদিদের জন্য পূর্ব লন্ডন সর্বদাই অভিবাসীদের আশ্রয়স্থল।
এটির বর্ণবাদী সহিংসতা এবং প্রতিরোধের সমান দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ওয়াজওয়াল মজলির নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইউনিয়ন অফ ফ্যাসিস্ট ১৯৩৬ সালে ডকের দিকে পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বিখ্যাত ‘কেবল স্ট্রিটের যুদ্ধে’ ইহুদি, আইরিশ ডকার এবং কমিউনিস্টদের দ্বারা বাধা দেওয়া হয়েছিল। যা ভেটল অব ক্যালষ্টীট নামে পরিচিত।
১৯৭৮ সালের ৪টা মে গারমেন্টস শ্রমিক আলতাব আলীর হত্যাকান্ডের সয়য় স্থানীয় নির্বাচন যেখানে ৪১ জন ন্যাশনাল ফ্রন্ট প্রার্থী দাঁড়িয়েছিল, বাঙালি সম্প্রদায়ের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট চিহ্নিত করেছিল। যে দিন আলতাব আলী বর্ণবাদীদের হাতে খুন হন। ঐদিন ছিল স্থায়ীয় নির্বাচন। এই ঘটনার পর বাঙ্গালী সহ সকল মাইগ্রেন্ট কমিউনিটির মানুষ ঐক্যব্দ হয়, গড়ে তোলে প্রতিরোধ। ১৪মে আলতাব আলীর কফিন নিয়ে সাতহাজার মানুষ হাইড পার্ক হয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গিয়ে স্মারক লিপি প্রদান করে দশ নং ডাইনিং ষ্ট্রীটে। এবছরই ব্রিটেনের বাঙ্গালী যুবকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে উগ্রবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এন্টি রেসিষ্ট মৃভমেন্টের কারনে ইষ্টলন্ডন থেকে বর্নবাদ বিশেষ করে ন্যাশনফন্ট , পাররাইট পিচু হটতে বাধ্য হয়। এন্টিরেসিন্টদের প্রতিরোধে সমর্থন করে তাদের সাহায়্যে এগিয়ে আসে গ্রাসরোট ও মাল্টিক্যালচারাল মুভমেন্ট রক এগেইষ্ট দি রেসিজম , এই সংগঠনটি একটি অপেন কনসার্ট এর আয়োজন করে ভিক্টোরিয়া পার্কে বাইদি ক্লাশ শিরোনাম্ স্টীট পলস এবং টম রবিনসন এতে অংশ নেন।
স্থানীয় ফটোগ্রাফার পল ট্রেভার ৪০০ টিরও বেশি ফটোগ্রাফে বর্নবাদীদের নাটকীয় ঘটনাগুলি তুলে ধরেছেন তার আলোক চিত্রে। যার মধ্যে অনেকগুলি এই প্রদর্শনীতে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হবে৷ তার ছবিতে ফুটে উঠেছে কীভাবে স্থানীয় বাঙালি সম্প্রদায় সেসময় ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেছেন।
জাতিগত নির্যাতন সহ্য করেছিল এবং কীভাবে তারা সহিংসতা ও প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের অবসান ঘটাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ট্রেভার হাফ মুন ফটোগ্রাফি ওয়ার্কশপ সমষ্টির সদস্যও ছিলেন, যার কাজ সামাজিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ফটোগ্রাফির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। তার কিছু ছবি তাদের ক্যামেরাওয়ার্ক ম্যাগাজিনে কভার করা হয়েছে।
https://www.fourcornersarchive.org/archive/view/0000111
https://www.forcornersarchive.org/archive/view/0001739
১৯৭৮ সালের শেষের দিকে, ন্যাশনাল ফ্রন্টকে ব্রিক লেনের কাছে তার সদর দপ্তর ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল, যদিও পূর্ব লন্ডনে ১৯৯০-এর দশকে অতি-ডানপন্থী বর্ণবাদী হামলা অব্যাহত ছিল। আজও আলতাব আলী নামটি লন্ডনের পূর্ব প্রান্তে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এবং মানবাধিকারের জন্য সংগ্রামের সাথে যুক্ত রয়েছে।
ফোরকর্ণাস ব্রিকলেন 1১৯৭৮: ঘুরে দাড়ানো একটি চতুষকোণ প্রদর্শনী। ফিল্ম এবং ফটোগ্রাফিক শিল্পের একটি কেন্দ্র, প্রায় ৫০ বছর ধরে পূর্ব লন্ডনে অবস্থিত। তাদের প্রদর্শনীগুলি সামাজিক ইতিহাস এবং সম্প্রদায়ের সক্রিয়তা অন্বেষণ করে এবং প্রান্তিক থেকে গল্পগুলি ভাগ করে তুলে ধরে যা অন্য কোথাও বলা যায় না।
ফটোগ্রাফার পল ট্রেভর হাফ মুন ফটোগ্রাফি ওয়ার্কশপ এবং এর ম্যাগাজিন ক্যামেরাওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। http://paultrevor.com
স্বাধীনতা ট্রাস্ট
স্বাধীনতা ট্রাস্ট হল লন্ডন ভিত্তিক একটি ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি কমিউনিটি গ্রুপ যা তরুণদের মধ্যে বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার জন্য কাজ করে। সংগঠনটি নভেম্বর ২০০০ সাল থেকে কাজ করছে, স্কুল, কলেজ, যুব ক্লাব এবং কমিউনিটি সেন্টারে তরুণ বাঙালিদের কর্মশালা, প্রদর্শনী এবং শিক্ষামূলক সাহিত্য সরবরাহ করে এবং কাজ করে আসছে।
প্রকল্পটি আলতাব আলী ফাউন্ডেশন এবং বিশপসগেট ইনস্টিটিউট আর্কাইভের সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় লটারি হেরিটেজ ফান্ড সম্পর্কে ন্যাশনাল লটারি দ্বারা অনুদানকৃত অর্থ ব্যবহার করে, বর্তমান এবং ভবিষ্যতে মানুষ এবং সম্প্রদায়ের জন্য ইতিবাচক এবং দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন তৈরি করতে যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যকে অনুপ্রাণিত করে, নেতৃত্ব দেয় এবং কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করে।
যদিও ব্রিটেনের বাঙালীদের আগমন ঘটে আজ থেকে আড়াইশ বছর আগে। কারো কারো মতে তারও আগে । ইতিহাসবিদদের অনেকেই মনে করে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পেনী ভারতে যাবার পর থেকেই বঙ্গালী সহ ভারতীদের ব্রিটেনে আগম শুরু হয়। তবে তা সহজ ছিলনা। প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হাজার হাজার বাঙ্গালী ব্রিটিশদের হয়ে যুদ্ধ করেছে, বহু জায়গায় বিশেষ করে টাওয়ারহিল মেমোরিয়ালে বিশ্বযুদ্ধে বাঙ্গালীদের ত্যাগের কথা নাম সহ খুঁজে পাওয়া যায়। বর্তমানে ব্রিটেনে দশ লক্ষাধিক বাঙ্গালীর বসবাস। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রয়েছে বাঙালীদের প্রতিনিধিত্ব, সমগ্র ব্রিটেন থেকে এবছরও প্রায় চার শতাধিক বাঙ্গালী কাউন্সিলার নির্বাচিত হয়েছেন।
অফিস আদালত সহ মেইনষ্টীমে বাঙ্গালীদের অবস্থান। শুধু তাই নয় ব্রিটেনের বহুজাতিক সমাজে আমাদের ভাষা সংস্কৃতিরও পরিচিতি ঘটেছে। সমগ্র ব্রিটেনে তৈরী করা হয়েছে অসংখ্য শহীদ মিনার। রাস্থায় ইংরেজীর পাশাপপাশি বাংলা লিখা শোভা পাচ্ছে। ভারত ও বাংলাদেশের পরে রাজধানী লন্ডন শহরকে বলা হয় তৃতীয় বাংলা। আর এটি সম্ভব হয়েছে বাঙ্গালীদের ত্যাগের বিনিময়ে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply