প্রথমে জার্মানি ও পরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হলোকাষ্ট আইন নামক একটি নতুন আইন করা হয়। হলোকাষ্ট গ্রীক শব্দ থেকে নেওয়া।
হিটলার বা তার ন্যাশনাল ওয়ার্কাস পার্টি সংক্ষেপে ন্যাৎসি পার্টি ১৯৩২ থেক ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ইউরোপ ও তার অধিকৃত অঞ্চলে যে হত্যাকাণ্ড চালায় তাতে ৬০ লাখ ইহুদী এবং ৬০ লাখ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে হত্যা করা হয়। হলোকাষ্ট আইন করে বলা হয় এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোন প্রশ্ন করা বা এ নিয়ে কোন আলোচনা করা যাবেনা। যদি কেউ তা করে ৭বছরের সশ্রম সাজা ও সাত হাজার ইউরো পরিমান অর্থ দন্ড দেওয়া হবে । আর যারা এই হত্যাকাণ্ডের সহিত জড়িত ছিলো তাদের পাসপোর্ট কিংবা নাগরিক অধিকার দেয়া হয় নি।
আমাদের দেশে যেমন রুহিঙ্গাদের আলাদা অঞ্চলে রাখা হয়েছে জার্মানীতে নাৎসীদের একই ভাবে রাখা হয়েছে , তারা আছে তবে তাদের কোন ভোটাধীকার কিংবা নেতৃত্বে যাওয়ার বা বিদেশে যাওয়ার অধিকার নেই , তারা কোন সরকারী চাকুরী পায় না তারা নাগরিক হলে ও নাগরিক অধিকার পাচ্ছে না অথচ জার্মানী একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং ইউরোপের অধিকাংশ দেশ ই গনতান্ত্রিক। সেখানে কেউ কখনো এবিষয়ে কথা বলেনা “ হিটলার ও তার সহযোগীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলা তার গনতান্ত্রিক অধিকার। নব্য নাৎসি পার্টির জন্ম দেওয়া গনতান্ত্রিক অধিকার। “
আমাদের দেশে কিছু মানুষ এখনও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তুলে। বলে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ বলে জাতিকে কেন বিভক্ত করা হচ্ছে। না এটা জাতিকে বিভক্ত করা নয়। এটা জাতিকে কলংখ্য মুক্ত করা। জাতিকে দেশপ্রেমে উদ্ভুত করা। পরিচয় যদি সঠিক না হয় তাহলে কি মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো যায় ?
ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হলে ও আমাদের দেশে যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিলো তারা জিয়ার ক্ষমতার লোভে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ও নেতৃত্বে আজো বীর দর্পে আছে জিয়াউর রহমান কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজ কে প্রধানমন্ত্রী ও খালেদা মন্ত্রী বানিয়ে লাল সবুজের পতাকা কে কলংকিত ও অপমানিত করেছে , গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে এনে নাগরিকত্ব দিয়েছে অর্থাৎ স্বাধীনতার শত্রুদের পুনর্বাসিত করতে যা যা করণীয় তার ষোলকলা জিয়া ও খালেদা পূর্ন করেছে ।
যদি ও বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা যুদ্ধপরাধের বিচার করছেন কিছু কিছু ফাঁসির রায় ও কার্যকর হয়েছে তবু তারা ব্যবসা বাণিজ্য রাজনীতি অর্থনীতি বিদেশ ভ্রমণ সহ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে ।
তারা জাতির পিতা মানেনা , ধর্মনিরপেক্ষতা মানে না তারা সাম্রদায়িক রাষ্ট্র বানাতে চায় ,মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললে তারা প্রকাশ্যে টেলিভিশনে গিয়ে নাস্তিক মুরতাদ বলে , তারা উন্নয়ন মানে না বরং পদ্মা সেতুর মতো স্থাপনার বিরোধিতা করে যাচ্ছে দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্র লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান গ্রহণ করছে ।
তাই আমাদের সহনশীলতা দেখানোর আর কোন সুযোগ নেই বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি করতে এবং তার নাগরিক হিসাবে নিজেকে বহাল রাখতে হলোকাষ্টের চেয়েও কড়া একটি আইন করা দরকার।আর সেই আইন করা এখনই করা উচিত এখনই প্রকৃত সময়।
মুক্তিযুদ্ধ , জাতির পিতা , ত্রিশ লাখ শহীদ , দুই লাখ অত্যাচারিত নারী, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা বাংলাদেশে মিমাংসিত বিষয়। এনিয়ে কোন প্রশ্ন করা যাবেনা। প্রশ্ন মানেই আইন ও সাজা।
রাজনৈতিক দল করতে হলে দেশের এইসকল বিষয়ে স্পষ্ট উল্লেখ করতে হবে। রাজাকার আলবদর ও তাদের পূর্ব ও বর্তমান সহযোগীদের স্বাধীন বাংলায় কোন সরকারী চাকুরী ও রাজনৈতিক দল করার অধিকার হরন করতে হবে।
সকল স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় বাংলাদেশ পরিচিতি ও মুক্তিযুদ্ধ সহ ইতিহাস পড়াতে হবে।
শিশুকাল হতে মানষিক ভাবে দেশের একজন সু ও সৎ নাগরিক হিসাবে শিশুকে শিক্ষা দিতে না পারলে দেশ বারবার ৭১ এর পরাজিতদের ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হবে। এরা হয়তো আবার পাকিস্তানী হতে পারবেনা কিন্তু পাকিস্তানী রাষ্ট বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে তামাশা বানাবে। দেশ ও দেশের জনগনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি মুক্তিযুদ্ধকে তামাশা মনে করেন না পবিত্র সত্য মনে করেন।
বর্তমান সরকারের নিকট প্রত্যাশা যে অনতিবিলম্বে জাতীয় সংসদে হলোকাস্টের মতো একটি আইন পাশ করে এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক , আর তা না হলে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠন করা মুশকিল কারণ সরকার উন্নয়নের পথে হাঁঠলে ও এরা প্রতিনিয়ত পিছনের দিকে টেনে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে ।
লেখক : আব্দুর রহিম শামীম
সাংবাদিক ও রাজনীতিক।