1. admin@wordpress.com : Adminroot :
  2. sm.khakon@gmail.com : bkantho :
পৃথীবির ষষ্ট মেগাসিটি সাজানো,গোছানো সিঙ্গাপুর ভ্রমন ! - বাংলা কণ্ঠ নিউজ
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫১ অপরাহ্ন

পৃথীবির ষষ্ট মেগাসিটি সাজানো,গোছানো সিঙ্গাপুর ভ্রমন !

উত্তম কুমার পাল হিমেল, সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে
  • শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৪৪ বার পড়া হয়েছে
পৃথীবির ষষ্ট মেগাসিটি সাজানো,গোছানো সিঙ্গাপুর ভ্রমন !
ভ্রমনপ্রিয় মানুষদের পছন্দের তালিকায় পৃথিবীর ৬ মেঘাসিটির মধ্যে সিংগাপুর একটি। যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য,কানাডার পরেই এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও সার্বিক উন্নতির দিক থেকে প্রথম কাতারে আছে সিঙ্গাপুর। বিশ্বের অন্যতম  পরিচ্ছন্ন শহর হিসাবে সিংগাপুরের স্থান অন্যতম। মালয়েশিয়ার   কুয়ালালামপুর থেকে সিঙ্গাপুর বাসে পাঁচ ঘণ্টার পথ।
আর আকাশ পথে যেতে লাগে ৫৫ মিনিট। এতো কম দূরত্বের মধ্যে দু’টি দেশের  আবহাওয়ায়ও তেমন তফাৎ নেই।  রাতের ফ্লাইটে ঢাকা থেকে আমরা রওনা হলাম। নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি উত্তম কুমার পাল হিমেলের নের্তৃত্ব এবং ঢাকা প্রিমিয়ার কনসালটেন্ট ট্যাভেলের সত্ত্বাধিকারী অংশু বাবুর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সফরের অন্য সদস্যরা হলেন,স্বপন,সলিল,মিঠ,নিরুপম। মাত্র ৬ দিনের খুব কম সময়ের ভ্রমণ। গন্তব্য সিংগাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর।চাঙ্গি বিমানবন্দরকে বলা হয় পৃথিবীর দ্বিতীয় সেরা বিমানবন্দর।
সুবিশাল তিনটি টার্মিনাল রয়েছে এখানে। একটি টার্মিনাল থেকে অন্যটিতে যেতে ব্যবহার করতে হয় টার্মিনাল ট্রেন। কিছুক্ষণ পর পর বিমানবন্দর কর্মকর্তারা আপনাকে দিক নির্দেশনায় সাহায্য করবেন। প্রতিটি টার্মিনালের একেকটি বিশাল শপিং মলের সমান।সিঙ্গাপুর পুরো শহরটাই এমন পরিকল্পিত যে, নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। ছোট শহরজুড়ে রয়েছে নিরবিচ্ছিন্ন পাতাল রেল। আর রাস্তাঘাট এতোটাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন যে, দেখে মনে হবে মাত্র কয়েকদিন আগেই নির্মাণ করা হয়েছে।সিঙ্গাপুরের প্রধান ভাষা ইংরেজি।
পাশাপাশি চীনা, মালয় ও তামিল ভাষারও প্রচলন আছে। সিঙ্গাপুরের অধিবাসীদের বেশির ভাগই চীনা বংশোদ্ভূত। এরপর রয়েছে মালয় ও ভারতীয় তামিল বংশোদ্ভূত। প্রবাসীদের সংখ্যাও উল্লেখ করার মতো।নিয়ম-শৃঙ্খলার দিক থেকে দেশটির তুলনা হয় না। কেউ কেউ মজা করে সিঙ্গাপুরকে ‘ফাইন সিটি’ বলে থাকেন। কারণ নিয়ম ভঙ্গ করলেই সিঙ্গাপুরে আপনাকে ফাইন (জরিমানা) গুনতে হতে পারে।শহর ঘুরতে ঘুরতে দেখা হলো প্রবাসী বাংলাদেশের বি বাড়িয়ার মোঃ জাহাংগীর মিয়ার সঙ্গে। গত ৭ বছর ধরে তিনি আছেন এই দেশে। সিংগাপুরের সিটিজেনশীপ মহিলাকে বিয়ে করে নাগরিত্ব লাভ করে নামকরা বাংগালী খাবার হোটেল ঢাকা হোটেলের পার্টনারশিপ ব্যবসায়ী  হাসিমাখা মুখ। পরিচয়ের পর বললেন, চলেন বসে গল্প হবে দেশি ভায়েরা।
আমি তার সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতার ব্যাপারেই আগ্রহী শুনে বলতে লাগলেন, সিঙ্গাপুর যে খুব কম সময়ে চট করে উন্নতি করেছে এমনটা কিন্তু নয়। যেদিন তারা মালয় থেকে আলাদা হয়ে গেলো তারপর থেকেই দেশ গড়ার পরিকল্পনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে তারা। এ দেশের নিয়মকানুন অনেক স্বচ্ছ। বিভিন্ন গোত্রের মানুষ থাকলেও প্রতিটি নাগরিককে সমান চোখে দেখা হয়। কোনো কাজে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই। এখানে বর্ণবৈষম্যকে বড় অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। কারো প্রতি বৈষম্য মানা হয় না।
এখানকার রাস্তাঘাট, দোকান, বাড়িগুলো দেখলে মনে হয়, কিছুক্ষণ আগে রং করা হয়েছে।  সিঙ্গাপুরিয়ানদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ওরা অনেক মার্জিত ও সৌখিন। সারা মাসে হয়তো একটা শার্ট পড়বে। তবে সেটা অবশ্যই হতে হবে নামি ব্র্যান্ডের।এখানে বর্তমানে বাংলাদেশি কমিউনিটি ভালো অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে কনষ্টাকশন কোম্পানিতে কর্মরত মৌলভীবাজার কুলাউড়ার পরিতোষ বাবু  বলেন, একটি পরিচ্ছন্ন দেশ সিংগাপুরে ১৪ বছর যাবত বসবাস করছি।
অনেক বাংলাদেশি পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট হয়েছেন সিঙ্গাপুরে। তিনটি বাংলা স্কুলও রয়েছে। পাঠ্যসূচিতে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি বাংলা বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। জীবনযাপনের খরচ মালয়েশিয়ার তুলনায় এখানে কিছুটা বেশি। বর্তমানে মালয়েশিয়ার মুদ্রামান কমে যাওয়ায় সিঙ্গাপুর ডলারের মান রিংগিতের তিন গুনে পৌঁছেছে।  এটি আমাদের প্রথম সিঙ্গাপুর ভ্রমণ হলেও মাত্র কয়েক বছরে দেশটির বড় ধরনের পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। গোটা শহর একদিনেই ঘুরে ফেলা যাবে। তবে সময় নিয়ে ঘুরলে অনেক কিছু দেখা ও জানার আছে সিঙ্গাপুরে।এশিয়ান এবং ইউরোপীয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণে তৈরি বিশ্বের অন্যতম সেরা শহর সিঙ্গাপুর ।
১৮১৯ সালে এই শহর ব্রিটিশ বাণিজ্য উপনিবেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। দেশ স্বাধীনের পর এটি সিঙ্গাপুর নামে পরিচিত হয়। বিশ্বের ব্যস্ততম বন্দরগুলির মধ্যেও একটি এই শহর। এশিয়া মহাদেশে কেনাকাটার জন্য সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হলো সিঙ্গাপুর । এই শহর শুধুমাত্রও কেনাকাটার জন্য জনপ্রিয় তা নয় বরং এখানে কিছু সুন্দর জায়গা আছে যা আপনিও ঘুরে দেখতে পারেন। অর্চার্ড রোডঃ

অর্চার্ড রোড হলো সিঙ্গাপুরের কেনাকাটার মূল কেন্দ্র যেখানে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকরাও আসেএখানে। ক্রিসমাস অনেক বড় করে আয়োজন করা হয় এবং সাজানোর জন্য রেনডিয়ার্স পাম গাছও ব্যবহার করা হয়। জিঞ্জারব্রেড হাউস তৈরি করা হয় যার উপরে নকল তুষার গড়িয়ে পড়তে থাকে।

ওয়ার্ল্ড সেন্টোসা রিসোর্টঃসিঙ্গাপুরের ঘোরার আরেকটি উল্লেখ্যযোগ্য জায়গা হলো রিসোর্ট ওয়ার্ল্ড সেন্টোসা। সিঙ্গাপুরের দক্ষিণ উপকূলের কাছের দ্বীপে অবস্থিত এই রিসোর্ট। যেখানে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ক্যাসিনো, থিম পার্কসহ সময়োপযোগী সবই রয়েছে। এই জায়গার মূল আকর্ষণগুলো হলো- সমুদ্র ও তার  চারপাশে কেন্দ্রীভূত মেরিন লাইফ পার্ক, ডলফিন আইল্যান্ড, একটি ওয়াটার পার্ক এবং অ্যাকোয়ারিয়াম। অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে ইউনিভার্সাল স্টুডিও সিঙ্গাপুর এবং রাতের বিনোদন।

বিশ্বের অন্যতম এই ষ্টুডিওটির সৌন্দর্য নিজ চোখে উপভোগ না করলে তা যেন অপূর্ণ থেকে যাবে অনেক কিছুই সিঙ্গাপুর ভ্রমনের । ক্লার্ক কোয়েঃ ক্লার্ক কোয়ে সিঙ্গাপুরের ঐতিহ্যবাহী জায়গা। সিঙ্গাপুর নদীর মোহনায় অবস্থিত জেটি ১৯ শতকের শেষে শহরের বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটি আরও জাঁকজমক হয় উঠেছে। ট্রেন্ডি রেস্তোরাঁ, অনন্য বুটিক, পুশকার্ট বিক্রেতা ও রয়েছে যা এশিয়ান এবং ইউরোপীয় প্রভাবে মিশ্রিত। একমাত্র রাতের বেলাই ক্লার্ক কোয়ে চকচকে নাইট স্পটে ভরা থাকে।

এছাড়া বুগিজ মার্কেটে তুলনামুলক  কেনাকাটা এবং মোস্তফা সেন্টারের চা না খেলে তো সিঙ্গাপুর ঘুরার মজাই পাওয়া যাবে না।    মা্ত্র ২ রাত ৩ দিনের অবস্থানের একটি সংক্ষিপ্ত ভ্রমনে যেটুকু অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে তা অবিস্মরণীয়।  আসলে বাংলাদেশের বাহিরে না গেলে কখনো বুঝাই যাবেনা যে দেশের বাহিরে এত সুন্দর দেশ ও প্রকৃতি রয়েছে।  যদিও সিঙ্গাপুর সিটিখানা  পৃথিবীর একটি অন্যতম আর্টিফিশিয়াল সিটি হিসাবে পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

প্রেরকঃ
উত্তম কুমার পাল হিমেল
নবীগঞ্জ,হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
মোবাইলঃ০১৭১২-৮৫১৮৫০

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD