পাকিস্তান শাসিত গিলগিট-বালতিস্তানের বিভিন্ন অংশে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক পাস করা একটি নতুন কর আইনের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ বাড়ছে। যা ইতিমধ্যে এই অঞ্চলে পানি, বিদ্যুতসহ অন্যান্য ন্যায্য পাওনার দাবীতে দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলনরত গিলগিট-বালতিস্তানের সাধারণ মানুষকে আরো প্রভাবিত করবে। গেল ৭ অক্টোবর শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন “গিলগিট-বালতিস্তান রাজস্ব কর্তৃপক্ষ বিল ২০২২- ১৩৫ টি দ্রব্যের উপর নতুন করে কর আরোপ এই অঞ্চলের মানুষের প্রতি বৈশম্য, যা আর পাকিস্তানের কোথাও নেই। ১৯৪৭ সালের পর থেকে এই অঞ্চলের মানুষ পাকিস্তান সরকার কর্তৃক বিভিন্ন ভাবে নির্যাযিত হয়ে আসছে।
দৈনিক ডন পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয় বিলটি এই বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো বিধানসভায় পাস হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে গিলগিট-বালতিস্তানের গভর্নর সৈয়দ মেহেদি শাহ প্রত্যাখ্যান করেন। মেহেদি শাহ বিলটিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন এবং পর্যালোচনার জন্য এটি বিধানসভায় ফেরত পাঠিয়ে দেন। পাকিস্তানের দৈনিক ডন পত্রিকার মতে, বিলটি আবার বিধানসভায় উত্থাপন করা হয় এবং সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো পাস করা হয় এবং কার্যকরভাবে এটিকে আইনে পরিণত করে কেন্দ্রীয় সরকার।
গিলগিট-বালতিস্তানের ব্যবসায়ী সংগঠন এবং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে বেশ কয়েকটি জেলায় বিলের প্রতিবাদে হরতারের ডাক দেয়া হয়, হরতালে সাড়া দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে সর্বস্থরের মানুষ। দোকানপাট-অফিস আদালত বন্ধ ছিল,রাস্তায় চলেনি যানবাহন।
হুনজার নাসিরাবাদ এলাকায় বিক্ষোভকারীরা কারাকোরাম হাইওয়েতে এর প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তান বিরোধী ব্যানার ফেষ্টুন ব্যবহার করে, গিলগিট-বালতিস্তান স্বাধীন কর, পাকিস্তান মুরদাবাদ ইত্যাদি শ্রোগান দেয়। গিলগিট-বাল্টিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন , গিলগিট-বালতিস্তানের জনগণের উপর নতুন কর আরোপের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ। “১৩৫টি দ্রব্যের উপর কর আরোপ করা হলে তা দরিদ্র জনগণকে প্রভাবিত করবে। এটি
১০০টিরও বেশি আইটেমের উপর আরোপিত ট্যাক্সের দিকে ইঙ্গিত করে, বাণিজ্য সংস্থার প্রধান বলেন, এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে মানুষ ইতিমধ্যেই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। রেহমানের মতে, শেহবাজ শরীফ সরকার সাংবিধানিক অধিকার না দিয়ে বিভিন্ন নামে কর আরোপ করছে গিলগিট-বালতিস্তানের মানুষের উপর। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, “এটি একটি টোকেন প্রতিবাদ, সরকার যদি বিলটি প্রত্যাহার না করে তবে পরবর্তী পদক্ষেপ আরও আক্রমণাত্মক হবে।
লন্ডনে বসবাসরত গিলগিট বালতিস্তান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেণ্ট আহমেদ শাহ ফারুক বলেন ১৯৪৭ সালের পর থেকে পাকিস্তান রসরকার কর্তৃক এই অঞ্চলের মানুষ বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়ে আসছে। আমরা “ আমাদের সবধরনের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। কোন সরকারই এই অঞ্চলের মানুষের সাথে ভাল আচরন করেনি। শিক্ষা চাকুরী সবদিক থেকে গিলগিট-বালতিস্তানের মানুষ বঞ্চিত। পাকিস্তান সরকার যেভাবে বাংলাদেশের মানুষের উপর অত্যাচার করেছিল ঠিক একই ভাবে আমাদের উপর চালাচ্ছে অত্যাচার নির্যাতন। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। শুধু গিলগিট-বালীতস্থান নয় অত্যাচারিত হচ্ছে বেলুচের মানুষও।
Designed by: Sylhet Host BD
Leave a Reply