হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলায় এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলে পাশের হারে ব্যাপক ধস নেমেছে। উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি কলেজ গুলোতে আশানুরূপ ফলাফল না আসলেও মাদ্রাসাগুলো তুলনামূলক ভাবে ভালো ফলাফল করেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় কলেজ পর্যায়ে উপজেলার মোট ৭টি কলেজ ও ২টি মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
এর মধ্যে কলেজ পর্যায়ে গড় পাশের হার মাত্র ৪৭.৬৪ শতাংশ, যেখানে মাদ্রাসা পর্যায়ে গড় পাশের হার দাঁড়িয়েছে ৮১.৮১ শতাংশ। গত বছরের তুলনায় এ হার প্রায় ১৫ শতাংশ কম। এরমধ্যে জনাব আলী সরকারি কলেজ থেকে ৩৪০ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ১৮২ জন কৃতকার্য হয়েছে, অকৃতকার্য হয়েছে ১৫৮ জন, পাশের হার ৫৩.৫২%, শচীন্দ্র ডিগ্রী কলেজ থেকে ৮২১ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ৪৫১ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ৩৭০ জন, পাশের হার ৫৫%, সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজ থেকে ২৫০ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ১০৮ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ১৪২ জন, পাশের হার ৪৩.২০%, আইডিয়াল কলেজ ১৭৩ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ২৮ জন কৃতকার্য হয়েছে।
অকৃতকার্য হয়েছে ১৪৫ জন, পাশের হার ১৬.১৮%, শেখ সামছুলহক কলেজ ২৫ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ১৫ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ১০ জন, পাশের হার ৬০%, বক্তারপুর আবুল খায়ের স্কুল এন্ড কলেজ ৫৯ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ১৫ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ৪৪ জন, পাশের হার ২৫.৪২%, রত্না উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ ১১ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ০১ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ১০ জন, পাশের হার ৯.০৯%, বানিয়াচং সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা ১৮ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ১৩ জন কৃতকার্য হয়েছে।
অকৃতকার্য হয়েছে ০৫ জন, পাশের হার ৭২.২২% ও বিএসডি মহিলা আলীম মাদ্রাসায় ৪৪ জন পরিক্ষায় অংশ নিয়ে ৩৬ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছে ০৮ জন, পাশের হার ৮৮.৪৬%। মাদ্রাসায় গড় পাশের হার ৮১.৮১% এবং কলেজে গড় পাশের হার ৪৭.৬৪%। তবে কলেজে ৫টিতে জিপিএ-৫ থাকলে ও মাদ্রাসায় কোন জিপিএ-৫ আসেনি।
শিক্ষাবিদদের মতে, কলেজ পর্যায়ে ফলাফল নিম্নমুখী হওয়ার পেছনে রয়েছে শিক্ষক সংকট, নিয়মিত ক্লাস না হওয়া এবং শিক্ষার্থীদের অমনোযোগী মনোভাব। অপরদিকে মাদ্রাসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নিবিড় সম্পর্ক, নিয়মিত পাঠদান ও ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি ভালো ফলাফলের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবক জানান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সমন্বয় না থাকায় কলেজের শিক্ষার মান ক্রমেই নিচে নামছে। মাদ্রাসায় এখন শৃঙ্খলা ও পরিশ্রমের জয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপার ভাইজার সম্পদ কান্তি দাশ তালুকদার জানান, ফলাফল বিশ্লেষণ করে দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।