আদালত আদেশে বলেছে, উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় বিচারিক আদালতের সাজা স্থগিতের বিধান নেই। তবে চাইলে আবেদনকারী আপিল বিভাগে যেতে পারেন। আপিল বিভাগ এ ব্যাপারে একটা নীতিমালা ঠিক করে দিতে পারেন; যা পরবর্তীতে হাই কোর্ট অনুসরণ করতে পারে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ফখরুল ইসলাম নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।
পরে ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ সাংবাদিকদের বলেন, “যদি আজকে তার সাজাটা স্থগিত হত তাহলে রাজনৈতিকভাবে যারা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আছে তারা আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারত। আজকের আদেশের ফলে তাদের আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকছে না।
“ফৌজদারি কার্যবিধির এমন কোনো সেকশন নেই যেটা অনুসরণ করে সাজাটা স্থগিত করা যাবে। যে কারণে আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়ে তার আবেদন খারিজ করেছেন।”
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকায় ২০১৫ সালের নভেম্বরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালাউদ্দিন কাদেরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার রায়হয়েছিল ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর।
ওই রায়ের দিন সকালে তার স্ত্রী, পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা রায়ের ‘খসড়া কপি’ও সংবাদকর্মীদেরও দেখান। তারা আদালতের রায় নিয়ে কটাক্ষও করেন।
পরে রায় ফাঁসের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের নিবন্ধকের পক্ষ থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করা হয়। পরে সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, তাদের ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলামসহ সাতজনের বিচার শুরু করে আদালত।
রায় ফাঁসের ওই মামলায় ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সাকার স্ত্রী ও ছেলেকে খালাস দিয়ে তার আইনজীবী ফখরুলসহ পাঁচ জনকে কারাদণ্ডের রায় দেন বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম।
ফখরুলকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি দশ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়। জরিমানার এ টাকা অনাদায়ী হলে ফখরুলকে আরও ছয়মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
অন্য চারজনকেও কারাদণ্ডাদেশের পাশাপাশি দশ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ছয়মাস করে কারাদণ্ডও দেয় বিচারিক আদালত।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পর ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল হাই কোর্ট থেকে জামিন নেন আইনজীবী ফখরুল ইসলাম। সে আপিল বিচারাধীন অবস্থায়ই সাজা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
Leave a Reply