হাউজ অব কমন্সে ’’রিমেম্বারিং দ্য বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১- দ্য রোড টু ইন্টারন্যাশনাল রিকগনিশন’’ শীর্ষক স্মারক ইভেন্টে ব্রিটিশ লর্ড সভার সিনিয়র সদস্য লর্ড রামি রেঞ্জার কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অফ ইন্ডিয়ার পৃষ্ঠপোষক এবং অনুষ্ঠানের হোস্ট ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের নয় মাসবাপী গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করতে তার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
লর্ড সভার এই প্রবীণ সদস্য এবিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপনেরও প্রতিশ্রুতি দেন। অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূত এবং বাংলাদেশের এপিপিজির ভাইস চেয়ার টম হান্ট এমপি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে নৃশংসতা ঘটেছিল তা একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা ছিল”।
তিনি আশ্বাস দেন যে তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের সাথে নিয়ে ১৯৭১ সালের গণহত্যা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য কাজ করবেন। ভারতীয় বংশদ্বোত কনজারভেটিভ লিঙ্কের চেয়ারম্যান লর্ড সুরি (যিনি মিত্র-বাহিনীর কান্ডার অরোরার চাচাত ভাই) ১৯৭১ সালে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পক্ষে সংসদে নতুন প্রস্তাব আনতে যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন পরিাজিত পকিস্তান বাহিনী ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ডের কাছে কিভাবে আতামসমর্পন করেছিল এর বিস্তারিত জেনেছেন তার চাচাত ভাই অরোরার কাছ থেকে। স্বাগত বক্তব্যে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ১৯৭১ সালের জুনমাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘পূর্ব বাংলায় গণহত্যা বন্ধ করা এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার’ প্রথম দিনের প্রস্তাবের কথা স্মরণ করিয়ে বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি নতুন প্রস্তাবের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “স্যার পিটার শোর, এমপি, যিনি ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, তার পরে আরেকটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, যা অ্যাকশন বাংলাদেশ এবং সমর্থন করেছিলেন ২৩৩ জনেরও বেশি ক্রস-পার্টি সদস্য, তারা পূর্ব বাংলায় গণহত্যার বন্ধ এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়েছেন”।
হাইকমিশনার বাঙালি গণহত্যার বিষয়ে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যার মধ্যে সানডে টাইমসের শিরোনামে অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের প্রধান নিবন্ধ “জেনোসাইড” এবং দ্য টেলিগ্রাফ এবং বিবিসির গণহত্যার বিষয়ে অনুরূপ প্রতিবেদন যা বিশ্বকে হতবাক করেছে এবং বিশ্ব নেতাদের পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। হাইকমিশনার কংগ্রেসম্যান রো খান্না এবং কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাবোটের নেতৃত্বে মার্কিন কংগ্রেসের প্রস্তাবের প্রশংসা করে বলেন যা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুকরণ করা উচিত।
তিনি ব্রিটিশ-বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী এবং কমিউনিটি নেতৃবৃন্দকে ব্রিটিশ রাজনৈতিক, মানবিক এবং থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক সার্কেলের মধ্যে বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে আরও বেশি সচেতনতা তৈরি করার আহ্বান জানান।এছাড়ও অনুষ্টানে আলোচনায় আরো অংশ নেন ড. নাজিয়া এম হাবিব ফাউন্ডার এন্ড রিসার্চ সেন্টার ডিরেক্টর ফর রিসাইলেন্স এন্ড সাসটেনেবল ডেভলাপমেন্ট (সিআরএমডি) অব ল্যান্ড ইকনমি কেমব্রিজ ইউনিভারসিটি, প্রফেসার মোহাম্মদ শহাব উদ্দিন প্রফেসর ইন্টারন্যাশনাল ল এন্ড হিউম্যান রাইট বার্মিংহ্যাম ইউনিভারসিটি, ভ্যাল হান্টিং ট্রাষ্ট্রি স্বাধীনতা ট্রাষ্ট যিনি ১৯৭১ সালে ভারতে বাংলাদেশের সরনার্থি শিবিরে একজন নার্স হিসিবে কাজ করেছেন।
আনসার আহমেদ উল্লাহ জেনারেল সেক্রেটারী অল ইউরোপ নির্মুল কমিটি ও প্রেসিডেন্ট ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটি, সৈয়দ মোজাম্মিল আলী প্রেসিডেন্ট ষ্টাডি সার্কুল, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, এম এ আজিজ অক্সফাম। ২৫ মার্চ সোমবার লন্ডন সয়য় সকাল ১১টায় হাউজ অব কমন্সের কমিটি রুম ৪-এ-তে বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ গণহত্যা দিবস ২০২৪-ইভেন্টে ব্রিটিশ লর্ড সভার সদস্য, ব্রিটিশি এমপি, শিক্ষাবিদ, আইন বিশেষজ্ঞ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্রিটিশ বাংলাদেশীরা অংশ নেন।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply