ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে ডেঙ্গু। এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যু প্রতিদিনই বাড়ছে। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে এখন ডেঙ্গু রোগীদের ভর্তির হার বেড়েছে। হাসপাতালের বেডে রোগীদের মশারি টানিয়ে রাখা হচ্ছে। মশা রোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন অভিযানে নামলেও তা তেমন কাজে আসছে না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো ৩৫৩ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩৮ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ১১৫ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক হাজার ২১৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৮৯৫ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৩১৮ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৯ হাজার ৪৪৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকায় সাত হাজার ৫৩৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৯১১ জন ডেঙ্গু রোগী। অন্য দিকে চিকিৎসা শেষে ৮ হাজার ১৯৬ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তাদের মধ্যে ছয় হাজার ৬২৫ জন ঢাকার এবং বাকি এক হাজার ৫৭১ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা। মঙ্গলবার দু’জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ৩৯ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়। এ সময়ে নতুন রোগী শনাক্ত হয় ২৯৪ জন। এর পরের দিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। আর ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয় ৩৬০ জন। পরদিন রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়।
ওই দিন ৩৪৫ জন নতুন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। এভাবে প্রতিনিয়তই দেশে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। কীটতত্ত্ববিদরা আগেই জানিয়েছিলেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দেশে ডেঙ্গু রোগী বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের সে ধারণা অনুসারেই দেশে ক্রমেই ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু। রাজধানীর অনেক পরিবারেই এখন একাধিক ডেঙ্গু রোগী রয়েছে। ফলে চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে জন্ম নিয়ে থাকে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে। এ কারণে মশা নিধনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ওষুধ প্রয়োগ বাড়িয়েছে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযানও চালাচ্ছে। কিন্তু আশানুরূপ ফল পাচ্ছে না নগরবাসী।
গত সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা উত্তর সিটির এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক কম। বিগত সময়ের তুলনায়ও মশা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সিটি করপোরেশনের কার্যকর পদক্ষেপের ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply