1. sm.khakon@gmail.com : bkantho :
অসতর্ক ওড়না : এম এ মজিদ - বাংলা কণ্ঠ নিউজ
শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৪ অপরাহ্ন

অসতর্ক ওড়না : এম এ মজিদ

Reporter Name
  • শনিবার, ৫ মার্চ, ২০২২
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামীলীগ এখন কারাগারেই নিরাপদ

কেস স্টাডি-১ঃ আমার সামনের টমটম গাড়ি থেকে হঠাৎ একটি আওয়াজ ভেসে আসল, “আমি মরে গেলাম”। সাথে সাথে চালক গাড়ি থামালেন, আমি টমটম গাড়ির ঠিক সামনে দ্রুত আমার মোটর সাইকেলটি দাড় করালাম।

টমটম গাড়িতে ২৫ বছরের এক মেয়ে, ২৪/২৫ বছরের এক ছেলে এবং ৪৫ বছরের এক মহিলা। ঘটনাস্থল হবিগঞ্জ শহরের নতুন স্টেডিয়ামের সামনে। গন্তব্য বানিজ্য মেলা। টমটম গাড়িটি থামানোর সাথে সাথে দেখলাম, ২৫ বছরের মেয়েটি দুই হাত দুই পা নাড়িয়ে ছটপট করছে, গলায় থাকা ওড়না, বোরকা পেছিয়ে গলায় ফাঁস লাগার মতো মনে হচ্ছে। অথচ সাথে থাকা ছেলে কিংবা মহিলা কিছুই করছে না, গাড়ি চালক কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। সবাই আকষ্মিকতায় হতভম্ব হয়ে গেল। আমি স্তম্ভিত হলাম। ঠিক আমার সামনে একটি মেয়ে মারা যাচ্ছে! আমি লক্ষ্য করলাম, মেয়েটির বোরকা, ওড়না, নেকাব সবকিছু টমটম গাড়ির ইঞ্জিনের সাথে পেচিয়ে গেছে।

একই সাথে গলাটি সংকুচিত হয়ে টমটম চালকেরে পিছনে থাকা এসএস পাইপের গ্রিলের সাথে একাকার হয়ে যাচ্ছে। মুহুর্তে আমি গলার ফাঁস ছুটানোর জন্য বোরকায় টান দিলাম। বোরকা, ওড়নার কাপড় ছিড়া বড্ড কষ্টকর। আমি সেটি তিন ভাগ করে একভাগে স্বজোরে টান দিলাম, কিছুটা আশান্বিত হলাম যে, আমি পারব।

এভাবে বোরকা, ওড়নার কাপড়গুলোকে ৩ ভাগ করে এক এক ছিড়ে ফেললাম। আমি এতো শক্তি কোথায় পেলাম নিজেও জানি না। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে মেয়েটি বেচে গেল। তবুও মেয়েটির গলায় দাগ পড়ে গেছে, মাথায় আঘাত পেয়েছে। মেয়েটি বেচে গিয়ে কান্না করতে লাগল, সাথে থাকা দুজনও আমাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাতে লাগল।

কেস স্টাডি-২ঃ ঘটনাস্থল হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন হাসপাতাল সড়ক। একটি মেয়ের ওড়না অটো রিস্কার চাকায় পেচিয়ে যেতে দেখলাম। দ্রুত মোটর সাইকেল সামনে নিয়ে বললাম, এই মেয়ে তোমার ওড়না সামলাও। রিস্কা চালককে বললাম, রিস্কা থামাও। ইতিমধ্যে সাদা ওড়নার বেশ কিছু অংশ রিস্কার চাকায় পেচিয়ে তেল মবিলে ময়লাযুক্ত হয়ে গেছে। এক দু মিনিটের মধ্যে সমস্ত ওড়নাটিই পেচিয়ে যেত। আমি কেন মেয়েটিকে ওড়না সামলানোর জন্য বললাম, সে জন্য মেয়েটি আমার প্রতি তীর্যক দৃষ্টিতে থাকাল, এবং বলল, আমার ওড়না পেচিয়ে গেলে আপনার কি? আমি বেশ লজ্জিত হলাম। রিস্কা চালক বলল, আপা ওনি তো ভালই করেছেন, না জানালে তো আপনাকে ওড়না ছাড়াই যেতে হতো। মেয়েটি বলল, না, ওই সব খারাপ ছেলে। আমি প্রতিবাদ করে বললাম, তোমার ওড়নার সাথে জামাটিও যদি রিস্কায় পেচিয়ে যেত, যদি তুমি অর্ধ উলঙ্গ হয়ে ছটপট করতে, আমি আমার পেশার দায়িত্ব পালন করতাম, তোমার ছবি তুলে পত্রিকায় দিতাম, তাহলে খুব ভাল হতো?

কেস স্টাডি-৩ঃ একটি শুনা কথা, একজন পুলিশ সদস্য জানালেন, একবার একটি মোটর সাইকেলের পিছনে বসা ছিল একটি মেয়ে। উঠতি বয়সী ছেলেটি ওল্কাগতিতে মোটর সাইকেল চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা লক্ষ্য করলাম, মোটর সাইকেলের পিছনের চাকার সাথে মেয়েটির ওড়না পেছিয়ে যাচ্ছে। আমরা পুলিশের পিকআপ গাড়িটি মোটর সাইকেলের সামনে গিয়ে তাদেরকে অবগত করতে চাইলাম, মোটর সাইকেল থামানোর জন্য পিকআপে থাকা পুলিশ সদস্যরা বারবার হাত নাড়াচ্ছে, হর্ণ বাজাচ্ছে, চিল্লাচিল্লি করছে। কিছুতেই মোটর সাইকেল থামাচ্ছে না।

উঠতি বয়সী ছেলেটি ভাবছে পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করছে। ইতিমধ্যে যা হবার তাই হল। ওড়না পেছিয়ে মেয়েটি রাস্তায় ছিটকে পড়ে গেল। মারাত্বকভাবে আহত হল।
নোটঃ চলতে ফিরতে ওড়না বা ঢিলেঢালা কাপড় সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখুন। সবকিছু বাঁকা চোখে দেখবেন না।

লেখকঃ সাংবাদিক ও আইনজীবি হবিগঞ্জ, ৫ মার্চ ২০২২
মোইলঃ ০১৭১১-৭৮২২৩২

ই-মেইলঃ majid1981@yahoo.com

সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
Developer By Zorex Zira

Designed by: Sylhet Host BD