বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এখনো কিছু জায়গায় স্বৈরাচারের দোসররা বেশ কয়েকটি জায়গায় বসেছে, তারা উইপোকার মতো অবস্থান নিয়েছে। এরা নিজেদেরকে নিরপেক্ষ বলার চেষ্টা করছে।’
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি রিজভী বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ৫ আগস্ট পর্যন্ত রক্ত ঝরার মাধ্যমে যে পরিবেশটি ফুটে উঠেছে, সেটি আশাবাদী করেছে। সামনে আমরা নির্বিঘ্নে কথা বলতে পারব, চলতে পারব। আমরা ভোট দিতে যাব, সেটির সঠিক প্রতিফলন হবে। কেউ ডাকাতের কায়দায় আমাদের ভোট ছিনিয়ে নিতে পারবে না। সভ্য সমাজ গড়ার উপাদানগুলো আজ সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিশ্বাস রেখে তিনি বলেন, ‘তারা সংস্কার করে যাচ্ছেন, তবুও একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মনে রাখতে হবে, ১৫ বছর ধরে একটি স্বৈরাচার সরকার নির্দয়ভাবে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করে নিজেদের লোকদের বসিয়ে রেখেছিল। ফ্যাসিবাদের দোসররা নানা কায়দায় রঙ ও বর্ণ পরিবর্তন করে বসার চেষ্টা করছে। এরা নিজেদেরকে নিরপেক্ষ বলার চেষ্টা করছে। এখনো কিছু জায়গায় স্বৈরাচারের দোসররা বেশ কয়েকটি জায়গায় বসেছে, তারা উইপোকার মতো অবস্থান নিয়েছে। এই উইপোকারা বট বৃক্ষ খেয়ে ফেলতে পারে।’
প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে সমাদৃত ভূমিকা নিয়ে দায়িত্ব পালন করার কথা, কিন্তু স্বৈরাচার শেখ হাসিনার প্রশাসন তারা তাকে টিকে রাখতে রক্ত ঝরা ভূমিকা পালন করেছে বলে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা যদি আবার রঙ পরিবর্তন করে প্রশাসন ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এসে বসে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ছাত্র জনতার যে আকাঙ্ক্ষা সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফ্যাসিবাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় বসে থেকে অরণ্যে বসে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করে যাচ্ছে, এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করতে ছাত্রজনতা দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বন্যা আঘাত করার পর থেকে জাতীয়তাবাদী দল সেখানে গিয়েছে, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের কথা বিবেচনা করে, আন্দোলনে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও জনতার হতাহতের হয়েছেন ও যারা নিহত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন না করে সেদিন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশে সুবিধা অনুযায়ী মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকল আলোচনা সভা ও কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যে টাকাগুলো খরচ হতো সেগুলো আমরা বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্য ব্যবহার করব।’
ভারতের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘একতরফাভাবে নির্বাচনে সমর্থন, সীমান্তের বাংলাদেশ নাগরিককে হত্যা এগুলো থেকেই এদেশের জনগণ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। তাদের পলিসি মেকারা, তারা একটি দলকেই সব ভাবতো, সেই দলের নেতাকে দেশের সকল মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে, অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছে। জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্কের মূল্যায়ন করতে হবে, এর মধ্য দিয়ে একটি রাষ্ট্র আরেকটি রাষ্ট্রের বন্ধু হবে। আর এটি নৈকট্য দৃঢ় হবে।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহ সভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, যুগ্ম সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদসহ অন্য নেতারা।