অবশেষে চাপের মুখে নিজ থেকেই পদত্যাগ করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। বৃহস্পতিবার লন্ডন সময় দুপুর ১টা ৩২ মিনিটে তিনি দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হলেন তিনি। ২০০ বছরের ব্রিটিশ ইতিহাসে ব্রিটেনের সবচেয়ে কম সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নতুন রেকর্ডও করেছেন ট্রাস। কোন প্রক্রিয়া অনুষরণ করে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কে আসছেন ক্ষমতায়? এইটাই এখন আলোচ্য বিষয়। লিজ ট্রাস তার ভাষণে বলেছেন এক সপ্তাহের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। ব্রিটেনের নিয়ম মাফিক সাধারণত কনজারভেটিভ পার্টির ভেতরে এ নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলে কয়েক মাস ধরে।
প্রথমে দলীয় এমপিরা কয়েকজন প্রার্থীকে বাছাই করেন এবং বাছাইকৃত প্রার্থীদৈর মধ্যে যিনি পার্টি সদস্যদের ভোট সবচেয়ে বেশি পান তিনিই দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু এক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়াটি হয়তো এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ করতে হবে।
’১৯২২ কমিটি’ নামে এমপিদের বিশেষ কমিটির প্রধান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডি জানিয়েছেন আগামী শুক্রবারের মধ্যেই এ নির্বাচনের ফল জানা যাবে এবং এতে পার্টি সদস্যরাও সম্পৃক্ত থাকবেন। এক্ষেত্রে নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি হল- প্রার্থীদের প্রত্যেকের কমপক্ষে ১০০ জন কনজারভেটিভ এমপির সমর্থন লাগবে। যদি মনোনীত প্রার্থীর সংখ্যা দুই জন হয়, তাদের মধ্যে কোনও একজন প্রার্থীর ১০০ সমর্থক না থাকলে তিনি প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়বেন। আর যদি কেবলমাত্র একজন প্রার্থীর ১০০ জন সমর্থক থাকে, সেক্ষেত্রে কোনও ভোটের প্রয়োজন হবে না।
তিনি সরাসরি দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হবেন।আর যদি প্রার্থী দুইজনের বেশি হয় এবং প্রত্যেকের ১০০ সমর্থকের বেশি থাকে, সেক্ষেত্রে কনজারভেটিভ এমপিরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেবেন। যিনি কম ভোট পাবেন তিনি প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়বেন।
এরপরও একাধিক প্রার্থী থাকলে কনজারভেটিভ এমপিরা আবারও ভোট দিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী বাছাই করবেন। যিনি কম ভোট পাবেন তিনি বাদ পড়বেন। এরপরও একাধিক প্রার্থী থাকলে এবার কনজারভেটিভি প্রার্থীরা অনলাইনে ভোট দেবেন। এভাবে শেষ পর্যন্ত যিনি বেশি ভোট পেয়ে প্রতিযোগীতায় টিকে যাবেন তিনি দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। কে হবেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী?ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে এখন নানা জল্পনা চলছে।
লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হবার সময় যারা তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন- তার মধ্যে অন্তত দু’জন ঋষি সুনাক এবং পেনি মরড্যান্টের নাম শোনা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে।এছাড়া আছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসের নামও । অন্যদিকে, অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেছেন- তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বিভিন্ন রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে- মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে পদত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও আবার প্রধানমন্ত্রী হবার প্রতিযোগিতায় নামতে পারেন।
একটি জনমত জরিপে বলা হচ্ছে, সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় এক নম্বরে আছেন ঋষি সুনাক। তবে একটি রির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও প্রার্থি হবরেন। মূলত প্রতিদন্দিতা হবে সাবেক প্রধানমন্ত্রি বরিস জনসন ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ভারতীয় বংশদ্বোত ঋসি সোনাকের মাঝে। দেখা কে হচ্চেন নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋসি সোনাক না বরিস জনসন। তা অবশ্যই ২৮ অক্টোবরের মধ্যে নির্ধারিত হয়ে যাবে।