1. sm.khakon@gmail.com : bkantho :
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে রাষ্ট্রপতির বাণী - বাংলা কণ্ঠ নিউজ
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০২ অপরাহ্ন

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে রাষ্ট্রপতির বাণী

মতিয়ার চৌধুরী,
  • শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০২২
  • ৫৫ বার পড়া হয়েছে

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ নিম্নোক্ত বাণীঃ

২৬শে মার্চ, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে, আমি দেশ-বিদেশে বসবাসরত আমার দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানাই।ঐতিহাসিক এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াল রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেছি।

আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি লক্ষ লক্ষ শহীদকে যারা মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এবং তাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের জন্য আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমাদের চার জাতীয় নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সংগঠক, সমর্থক, বিদেশী বন্ধু এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে যারা আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে অবদান রেখেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু সব সময় রাজনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন লালন করতেন। বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানব সম্পদ উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ এবং গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছি। দারিদ্র্যের হার কমেছে।

গত এক দশকে মাথাপিছু আয় তিনগুণ বেড়েছে। ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে, যা গোটা বিশ্বে শেকড়হীন ও অসহায় মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনের ধারণায় এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু এ বছর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। মেট্রোরেল, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, কর্ণফুলী টানেল, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজও নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। উন্নয়ন প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে, ইনশাআল্লাহ।

বিশ্ব অর্থনীতিতে করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী ও সাহসী পদক্ষেপের ফলে সরকার করোনার প্রভাব মোকাবেলা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও বিনিয়োগ প্রকল্প, কর্মসূচি ও উদ্যোগের ফলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

এই সময়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। করোনা মোকাবেলায় সবার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী দিনে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি সকলকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সরকার আমাদের পররাষ্ট্র নীতি “সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বিদ্বেষ নয়” যেমনটি জাতির পিতার নির্দেশে বহাল রয়েছে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠাসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অর্জনও প্রশংসনীয়। ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত ও জোরপূর্বক বিতাড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করে।

আমি এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মিয়ানমারসহ জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।স্বাধীনতার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের অবশ্যই গণমুখী ও টেকসই উন্নয়ন, সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য সহনশীলতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সুসংহত করতে হবে। নতুন প্রজন্মের জন্য নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নিশ্চিত করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধীরা তার নীতি, আদর্শকে মুছে ফেলার পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে চিরতরে বন্ধ করার চেষ্টা করে। কিন্তু বাঙালি বীরের জাতি। কোনো কিছুই বাঙালিকে দমাতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু তার জীবনের মূল্যে মহান বিজয়ী হয়েছেন। মৃত্যু তাকে বিলীন করেনি বরং বাঙালির মনে তাকে উজ্জ্বল ও মহিমান্বিত করেছে।

নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বোঝানো আমাদের দায়িত্ব যে, তারা আজ যে পথে এগিয়ে যাচ্ছে তা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রশস্ত করেছেন। তাঁর দেখানো পথই হবে ভবিষ্যতে উন্নয়ন ও অগ্রগতির সোপান। আমরা হব.সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশে পরিণত হোক – মহান স্বাধীনতা দিবসে এটাই আমার প্রত্যাশা। জয় বাংলা।খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

 

 

 

 

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD