২৫মার্চ ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক নৃশংস, ভয়ংকর ও বিভীষিকাময় কালরাত। একাত্তরের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পৈশাচিক হিংস্রতায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালি জাতির ওপর। এ অভিশপ্ত রাতে পাক বাহিনীর ট্যাংক, কামান আর মেশিনগানের গোলায় প্রাণ হারিয়েছেন শত শত দেশপ্রেমিক তরুণ, যুবক, আবালবৃদ্ধবনিতা।
রক্তেরঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ, বাংলার সবুজ-শ্যামল প্রান্তর। নরঘাতক পাক বাহিনীর পৈশাচিক উল্ল¬াস, লুণ্ঠন, হত্যা ও নির্মম হিংস্র থাবায় ধ্বংস হয়েছিল বাড়িঘর, সম্পদ ও জনপদ। নারকীয় জিঘাংসায় তারা দেশব্যাপী পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় বসত বাড়িসহ হাজার হাজার স্থাপনা।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জলাদ ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে রাত ১টায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুরো শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পিলখানার ইপিআর সদর দফতর, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রাবাস ও নগরীর বিভিন্ন এলাকার স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর ঘুমন্ত মানুষের ওপর। হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি চলতে থাকে লুটপাট, নারী নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ। একই সঙ্গে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় অন্যান্য বড় বড় শহরেও। এমন কলংকজনক নজির বিশ্বের ইতিহাসে দ্বিতীয়টি আর নেই।
‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বিশ্বমানবতার ইতিহাসের এমন জঘন্যতম হত্যাকান্ড ঘটিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সমগ্র মানবজাতির কাছে ধিক্কৃত হয়। ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে স্থান হয় অসভ্য পাকিস্তানীদের। স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত গোটা বাঙালিজাতি এ মানবতাবিরোধী হামলায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েও ঘুমভাঙা চোখে মৃত্যুকে তুচ্ছজ্ঞান করে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে সমগ্র দেশব্যাপী।
শুরু হয়ে যায় সশস্ত্র সংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর সেই সাতই মার্চের ঐতিহাসিক আহ্বান ‘আমি যদি হুকুম দিবার না-ও পরি’, ‘‘যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’’ এই মন্ত্র বুকে ধারণ করে মাতৃভূমির স্বাধিকারের অদম্য আকাক্সক্ষায় বাবা-মা, স্ত্রী-পুত্র, পরিবার ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে শরিক হয় বাংলার অকুতোভয় সূর্যসন্তানরা। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর পরও এ ঐতিহাসিক দিনটিতে বাংলার মানুষ পাকিস্তাানি হানাদারদের প্রতি চরম ঘৃণা, ক্ষোভ ও ধিক্কারের মধ্য দিয়ে স্মরণ করছে। দিনটি যেমন অভিশপ্ত, তেমনি অবিস্মরণীয় উজ্জ্বল ইতিহাসের মাইলফলকও বটে।
২৫ মার্চ রাতের শেষ প্রহর তথা ২৬ মার্চ ১৯৭১ প্রথম প্রহরেই বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, অসহযোগ আন্দোলনের একমাত্র কান্ডারি, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তারই পথ বেয়ে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশÑ প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
২৬মার্চ ১৯৭১ রাত সাড়ে বারটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা দেন এবং রাত সাড়ে তিনটায় হানাদার বাহিনী তাঁকে ধানমন্ডির বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষনার খবরটি পরদিন নিউইয়র্ক টাইমসের বৈকালিক সংস্করনে প্রকাশ করা হয় এবং এতে বলা পুর্বপাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সময় দুইটায় স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেন। বঙ্গবন্ধ স্বাধীনতার ঘোষনাটি ইপিআরের ওয়ার্লেসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন পর দিন রেডিওতে এটি বার বার প্রচার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা বিশ্বব্যাপী আরো কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়। আকাশবাণী কলকাতা, ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান সহ আমেরিকার কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রচার করা হয়।
সে সময় বাংলাদেশে অবস্থান করা ও বাংলার গণহত্যার খবর প্রচারকারী বিদেশী সাংবাদিক সায়মনডিংক ও তার একটি লিখায় এর বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানে তফশিল ১৫০(২) অনুচ্ছেদে এর বিস্তারিত বিবরন রয়েছে। এছাড়াও এবিষয়ে উল্লেখিত গ্রন্থাদিতে ও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। তা তুলে ধরা হলো Sheik Mujib Trimumph And Tragedy S A Karim ,P204,UPL 2006. স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু প্রামান্য দলিল, শামসুল হক আগামী প্রকাশনী ১৯৯৬, পৃ:১২. বঙবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষনার সেই ওয়্যারসেল বার্তাটি, মুনতাসির মামুন দৈনিক জনককণ্ঠ. ৬ নভেম্বর ২০০০, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও গাণ সম্পাদনা সেলিম রেজা পৃঃ৪৫অনুপম প্রকাশনী, প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারী ১৯৮৮, মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা এ.এস.এম, শামসুল আরেফিন পৃঃ ৯০৩ পুলিশ হেডকোয়াটার্স ঢাকা, বাংলাদেশ, The Procllamation of Independence 10th of April 1971, Pepples Republic of Bangladesh Center for Bangladesh Genocide Research 1971.
www. songramernotebook.com
এহিয়া-ভুট্রো গোপন বৈঠক ও জনতার প্রতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনাঃ
একাত্তরের ২৫ মার্চ সকালে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও পাকিস্তান পিপলস পার্টিপ্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন। ভূট্রো বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত জবাবে জানান, পরিস্থিতি সংকটজনক। বৈঠকের পর থেকেই ঢাকার রাজপথে সেনাবাহিনী নামার গুজব ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। সকাল থেকে সারাদিনই হাজার হাজার মানুষ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে সমবেত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বেশ কয়েকবার ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সামরিক ব্যবস্থার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে বেশি আগ্রহী। এ অবস্থায় আমাদের পথ আমাদেরই দেখতে হবে। সবাইকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
পাকিস্থানী জেনারেলদের সাথে এহিয়ার গোপন বৈঠক ও গণহত্যার নির্দেশঃ
সেদিন ভূট্টোর সঙ্গে বৈঠক করেই জেনারেল ইয়াহিয়া গোপনে বৈঠক করেন লে. জেনারেল টিক্কা খান, চিফ অব জেনারেল স্টাফ জেনারেল আবদুল হামিদ খান, মেজর জেনারেল মিঠ্ঠা খান, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ সেনা অফিসারের সঙ্গে। সেখানেই তিনি সব ধরনের মানবিক রীতি-নীতি লংঘন করে বাংলার স্বাধিকারের জন্য আন্দোলনরত গণমানুষের ওপর সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সর্বাত্মক আক্রমণ ও নির্বিচারে গণহত্যা চালাতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন।
বাঙালি গণহত্যার নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর বাস্তবায়ন কর্মসূচিও অনুমোদন হয় ওই বৈঠকে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এদিন বেলা ১১টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেজর. জেনারেল জানজুয়া, মেজর. জেনারেল মিঠ্ঠা খান, মেজর. জেনারেল নজর হোসেন শাহ ও মেজর জেনারেল ওমরসহ আরও কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা রংপুর, রাজশাহী, যশোর, কুমিল¬া ও চট্টগ্রাম সেনানিবাস সফর করে প্রতিটি স্থানেই শুধু পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেন। প্রতিটি বৈঠকে তারা গণহত্যার নীলনকশা সংবলিত একটি করে খাম হস্তাান্তর করেন কমান্ডিং অফিসারদের হাতে।
২৫ মার্চের বিদায়ী সূর্যের রক্তিম আভা আর বাতাসে ভেসে আসতে থাকে সর্বনাশের গন্ধ। সমগ্র জাতি তখন স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর। প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ তখন এতটাই প্রবল যে, পাকিস্তানি সুসজ্জিত ও দুর্ধর্ষ সামরিক বাহিনীকেও তুচ্ছজ্ঞান করছে প্রতিটি বাঙ্গালী। কেউ পাক বাহিনীর আক্রমণের প্রচন্ডতা ও বীভৎসতা সম্পর্কে আঁচও করতে পারেনি। এদিন সকালেই রেডিও এবং টেলিভিশন ভবনে অবস্থান নেয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী। সকাল থেকেই বাঙালি জাতির আন্দোলন-সংগ্রাম ও মুক্তির সূতিকাগার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ৬৬৭ নম্বরের বাসাটি সামনের চত্বর লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সারাদিন ধরে চলতে থাকে রাজনৈতিক শলাপরামর্শ। বিকাল ও সন্ধ্যা থেকেই বঙ্গবন্ধু ভবনকে ঘিরে বিভিন্ন রাস্তায় শুরু হয় ব্যারিকেড।
সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে গোপনে সাদা পোশাকে কড়া পাহারার মধ্যে জেনারেল ইয়াহিয়া খান সরাসরি তেজগাঁও বিমানবন্দরে রওনা করেন। বিমানবন্দরেও তিনি পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক বাহিনী প্রধান লে. জেনারেল টিক্কা খানসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তার সঙ্গে গোপন বৈঠক করে অপারেশন সার্চলাইট শুরু করার নির্দেশ দিয়ে রাত পৌনে ৮টায় পিআইএ’র একটি বিশেষ বিমানে ঢাকা ত্যাগ করেন।
এ রাতেই পিপলস পার্টি প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টোও সবার অলক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট হাউস ছেড়ে ওঠেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ঢাকা ত্যাগের খবরটি দ্রুত বঙ্গবন্ধুর কাছে পৌঁছে বিমানবন্দর থেকেই। দলে দলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ আসতে থাকেন বঙ্গবন্ধু ভবনে। রাত ৮টায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আসেন আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, দলের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এইচএম কামরুজ্জামানসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা।
তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে বঙ্গবন্ধু ২৭ মার্চ সারাদেশে হরতাল আহ্বান করেন। এরপর আসেন কর্নেল এমএজি ওসমানী, ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম। বঙ্গবন্ধু সবাইকে গোপন স্থানে চলে যাওয়ার ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশ দেন। রাত ১১টায় আসেন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আসম আবদুর রব ও শাজাহান সিরাজ। তাদের সঙ্গেও বঙ্গবন্ধু পৃথক বৈঠক করেন। বঙ্গবন্ধু উপস্থিত সবাইকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পাঠান।
এ সময় দলের কয়েকজন নেতা তাকে আত্মগোপনের পরামর্শ দিলে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘পাক বাহিনী আমাকে এখানে খুঁজে না পেলে ওরা পুরো ঢাকা শহর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে সবকিছু ছারখার করে দেবে। আমার লোকদের ওরা নির্বিচারে হত্যা করবে। আমাকে, মেরে ফেলুক, তবুও বাংলার মানুষ রক্ষা পাবে।’ এরই মধ্যে শেখ কামাল বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও জামাতা ড. ওয়াজেদও নিরাপত্তার কথা ভেবে অন্য বাসায় আশ্রয় নেন। এ সময় বাসায় অবস্থান করেন বঙ্গবন্ধু, বেগম মুজিব, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল।রাত ১২টায় খবর আসে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী পিলখানা, রাজারবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা করেছে।
রাত সাড়ে বারটার কিছু পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়ে তার বাসভবনেই অবস্থান করতে থাকেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাস্তার ব্যারিকেড সরিয়ে কর্নেল জহিরের নেতৃত্বে একটি কমান্ডো পাটুন বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এরই মধ্যে ক্যাপ্টেন হুমায়ুন বঙ্গবন্ধু ভবনের দেয়ালের চারদিকে অবস্থান গ্রহণ করে। মেজর বিলাল বঙ্গবন্ধু ভবনের দোতলার একটি বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে।
তারা বঙ্গবন্ধুকে বন্দি অবস্থায় ট্যাংক-কামানসহ কড়া পাহারায় শেরেবাংলা নগরের সামরিক সদর দফতরে নিয়ে যায়। পরে তাকে নেয়া হয় ক্যান্টনমেন্টের সেনাবাহিনীর অফিসার্স মেসে। টিক্কা খানের নির্দেশে বঙ্গবন্ধুকে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকেই পরদিন নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানে।
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাঃ
২৫মার্চ দিবাগত রাত তথা ২৬মার্চ ১৯৭১ এর প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষনা করেন। এ ঘোষনাটি ইপিআর-এর নিকট পৌঁছানো হয় এবং তা ইপিআর বেতারের মাধ্যমে সারাদেশে প্রচার করা হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষনের কপি এবং বিভিন্ন জনসভায় দেয়া চারটি অডিও ভাষন থেকে এরকমই তথ্য পাওয়া যায়। সংবিধানে স্বাধীনতার ঘোষনাটি নিম্নরুপ।
“This may be my last message, from today Bangladesh is independent. I call upon the people of Bangladesh wherever you might be and with whatever you have to resist the army of occupation to the last. Your fight must go on until the last soldier of the Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved.
Sheikh Mujibur Rahman
26th March 1971”
বঙ্গবন্ধুর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণাটি চট্টগ্রামে নোঙর করা একটি বিদেশী জাহাজের সেটেও ধরা পড়ে। শুনতে পান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখার প্রধান মেজর সিদ্দিক সালিকও। এছাড়া এবার্তাটি আরো কয়েকজন পেয়েছেন তারা হলেন ১. এ জালাল আহমেদ চট্রগ্রাম,২. মানিক চৌধুরী (হবিগঞ্জ) সিলেট- এখানে মানিক চৌধুরী বলতে হবিগঞ্জের কমান্ডেড মানিক চৌধুরী, ৩.পাবনার ওসি আব্দুল হামি,৪ পাকিস্তান পোষ্ট এন্ড টেলিগ্রাপ ডিপার্টমেন্ট কোষ্টিয়া, ৫. পরবর্তিতে আরো কয়েকজন।
ওয়্যারলেস বার্তাটি চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জহুর আহম্মেদ চৌধুরী পেয়ে রাতেই তা সাইক্লোস্টাইল করে বিলির ব্যবস্থা করেন। পরদিন অর্থাৎ ২৬ মার্চ দুপুরে এ বার্তাটিই কালুরঘাট বেতার থেকে সর্বপ্রথম পাঠ করেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান। তারপর বারবার ঘোষণাটি পড়ে শোনান অধ্যাপক আবুল কাশেম সন্দ্বীপ বিকেলে আবার পাঠ করে আবুল কাশেম স্বন্দীপ এর পর আরো কয়েকজন । ২৭মার্চ মেজর জিয়াকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার এ ঘোষণাটি পাঠ করানোর জন্য তাকে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তৎকালীন চট্টগ্রামের বেতার কর্মী বেলাল মোহাম্মদ, অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ ও অধ্যাপক আবুল কাশেম সন্দ্বীপ।
২৭ মার্চ বিকেলে কালুরঘাট বেতার থেকে মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন। তা হলোঃ ও গধলড়ৎ তরধ ঁৎ জধযসধহ ফড় যবধৎ নু ফবপষবধৎ ওহফবঢ়বহফবহপব ড়ভ ইধহমষধফবংয ড়হ ঃযব নবযধষভ ড়ভ ঙঁৎ এৎবধঃ হধঃরড়হধষ খবধফবৎ ইযড়মড় ইড়হফযঁ ঝযবরশ গুঁরনঁৎ জধযসধহ. জিয়াউর রহমানের পর ঐদিন বিকেলে ঘোষনাটি আরো কয়েকজনে পাঠ করেন। ঢাকা শহরসহ গোটা দেশেই শুরু হয়ে যায় প্রতিরোধ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ।
এখানে উল্লেখ্য যে মেজর জিয়া জাতির পিতার পক্ষে স্বাধীনতার যে ঘোষনাটি পাঠ করেন ‘‘ তিনি পরিস্কার করে বলেছেন আমি মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ করছি। জিয়া জীবিতাবস্থায় কোনদিনই দাবী করেননি যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষক। এ বিষয়ে তিনি পরিবর্তিতে তার একটি লিখায় উল্লেখ করেছেন কিভাবে তিনি জাতির জনকের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ করেন।
আর মেজর জিয়াকে দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষনাটি পাঠ করানোর আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণও ছিল যেহেতু দেশব্যাপী প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে, মানুষের মনবল যাতে অটুট থাকে একারণেই একজন আর্মি অফিসারকে দিয়ে ঘোষনাটি পাঠকরানোর ব্যবস্থা করেন বেতার কর্মিরা। ঘোষনা দেয়া আর পাঠ করা একই জিনিষ নয়।
এবিষয়ে পরবর্তিতে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের কর্মকর্তা বেলাল মোহাম্মদ দেশস্বাধীনের পর সিলেট বেতারে বদলি হয়ে আসেন, তিনি সিলেট বেতারে কাজ করার সময় সিলেট বেতারে আমার পোগ্রাম করার সুবাদে তার সান্নিধ্য লাভের সুযোগ হয় এ বিষয়ে বেলাল মোহাম্মদের সাথে আমার কথা হয়, জানতে চাইলে তিনি এব্যাপারে যে কথা গুলো বলেছেন তা হলো, মেজর জিয়া প্রথমে আসতে চাননি পরে তাদের অনুরোধে তিনি ঘোষনাটি পাঠ করেন।
২৫ মার্চ মধ্য রাত থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঘোষনা অনুযায়ী দেশব্যাপী প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতার ঘোষনা দেন পরদিন বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়, শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেন।
এছাড়া আকাশবাণী কলকাতা থেকে প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেন এবং তিনি মুক্ত আছেন। এখানে এর আরেকটি কারণও ছিল যাতে মানুষের মনবল না ভাঙ্গে একারণেই আকাশবাণী থেকে এমনটি প্রচার করা হয়। অন্য দিকে পাকিস্তান রেডিও থেকে প্রচার করা হয় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১০ই এপ্রিলের প্রবাসী সরকারের ঘোষনা পত্রে এবিষয়ে পরিস্কার ভাবে উল্লেখ রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গন্ধু স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেন। জেনারেল এম এজি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান করে গঠিত হয় মুক্তি ফোর্স, জিয়া ছিলেন সেক্টর কমান্ডার, আর একজন সেক্টর কমান্ডার হিসেবে তিনি প্রবাসী সরকার থেকে নিয়মিত বেতন ভাতা নিয়েছেন। এছাড়া এখানে আরেকটি কথা পরিস্কার করা দরকার অবিংসবাদিত নেতা ছাড়া কেউ স্বাধীনতা ঘোষনা দিতে পারেনা, জাতির পিতা ছিলেন অবিংসবাদিত নেতা আর তিনিই স্বাধীনতার ঘোষনা দেন।
প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণেই পরোক্ষ ভাবে স্বাধীনতার ঘোষনা দেন ‘‘ এবারে সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’’ আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি তোমাদের যার যা কিছু আছে তা নিয়ে রুখে দাড়াও শত্রুর মোকাবেলা কর।
এর অন্যতম কারণ ছিল সাত তারিখ তিনি প্রকাশ্যে পরিস্কার করে ঘোষনা দিলে রাষ্ট্রদ্রোহী হয়ে যেতেন আর এ কারণে বঙ্গবন্ধু কৌশল অবলম্বন করেছেন মাত্র। ৭ তারিখের বঙ্গবন্ধুর ভাষনের পর থেকে দেশব্যাপী মানুষ যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুতি নিতে থাকে, গ্রামে গঞ্জে শুরু হয় ট্রেনিং সমগ্র দেশে সাধারন মানুষ লাঠি সোটা নিয়েই পাকবাহিনীকে প্রতিহত করেছে এটিই সত্য। জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার ঘোষকই হতেন তাহলে তিনি মুক্তিবাহিনীর প্রধান হলেন না কেন? মেজর জিয়া যদি স্বাধীনতা ঘোষক হতেন তালে স্বাধীনতা বিদস হত ২৭ মার্চ? এবিষয়টি নিয়ে একটু ভাবলেই এই উত্তর পরিস্কার হয়ে যায়।
এছাড়া কালুরঘাট বেতার থেকে মেজর জিয়া জাতির পিতার পক্ষে যে ঘোষনাটি পাঠ করেছিলেন তার বিস্তিৃতি ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার এর বাইরে কেউ তা শুনতে পায়নি। সুতরাং স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে আর বিভ্রান্তি ছড়ানো উচিত নয়। এছাড়া জিয়াউর রহমানের পূর্বে যারা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ করেছিলেন তাদের কেউতো ঘোষক দাবী করেননি। জিয়াউর রহমানও তার জীববদ্দশায় এটি দাবী করেননি, জিয়ার মৃত্যুর পর কেন এই প্রশ্ন উঠে আসল। আমাদের পরিস্কার করে বুঝতে হবে এর নেপথ্যে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি।
১৯৭৫ এর পট পরিবর্তন ও ইতিহাস বিকৃতিঃ
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধীরা প্রকাশ্যে আসার সুযোগ পায়, শুরু হয় ইতিহাস বিকৃতি। স্বাধীনতা বিরোধীরা জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি‘র কাঁধে বন্দুক রেখে অত্যন্ত সুকৌশলে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করছে। মুক্তিযুদ্ধের পরজিত শত্রুরা জিয়াকে বানিয়েছে স্বাধীনতার ঘোষক ওসমানীকে বানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ন, জেনারেল ওসমানী ছিলেন মুক্তিবাহিনীর প্রধান বা প্রধান সেনাপতি, আর মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জিয়া এবং জেনারেল ওসমানী জীবিতাবস্থায় কোনদিনই দাবী করেননি সর্বাধিনায়ক বা ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ধরে রাখতে হলে আমাদের সকলকে এসব অপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক
স্বীকৃতি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ ঃ
বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, চলমান যুদ্ধাপরাধের বিচারের ধারাবাহিকতা এবং পাকিস্তানের সাথে অমিমাংসিত কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করতে চাই। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ২৫শে মার্চ থেকে শুরু করে পাকবাহিনী কর্তৃক নয় মাস ব্যাপী নারকীয় গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটি দাবী জানিয়ে আসছে, যৌক্তিক এদাবিটি বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারকে আন্তর্জাতিক ভাবে লবিং জোরদার করতে হবে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে দেশের শীর্ষ কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর বিচার হলেও মানবতা বিরুধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত দু‘জন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী এখনও পালিয়ে রয়েছে। এদের একজন চৌধুরী মইনুদ্দিন অন্যজন আশরাফুজ্জামান, আফরাফুজ্জামান আমেরিকায় ও চৌধুরী মইনুদ্দিন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে প্রকাশ্যে দেশ বিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে এই দুই যুদ্ধাপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাসির রায় কার্যকর করা হলে ৩০লক্ষ শহীদের আত্মা শান্তি পাবে এব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে, সেই সাথে এদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে সাজা কার্যকর করতে বৃটেন এবং আমেরিকায় বসবাসরত প্রতিটি প্রবাসী বাঙ্গালীকে এগিয়ে অসতে হবে।
এছাড়া পাকিস্তান আর্মির চিহ্নিত ১৯৫জন সেনা অফিসার যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ছিল পাকিস্তান এদের বিচার করার কথা থাকলেও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি সেই চিহ্নিত ১৯৫ জন ঘাতককে বাংলাদেশের কাছে বিচারের জন্যে হস্তান্তর করতে, পাকিস্তানের কাছে পাওনা আমাদের ন্যায্য হিস্যা, এবং যুদ্ধকালীন সময়ের ক্ষতিপূরন ও বাংলাদেশে আটকে পড়া ৩০লাখ পাকিস্তানী নাগরিককে এখনও পাকিস্তান ফেরত নেয়নি এসব কয়েকটি বিষয় অমিমাংসিতই রয়েই গেছে।
একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটি সহ বিভিন্ন সংগঠন থেকে দাবী উত্থাপিত হলেও স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এর কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। বিশ্বের অনেক দেশেই গণহত্যা হয়েছে এর বিচারও হয়েছে, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আজপর্যন্ত বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমরা পাইনি, এটি আমাদের ব্যর্থতা। রুয়ান্ডা আর্মেনিয়া সহ বহুদেশ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। নয়মাস ব্যাপী বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমরা আদায় করতে পারিনি। একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটি আওয়াজ তুললে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবী জানিয়ে একটি প্রস্থাব পাঠানো হয়েছে ।
বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকারকে আরো বলিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। শহীদ জননী জাহানারা ঈমাম তার জীবদ্দশায় ২৫শে মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষনার দাবী জানিয়েছিলেন, তার মৃত্যুর পর এনিয়ে জাতীয় সংসদে প্রস্থাব পাশ হয়। ২০১৫ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে ১৯৪৮ সালের কনভেশন অনুযায়ী ৯ইডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয়। আমাদের দাবী নয়মাস ব্যাপী বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
লেখকঃ লন্ডন যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক ও গবেষক, সিনিয়র সহসভাপতি একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটি যুক্তরাজ্য সাপ্টার ও সভাপতি যুদ্ধাপরাধ বিচারমঞ্চ ইউকে এন্ড আয়ারল্যান্ড।)