সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে শুক্রবার (৩০ আগষ্ট) রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে সফরকারী বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মত টেস্ট সিরিজ জিতে আরও একটি ইতিহাস গড়তে মুখিয়ে আছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস ও গাজী টিভি রাওয়ালপিন্ডিতেই প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৪তম মোকাবেলায় এসে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মত টেস্ট ম্যাচ জয়ের স্বাদ নেয় টাইগাররা। দ্বিতীয় টেস্টেও পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে উদগ্রীব মুশফিক-সাকিবরা।
সিরিজের প্রথম টেস্টের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড মোটেও ভালো ছিলো না। আগের ১৩ মোকাবেলায় ১২টিতে হার ও ১টিতে ড্র করেছিলো বাংলাদেশ। বেশিরভাগ ম্যাচই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিলো টাইগাররা। কিন্তু প্রথম টেস্টের পর পরিসংখ্যানের চিত্র পাল্টে দেয় বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে ঐতিহাসিক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা।
এবারও রেকর্ড পক্ষে না থাকলেও টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্নে বিভোর বাংলাদেশ। গত ২৪ বছরে ১৪৩টি টেস্ট খেলে মাত্র ২০টিতে জয় এবং ১০৫টি হেরেছে টাইগাররা। ১০টি টেস্ট সিরিজ জয় আছে তাদের।
সর্বমোট ৬০টি দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ৩টিতে জয় এবং ৯টিতে ড্র এবং ৪৮টি সিরিজ হেরেছে তারা।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়া সিরিজের মধ্যে তিনটি টেস্ট সিরিজই জিতেছে বাংলাদেশ। একই সাথে প্রথম টেস্টে জয় পাওয়া সিরিজের মধ্যে ৭টি টেস্ট সিরিজ ড্রও করেছে তারা। শেষবার ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের পর সিরিজ ড্র করেছিল বাংলাদেশ।
টেস্ট সিরিজ জয়ের প্রত্যাশার চাপ সামলাতে না পারলেই হার মানে বাংলাদেশ। কিন্তু অতীতের রেকর্ড মুছে ফেলতে চান টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তার বিশ্বাস অতীতের বন্ধ্যাত্ব ঘুচিয়ে এবার পুরো টেস্ট সিরিজে ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট ছাড়াও এ বছর আরও ৬টি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। তাই টেস্ট লড়াকু দল হয়ে উঠার জন্য বাংলাদেশের কাছে ধারাবাহিকতাই এখনই মহাগুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখলেও সিরিজ হার এড়াতে ঘুড়ে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর পাকিস্তান।
প্রথম টেস্টে পেসারদের দিয়ে পুরো বোলিং আক্রমণ সাজানোর কৌশল পাকিস্তানের জন্য হিতে বিপরীত হয়েছিলো। প্রথম টেস্টের ঠিক আগ মুহূর্তে দল থেকে সরিয়ে দেওয়া পেসার আমের জামাল, ব্যাটার কামরান গুলাম ও লেগ-স্পিনার আবরার আহমেদকে ফিরিয়েছে পাকিস্তান।
বরাবরই লেগ-স্পিনে দুর্বল হওয়ায় আবরারের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের জন্য বড় চিন্তা কারন হবে। এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ৩৮ উইকেট নেয়া আবরারকে কি পরিকল্পনায় সামলাবে, সেটির উপরই নির্ভর করছে টাইগারদের সাফল্য।
কিন্তু রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে উইকেটের অবস্থা বুঝে নিজেদের শক্তিকে যেভাবে কাজে লাগিয়েছিলো বাংলাদেশ শেষ টেস্টের উইকেটে পরিবর্তন আসতে পারে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম বলছে সুবজ উইকেটে খেলা হতে পারে যা পাকিস্তানের জন্য বড় শক্তি। গত দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে অনুশীলন সেশন ভেস্তে গিয়েছে দু’দলের।
বাংলাদেশ : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মোমিনুল হক, হাসান মাহমুদ, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাহিদ রানা, নাইম হাসান, সাদমান ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, তাইজুল ইসলাম এবং জাকির হাসান।
পাকিস্তান : শান মাসুদ (অধিনায়ক), সৌদ শাকিল (সহ-অধিনায়ক), আবদুল্লাহ শফিক, আবরার আহমেদ, বাবর আজম, কামরান গুলাম, খুররাম শাহজাদ, মির হামজা, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ হুরাইরা, মোহাম্মদ রিজওয়ান, নাসিম শাহ, সাইম আইয়ুব, আঘা সালমান, সরফরাজ আহমেদ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, আমের জামাল।
ম্যাচ কর্মকর্তা : অ্যাড্রিয়ান হোল্ডস্টক এবং রিচার্ড কেটলবরো (অন-ফিল্ড আম্পায়ার), মাইকেল গফ (তৃতীয় আম্পায়ার), রশিদ রিয়াজ (চতুর্থ আম্পায়ার) এবং রঞ্জন মাদুগালে (ম্যাচ রেফারি)।