সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় হাটিকুমরুল বনপাড়া মহাসড়ক জুড়েই রয়েছে চোরাই তেল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। মহাসড়কের পাশের হোটেলগুলোর একপাশে একটি ঝুপড়ি ঘরের সামনে কিছু তেলের ড্রাম আর পাইপ ঝুলানো দেখলেই চুরি করে তেল বিক্রি করে দেয় অসাধু চালক।
এসব অবৈধ কাজে সহযোগিতা করে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ভাঙিয়ে একটি চাঁদাবাজ চক্র।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাটিকুমরুল, বনপাড়া মহাসড়কের সি আর বিসি এলাকায় প্রত্যকটি হোটেলের সামনে দেদারছে চলছে চোরাই তেল বাণিজ্য।
আর এসব বেশির ভাগই হোটেল মালিকদেরই নিয়ন্ত্রনে।
স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি ও পুলিশকে ম্যানেজ করে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে চোরাই তেলের ব্যবসা চালাচ্ছে।
একই চিত্র মহাসড়কের ঢাকা রোডের ধোপাকান্দির বিভিন্ন স্পটে। প্রতিটি স্পটে এসব কারবার চলে গোপন লেনদেনের অলিখিত অনুমোদনে।
সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবেশ সি,আর, বিসি ও ধোপাকদন্দি এলাকায়, এসব ঝুপড়ি ঘরের পিছনে কালো পর্দার আড়ালে একই কায়দায় বড় তেলবাহী গাড়ি ও পন্যবাহী গাড়ি থেকে নামানো হয় বিপুল পরিমাণ তেল, ভুট্টা, রড, সিমেন্ট, কয়লা, এমনকি পাথরও ।
প্রতি রাতেই নামে লাখ টাকা মূল্যের ব্যারেল ব্যারেল তেল ও পন্য সামগ্রি । এসব তেল ও পন্য সামগ্রি যায় স্থানীয় বাজারে পাইকারি দরে। ভোজ্য ও জ্বালানি উভয় তেল নামানো হয় এ রোডে।
ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈধ তেল ব্যবসায়ী, ও পন্যর ডিলার এবং পাম্প মালিকরা। তবে রহস্যজনক কারণে বৈধ ব্যবসায়ীরা এসব অবৈধ দোকান বন্ধের দাবি তুলছেন না।
হাটিকুমরুল বনপাড়া মহাসড়কের সি আর বিসিতে এমন চোরাই তেল ব্যবসায়ীর মধ্যে রয়েছে- মামা ভাগ্নে হোটেলে- চান্দু মিয়া, আল্লার দান হোটোলে- হাফিজ, ওয়াজেদ আলী, মায়ের দোয়া হোটেল এর পাশে সানোয়ার হোসেন, শফিকুল ইসলাম, রুবাইয়া হোটেলে- পাঁচলিয়ার আব্দুর রহিম ও মা বাবার দোয়া হোটেলে চরিয়া শিকার কালিবাড়ি গ্রামের সোহাগ মিয়া, নানা-নাতি এন্টারপ্রাইজ এবং নাম না জানা প্রায় ডজন খানেক অবৈধ চোরাই তেলের কারবারী এছাড়াও হরিন চড়া বাজারের আগে লামইয়া, পাম্পের পার্শে সুজাব, সাইফুল ও আলাউদ্দিন এর তেলের কারবার রয়েছে।
এছাড়া ধোপাকান্দি এলাকায়, আলাউদ্দিন, সাইফুল এবং সাইফুলের শ্যালক সহ বেশ কয়েকজন এসব চেরাই তেলের বড় কারবারি ও রয়েছে।
সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত চলে এসব দোকানে প্রকাশ্যে চোরাই তেল নামানোর কাজ। অন্যদিকে এসব দোকান থেকে স্থানীয় হাট-বাজারে সরবরাহের দৃশ্যও চোখে পড়ে প্রকাশ্যেই। রহস্যজনক কারণে প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়ায় চোরাই তেলের রমরমা বাণিজ্য আরো প্রসারিত হচ্ছে। শক্তিশালী হচ্ছে তাদের সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে পুলিশের অসাধু সদস্য, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা এসব স্পট থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলেন। আর এ কারণেই অবাধে চলে এমন চোরাই তেলের বাণিজ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানায়, মালামাল পরিবহনের মহাসড়ক হিসেবে পরিচিত ঢাকা বনপাড়া ও ঢাকা মহাসড়কে চোরাই তেল ছাড়াও অন্যান্য পণ্য চোরাই সিন্ডিকেট সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এসব চক্র প্রশাসনের অসাধু সদস্যদের ম্যানেজ করেই এসব ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে মায়ের দোয়া হোটেল এর পাশে তেল ব্যবসায়ি সানোয়ার সহ অনেকেই প্রতিবেদককে জানান, প্রশাসন ও সবাইকে ম্যানেজ করেই গাড়ি থেকে তেল নামাই। আপনিও এক সময় এসে দেখা করবেন।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি বদরুল কবির জানান, আমরা চেষ্টা করছি অবৈধ তেলের দোকান বন্ধে, কোথাও তেল নামনো দেখলে আমরা মামলা দেবো।
আমরা খবর পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, কোথাও তেলের একরম কারবারী থাকলে বা কোথাও অবৈধভাবে তেল বিক্রি হচ্ছে জানতে পারলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।