1. sm.khakon@gmail.com : bkantho :
স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে বিপাকে আ’লীগ ধরাশায়ী হতে পারেন হেভিওয়েটদের কেউ কেউ, স্বস্তি নেই জোটে - বাংলা কণ্ঠ নিউজ
রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৪ অপরাহ্ন

স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে বিপাকে আ’লীগ ধরাশায়ী হতে পারেন হেভিওয়েটদের কেউ কেউ, স্বস্তি নেই জোটে

বাংলাকণ্ঠ ডেস্ক
  • বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১১২ বার পড়া হয়েছে
কৌশলে সংগঠিত হচ্ছে আ’লীগ

কয়েক দিন বাদেই আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচনী মাঠ অনেকটা নিরুত্তাপ রয়েছে। উত্তাপহীন এ নির্বাচনে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের শক্ত অবস্থানে থাকা আসনগুলোতে সংঘাত-সংঘর্ষ লেগেই আছে।

বিএনপিবিহীন নির্বাচনেও সুষ্ঠু ভোট হওয়ার ক্ষেত্রে ওইসব আসনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। আবার নির্বাচনী মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা ও শক্ত অবস্থান থাকার কারণে ধরাশায়ী হতে পারেন হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের কেউ কেউ। আওয়ামী লীগের ভাগাভাগির বেশির ভাগ আসনেও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে স্থানীয় নেতাকর্মীরা জোরালোভাবে কাজ করায় ক্ষমতাসীন জোট-মহাজোটের প্রার্থীরা বেশ অস্বস্তিতে রয়েছেন। তারাও পরাজয়ের শঙ্কায় চিন্তিত বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ শুরুতে ২৯৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। বাছাই ও আপিল শেষে তাদের বৈধ প্রার্থী ছিল ২৯৩ জন। সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষমতাসীন জোটের শরিক এবং বর্তমান সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে মোট ৩২টি আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। কুষ্টিয়া-২ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন আগে থেকেই নৌকার কোনো প্রার্থী ছিল না। বাকি ছাড় দেয়া ৩০টি আসনে গত ১৭ ডিসেম্বর নৌকার প্রার্থীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। তবে আসন ভাগাভাগির আসনে নৌকার প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেও অধিকাংশ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়ে গেছে। ওইসব আসনের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে জোরালোভাবে মাঠে কাজ করছেন।

কিছু আসনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। এদিকে জোট-মহাজোটকে ছেড়ে দেয়া আসনে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাদের পক্ষে প্রচারণার মাঠে না থাকা এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় জোট-মহাজোটের প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এবং কোথাও কোথাও নির্বাচনী মাঠে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না।

ওই আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মরহুম এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। এ আসনে নেতাকর্মীরা তিনভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী মমতাজ বেগম এমপি। ওই আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু। এ আসনে নৌকার প্রার্থী ধরাশায়ী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন।

পিরোজপুর-২ আসনে নৌকা প্রতীকে লড়তে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস। কিন্তু জোটের শরিক জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে আওয়ামী লীগ ছেড়ে দেয়ায় তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: মহিউদ্দিন মহারাজ। কুষ্টিয়া-২ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন জোটের শরিক জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি।

তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ থেকে টানা তিনবার নৌকা মার্কা নিয়ে এমপি হন। এবার অবশ্য স্থানীয় নেতাকর্মীরা ইনুকে ছাড় দিতে একেবারেই নারাজ। এ আসনে হাসানুল হক ইনুর বিপক্ষে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল আরেফিনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। যদিও শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে ইনু বেশ অস্বস্তিতে রয়েছেন।

বরিশাল-৩ আসনের পরিবর্তে শেষমেশ বরিশাল-২ আসনে জোটের মনোনয়ন পান ঢাকা-৮ আসনের এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে তিনি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। সেই শঙ্কা এখনো কাটেনি। গেল মঙ্গলবার এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেরে বাংলার দৌহিত্র ফাইয়াজুল হক রাজুর ঈগল মার্কার সমর্থকদের মোটরসাইকেল বহরে রাশেদ খান মেননের সমর্থকদের গুলিবর্ষণ ও হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রাজশাহী-২ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। ২০০৮ সাল থেকে তিনি জোট থেকে মনোনয়ন নিয়ে টানা তিনবার এমপি হন। এবারো তিনি নৌকার টিকিট পেয়েছেন। ওই আসনে কাঁচি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। গেল শুক্রবার এক মতবিনিময় সভায় এমপিকে বাদ দিয়ে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে জেতানোর অঙ্গীকার করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

শুধু বরিশাল-২, রাজশাহী-২, পিরোজপুর-২ কিংবা কুষ্টিয়া-২ নয় জোট-মহাজোটকে ছেড়ে দেয়া প্রায় প্রত্যেক আসনেই আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে একাট্টা হয়ে কাজ করছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও সরকারি আনুকূল্যে প্রতিষ্ঠিত ‘কিংস পার্টি’ নামে পরিচিত পাওয়া দলগুলোর প্রার্থীরাও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতা না পেয়ে তীব্র হতাশার মধ্যে রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রার্থীদের নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় জোটের অন্যতম শরিকদল ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো: ইসমাইল হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, জোটের সাথে যে সমঝোতা হয়েছে তা একপ্রকার মিনিংলেস। কোনো মানেই হয় না। তার কারণ হলো নৌকার প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেও তাদেরই স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠে রয়েছে। একদিকে প্রার্থী উঠিয়ে নিলেন অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে রাখলেন। তাহলে কী দাঁড়ালো! এসব বিষয় নিয়ে জোটের মধ্যে অবশ্যই অস্বস্তি আছে।

পরাজয়েরও শঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের পাঁচজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্র এবং অন্যান্য দলেরও প্রার্থী রয়েছে। এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যা নির্বাচন কমিশনও স্বীকার করেছে। জোটের আরেক শরিক জাসদের সহ সভাপতি মো: শহীদুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করার জন্য সবাইকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

এবার নির্বাচনে কেউ কাউকে ছাড় দেবে না। সেক্ষেত্রে যার জনপ্রিয়তা বেশি সে জিতে আসবে। তিনি বলেন, এসব বিষয় নিয়ে জোটের মধ্যে অস্বস্তি থাকলেও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দি¦তামূলক করার জন্য আমরা যারা জোটের শরিক আছি তাদের মেনে নিতে হচ্ছে।

এ নিয়ে অবশ্য সবাইকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনে জিতে আসার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা আমরাও করব, শরিকদেরও করতে হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো বিকল্প নেই। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই নির্বাচনের রেজাল্ট আনতে হবে।

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD